।। বিনতে এন এম জাহাঙ্গীর ।।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ!
বন্ধুগণ! আশা করি সকলেই আল্লাহর রহমতে ভাল আছ। আল্লাহ যে হালতে রাখেন, তাতে সন্তুষ্ট থাকাই হল আমাদের কাজ। সমসাময়িক একটি বিষয় নিয়ে আজ কিশোরবন্ধুদের সাথে একটা ‘কিশোরগল্প’-এর আয়োজন করেছি। আর হ্যাঁ, তাই মনোযোগ দিয়ে এসে পড়ো মজলিসের লেখাগুলো পড়তে। আশা করি, তোমাদের উপকার হবে। তো এসো বন্ধুরা! সূচনাপর্বে যোগদান করি!
সূচনাপর্বঃ
তোমরা নিশ্চয় জানো, ১৫ মাস হতে ১৬টি মাস চলছে শিক্ষাব্যস্থার লকউাউন। উন্নতমানের স্কুলগুলোতে অবশ্য অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কোনরকমে শিক্ষাব্যবস্থার সাথে জুড়ে রেখেছে। আর অনুন্নত অনেক স্কুল রয়েছে, যেখানে নেই অনলাইন-ক্লাসের কোন ব্যবস্থা। ফলাফল এই দাঁড়িয়েছে যে, এসব স্কুলের শিক্ষার্থীদের দেখলে, ‘ভবঘুরে’ বালক-বালিকা ও তাদের মাঝে ব্যবধান করা অনেকটাই দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে! যা দেখছি স্বচক্ষে, তাই বলছি বন্ধু, সুতরাং কোন লেখায় ভুল বুঝো না! তোমরা যারা রয়েছ, তোমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েই আজকের এই আয়োজন।
গত বছরের শুরুটা হয়েছিল, উদ্যম ও সংকল্পের নতুন উদ্যানে। এদেশের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার অনিবার্য উপসর্গ ‘বই বিতরণ ও ক্লাস উদ্বোধন’-এ কেটে গেল বছরের দেড়টি মাস। তারপর পড়ালেখায় কিছুটা উদ্যম ফিরতে শুরু করে। ঠিক কিছুদিন পরেই দেশের করোনা পরিস্থিতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লকউাউন দিতে বাধ্য করে। তো গত বছর বইয়ের সাথে যতটুকু আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, দীর্ঘ বিরতির বিরক্তিতে নতুন বছরটিও তোমরা আনন্দের সাথে উদ্বোধন করতে পারোনি। খুবই দুঃখজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এই দীর্ঘ ১৫ মাস লকডাউনের পাশাপাশি এসো বন্ধু একটু পর্যবেক্ষণমূলক গল্প করে আসি-
পর্যবেক্ষণঃ
১. গত বছর হতে আমরা দেখে আসছি বিভিন্ন তারিখ ঘোষণার পরও স্কুলগুলো খুলছে না। এভাবে কোন উচ্চপর্যায়ের যৌক্তিক গবেষণা ছাড়াই বারবার তারিখ ঘোষণা ও বদলানোর মাধ্যমে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মনে শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে।
২. একদিকে লকডাউন ও অভাবের দুর্দশা, অপরদিকে সন্তানদের বন্ধ স্কুলের বেতনপ্রদান বোঝা হয়ে যায় অনেক মা-বাবাদের। ফলশ্রুতিতে নিভে যায় অনেক শিশু-কিশোরের বিদ্যালয় জীবন।
