।। আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ ।।
[২২ নভেম্বর ২০২১ইং সোমবার বাদে যোহর দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর বাইতুল কারীম জামে মসজিদে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত তারবিয়তী মাজলিসে প্রদত্ত বয়ানের সারসংক্ষেপ]
الحمد لله رب العلمين، والصلاة والسلام على رسوله الأمين، وعلى آله وصحبه أجمعين، أما بعد.
প্রিয় ছাত্র ভাইয়েরা!
প্রতিটি কাজের দু’টি অংশ রয়েছে, দু’টি দিক রয়েছে। একটি হল আবেগ। অপরটি হল বিবেক। আমরা যে, পড়াশোনার জন্য মাদরাসায় এসেছি- এটিও একটি কাজ। এটিরও দু’টি অংশ রয়েছে, দু’টি দিক রয়েছে। আবেগ ও বিবেক। এ কাজে সফল হতে হলে উভয় বিষয় আমাদের ভালো করে বুঝতে হবে, জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী সামনে অগ্রসর হতে হবে। প্রথমটি হল- পড়াশোনার প্রতি আমাদের আবেগ, দরদ, আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা থাকা। এটি হচ্ছে সব কাজের মূলভিত্তি। এটি আমাদের থাকতে হবে। অন্যথায় আমরা কাজ করতে পারবো না। সামনে অগ্রসর হতে পারবো না। দ্বিতীয়টি হল- বিবেক ও বুদ্ধিমত্তার আলোকে সঠিক ও গঠনমূলক কর্মপদ্ধতি নির্ণয় করা। তারপর জযবা, প্রেরণা ও আগ্রহ নিয়ে মানযিলে মাকসাদে পৌঁছার লক্ষ্যে অবিরাম চেষ্টা করা।
জযবা আছে, বিবেকবুদ্ধি-বিবেচনা, সঠিক ও গঠনমূলক কর্মপদ্ধতি, কর্মপ্রণালি নেই, তবে এই জযবা বৃথা যাবে; নিষ্ফল হবে। আবার সঠিক ও গঠনমূলক কর্মপদ্ধতি আছে, জযবা নেই, প্রেরণা নেই, উদ্দীপনা নেই, তবুও এ কর্মপদ্ধতি ফলপ্রসূ হবে না; মানযিলে মাকসাদে পৌঁছা যাবে না। মানযিলে মাকসাদে পৌঁছতে হলে উভয়টির সমন্বিত অবিরাম সাধনার বিকল্প নেই।
আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কী?
আযীয তলাবা!
আজ আমি জযবা, প্রেরণা ও আগ্রহের দিক নিয়ে আলোচনা করব না; বিবেক ও বুদ্ধিমত্তার দিক নিয়ে আলোচনা করব। আমরা এখানে কী জন্য এসেছি? আমাদের মাকসাদ কী? লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কী? মাকসাদ অর্জনে আমাদের কী পরিমাণ মেহনত করতে হবে? এসব আজ আমার আলোচ্য বিষয়।
দেখুন, আমরা এখানে খাওয়া-দাওয়ার জন্য আসিনি; ঘুম ও বিশ্রামের জন্য আসিনি। এসব আমরা বাড়ি-ঘরেও করতে পারি। বরং এখান থেকে আরো বহুগুণে উত্তমরূপে করতে পারি। বাড়ি-ঘরের সুস্বাদু খাবার, বিশ্রামের উন্নত ব্যবস