বদরের যুদ্ধে কাফেরদের ৭০জন মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়। যেসব বন্দীদের মুক্তিপণ দেবার সামর্থ্য ছিল না। কিন্তু তারা লিখতে জানেন; তাদের জন্য নবীজি এই মুক্তিপণ সাব্যস্ত করেছিলেন যে, তারা বাচ্চাদের লিখতে শেখাবে। এভাবে যুদ্ধে ও রাষ্ট্রের বিবিধ ঝামেলার মধ্যেও নবীজি বাচ্চাদের পড়ালেখার বিষয়টি যথেষ্ট খেয়াল রেখেছিলেন। (সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া, উসদুল গাবা)।
৩. অধিক অবসরের সুযোগে অসৎ ও অহেতুক সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে অনেক। কিন্তু ছোট ছোট সাহাবীরা কী করতেন অবসরে? এসো জেনে নেই ইতিহাসের পাতা হতে-
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস। নবীজির সর্বকনিষ্ঠ সহধর্মিনী হযরত মাইমুনাহ (রাযি.) ছিলেন আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাযি.) এর খালাম্মা। প্রায় সময় তিনি খালাম্মার ঘরে অতিবাহিত করতেন। ছোট হলেও অর্বাচীন ছিলেন না তিনি। শুধু খালাম্মার আদরে পরশে আপ্লুত হতে নয়, বরং নবীজির আমলের আবেশে আবির হতে! তিনি নিজেই বলেন, একবার আমি নবীজির সাথে ছিলাম। গভীর রাতে নবীজি জেগে উঠলেন এবং উযু করলেন উত্তমরূপে, তারপর উযুর অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করলেন। আমি দেখলাম এবং সংকল্প করলাম, আমিও নবীজির অনুসরণ করব। সংকল্পের সাথেসাথেই দ্রুত উঠে বসলাম এবং উযুরপাত্রের দিকে এগিয়ে গেলাম। উযু শেষে অবশিষ্ট পানিটুকুও পান করলাম। তারপর নবীজির পিছনে নামাযে দাঁড়িয়ে গেলাম। নবীজি আমাকে হাতে ইশারা করলেন যেন তাঁর পাশে দাঁড়াই। আমি তা করিনি। নামায শেষে নবীজি এর কারণ জানতে চাইলেন।
আমি বিনয়ের সাথে বললাম,ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমার কাছে এত মহান! কীভাবে আমি দাঁড়াব আপনার বরাবর?! বুদ্ধি ও শ্রদ্ধাপূর্ণ এ উত্তর শুনে নবীজি মুগ্ধ হলেন ও দুয়া করলেন, হে আল্লাহ! আপনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. এর ভেতর প্রজ্ঞার আলোয় আলোকিত করে দাও! আরো দাও দ্বীনের গভীর ইলম।’ এভাবেই আব্দুল্লাহ রা. নিজ বুদ্ধিমত্তা ও আদবের কারণে নবীজির নূরানী দোয়াপ্রাপ্ত হন। তিনি আগে থেকেই নবীজির উযুর পানিও এনে রাখতেন। নবীজি একদিন তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, হে আল্লাহ! আপনি ওকে দ্বীনের গভীর জ্ঞান দান করুন এবং তত্ত্বজ্ঞান দান করুন।’ কখনো দোয়া করেছেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি ওর মাঝে বরকত বর্ষণ করুন এবং নেককারদের মধ্যে শামিল করুন। আরো বলেছেন,- ‘ইলম ও কুরআনের তাফসীর (সঠিক ব্যাখ্যা) করার ক্ষমতা দিন।’
একটু ভেবে দেখো! নিজের চেয়েও বড় বয়সী একজন মানুষের কাছে রাতযাপন করে কেন একটি বাচ্চা? তিনি নিছক আদরের জন্য নয়, বরং নবীজির আমল শেখার জন্য রাতযাপন করতেন খালাম্মার ঘরে। শুধু আমলের আগ্রহই তাঁকে শিশুসুলভ দুষ্টুমি হতে বিরত রেখে, মুসল্লায় দাঁড় করেছিল; পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের পিছনে!
আরও পড়তে পারেন-
- মুসলমানদের জন্য রোগ-ব্যাধিতে চিকিৎসা করানো সুন্নাত
- করোনা মহামারি ও আমাদের করণীয়
- জান্নাত পেতে চাইলে শিরকমুক্ত নেক আমল করতে হবে
- দুর্দিন ও দুঃসময়ে নবী জীবন থেকে সান্ত্বনা
- মাহে মুহাররম ও আশূরা: করণীয় ও বর্জনীয় আমলসমূহ
৪. এক সময় অনলাইন কিংবা ইউটিউব কী এটাই বুঝত না অনেক শিশু, কিন্তু অনলাইন-ক্লাসের অজুহাতে, এখন ফেসবুকেও রীতিমতো পদচারণা এসব শিশু-কিশোরদের!! দীর্ঘ দিনের ক্লাসের কারণে, অনেক সময় মা-বাবা খোঁজ রাখেননি, তারা কী করছে, কী দেখছে। ‘নৈতিক শিক্ষা’ যাদের এখন পরিপূর্ণ শেখা হয়ে উঠেনি, দোষণীয় জিনিসে ভরপুর অনলাইনে তাদের অবাধ বিচরণ কি জ্বলন্ত আগুনে ছেড়ে দেয়া নয়?!
৫. অনেক কিশোর আছে, যাদের মাঝে এখন সেলিব্রেটি ইউটিউবার হবার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জি-মেইল একাউন্ট হতে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করছে! পরস্পরে প্রতিযোগিতা করছে, কার কত subscriber (সমর্থক) হল!
বন্ধু! কী অর্থহীন ও উপকারহীন একটা বিষয় নিয়ে তুমি, তোমরা প্রতিযোগিতা করছো! আচ্ছা এসো না একটু ইতিহাসের পাতায় দেখি, নবীজির যামানার কিশোর সাহাবীরা কী নিয়ে প্রতিযোগিতা করতেন!
সামুরা বিন জুনদুব। আমালের প্রতি ঈর্ষাকাতরতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত! নবীজির যামানায় সাহাবীদের ঈমানের দৃঢ়তা এত বেশি ছিল যে, ছোট ছোট বাচ্চাদের ঈমানী জাযবাও আজ ঈর্ষণীয় ও বিরল হয়ে গিয়েছে। নবীজি প্রত্যেক যুদ্ধের সূচনাপর্বে সেনাবাহিনী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। অল্পবয়ষ্ক বালকদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠাতেন। তবু কিশোর সাহাবীরা নিবৃত হতেন না। প্রতি যুদ্ধেই তাঁরা শরীক হবার আগ্রহে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতেন! উহুদের যুদ্ধে নবীজি সেনাবাহিনী দেখভাল শেষে বেশকিছু কিশোর সাহাবীদের ফেরত যাবার নির্দেশনা দিলেন। এর মধ্যে ছিলেন হযরত রাফে বিন খাদীজ, সামুরা বিন জুনদুব। ছেলের বিষাদমাখা চেহারা দেখে নবীজির কাছে এগিয়ে এলেন খাদীজ (রাযি.)। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার ছেলে রাফে’ খুব ভাল তীরন্দাজি পারে। আর পাশ থেকে কিশোর রাফেও (রাযি.) আঙ্গুলে ভর দিয়ে নিজেকে একটু লম্বা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছিলেন! নবীজি খুশিমনেই অনুমতি দিলেন। তা দেখে আরেক কিশোর সাহাবী সামুরা বিন জুনদুব (রাযি.) ঈর্ষান্বিত চোখে রাফে’ (রাযি.)কে দেখলেন এবং নিজ সৎপিতা মুররাহ (রাযি.)এর নিকট বললেন, এই ছেলেটার চে’ আমি বেশি শক্তপক্ত, আমি ওকে হারিয়ে দিতে পারব। তবু আমাকে কেন নেয়া হবেনা! নবীজির কথামতো দু’জনকেই প্রতিযোগিতায় লাগিয়ে দিলেন। সামুরা (রাযি.) বিজয়ী হয়ে যুদ্ধে যোগদানের অনুমতি পেয়ে গেলেন! দেখাদেখি অন্যান্য কিশোর সাহাবীরাও কাকুতি-মিনতি করতে থাকলেন। এভাবে সেদিনের সমাধান করতে করতে রাত হয়ে গেল। (খামীস) এই ছিল সে যুগের ঈমানী চেতনা!
বন্ধু! আজ Fun ও মজার নামে প্রতিনিয়ত আমরা অমান্য করছি আল্লাহর বিধান। টিকটক ও লাইকি এজাতীয় এ্যাপস্ এ বিভিন্ন আলেমদের কথাকে কাটিং করেও মশকরা করা হচ্ছে। করা হচ্ছে বিভিন্ন লজ্জাহীনতা! দৃষ্টিকটু এই ভিডিওগুলো তুমিও দেখছ! তুমি কি জানো না বন্ধু! নজরের হিফাজতের গুরুত্ব! (তরুণ সাহাবী) হযরত ফযল ইবনে আব্বাস (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে বসা ছিলেন। এমন সময় খাছআম বংশের এক মহিলা নবীজির নিকট ফাতাওয়ার জন্য এলেন। তখন ফযল (রাযি.) তাঁর দিকে তাকাচ্ছিলেন, ঐ মেয়েটিও তাঁর দিকে তাকাচ্ছিল। নবীজি তখন ফযল (রাযি.)এর চেহারা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিলেন। (নাসাঈ, হাদীস নং- ২৬৪৭)।
তুমি এখন জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে দাঁড়িয়ে আছ! ডানে তোমার জন্য রয়েছে গুলবৃক্ষে আচ্ছাদিত পথ, তবে ভয় পাবার কিছু নেই বন্ধু! সংকল্প ও আল্লাহ ভরসা করে এগিয়ে চলো, তবে সামনেই রয়েছে পল্লবিত সবুজউদ্যান ও ঝর্ণাধারার হাতছানি! আর বামে আছে যে অন্ধকার মরুর কৃত্রিম-আলোক ফাঁদ, সেই মোহে যদি এগিয়ে যাও, সামনে অপেক্ষমান মরুভূমির গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খাবে তুমি, হারিয়ে ফেলবে জীবনের লক্ষ্য! তাই ফিরে এসো বন্ধু সংগ্রাম ও সাধনার সংকল্পবদ্ধ পথে, তবেই হাতছানি দেবে সবুজউদ্যান; জীবনের অপরপ্রান্তে…কিশোর সাহাবীদের ছোট্ট কয়েকটি কাহিনী দিয়েই শেষ করছি, আজকের কিশোরগল্প আয়োজন।
মুয়াজ ও মুয়াওয়াজ (রাযি.)। বুখারী শরীফসহ হাদীসের অনেক কিতাবেই তাদের বীরত্ব আজও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে আমাদের জন্য। নবীজির ভালবাসার মুগ্ধতায় ভরপুর দু’টি কিশোর হৃদয়। মুসলিমদের সারিতে দাঁড়িয়ে ভাবছেন দু’টি বালক, নিজ সংকল্পের কথা। পরক্ষণেই পাশে দাঁড়ানো যুবক বয়সী মুরুব্বীর দিকে ফিরলেন, সালাম বিনিময়ের পর কিছুটা আড়াল করে তাঁকে বললে, চাচা! অপনি কি চিনেন আবু জাহেল নামের পাপিষ্ঠকে? সাহাবী আব্দুর রহমান বিন আউফ (রাযি.) অবাক কণ্ঠে উত্তর দিলেন, হ্যাঁ বাবা চিনি, কিন্তু কেন? বালক মুয়াজ বললেন, আমি শুনেছি, সে আমাদের নবীজিকে অনেক কষ্ট দেয়, কটু কথা বলে আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীকে। ঠিক এর খানিক পরই অপর পাশ হতে আব্দুর রহমানকে সালাম দেয় এবং অপর ভাইয়ের মতই অন্যদের হতে কিছুটা আড়াল করে অনুরোধ জানান। কিছুক্ষণ পর আবু জাহেলকে মাঠে সর্দারসূলভভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, হে ভাতিজাদ্বয়! এই যে তোমাদের কাক্সিক্ষত ব্যক্তি। তিনি বলেন, তারপর দুই ভাই বাজ পাখির ন্যয় ক্ষিপ্র গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়লো আবু জাহেলের উপর। পায়ে হেঁটে যেয়ে তারা ঘোড়ায় আরোহী আবু জাহেলকে চিৎ করে দিলো।
সুবহানাল্লাহ! মুয়াজ (রাযি.)এর একটি হাত ঝুলে পড়ে আবু জাহেলের ছেলের পাল্টা আঘাতে। তবু ধৈর্যের সাথে এক হাতেই সারাদিন তলোয়ার চালিয়ে যান ছোট এই কিশোর সাহাবী। ঝুলন্ত হাত যখন অসুবিধার কারণ হয়ে গেল, ঠিক তখনি পায়ের নিচে হাতটি রেখে এক টানে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন কাঁধ হতে!! সাহসীকতার কী অপূর্ব নজীর! এত কিছুর পরও তিনি খুশি, কারণ, পেয়ারা নবীকে কষ্টদাতা পাপিষ্ঠকে তো ধরাশায়ী করেছি!
বন্ধু! আজও তুমি কিছু না কিছু দেখতে পাবে এমন নবী প্রেমিকদের সাহসিকতা! সেই তরুণটির কথাই ভাবো, যে নিজ পরিণতির কথা জেনেও জনসম্মুখে সজোরে থাপ্পড় দিল ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো এর গালে!! কারণ, ম্যাক্রোও নবী অবমাননাকারীদের একজন!
প্রিয় ভাই ও বোন! তুমি কি কখনো ভেবে দেখেছ, ছোট্ট বাক্সবন্দী একটি জগতের (নেট জগত) জন্য তুমি তোমার বিস্তৃত জীবনকে কতটা ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছ! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লকডাউন তো কী হয়েছে, তোমার জগতটাকে তুমি কেন লকডাউন করে দিচ্ছ এই অনলাইনের ছোট্ট পরিসরের দ্বারা! পড়াশোনা, পাশাপাশি কিশোরসাহাবীদের জীবনগল্প পড়ে দেখো। কত চমৎকার আর ভালো লাগায় ভরপুর সেসব জীবন ও কিশোরকাল! সেসব কিশোরকালে তুমি খুঁজে পাবে, আদব, বড়দের সমীহ ও নবীপ্রেমের সমুজ্জ্বল-সমুদ্ভাসিত উপাখ্যান! আরো পাবে ইবাদাতের শাওক, নবীর জবান নিসৃত বাণীর সংরক্ষণ ও প্রচারের দুর্বার এক স্বপ্নসৌধ! যেখানে আছে পরিবারের সাথে মিলেমিশে চলা ও গল্পের আনন্দ, সেখানে আছে নবীজিকে কেন্দ্র করে ঈদের নাশীদ আবৃত্তির মহা আয়োজন! লাইক, সাবস্ক্রাইব আর সেলিব্রেটির এই কৃত্রিম ও জটিলতাপূর্ণ জগত হতে এসো এখন একটু নিবৃত হই! কলুষতা বর্জনে নিজের ভেতরের শিশু সারল্যতাকে বজায় রাখি! এখন সময় নিজেকে গঠনের, নিজেকে প্রচারের নয়! আল্লাহ হাম কো তাওফীক আতা ফরমা দো…
“আদর্শ তোমার নবীজি / তোমার আদর্শের অনুগামী সাহাবী,
সাহাবী পদরেখায় এগিয়ে তাবেয়ী / এ তিন যুগ হল সকল যুগের চে’ স্বর্ণালী!”
#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ
মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/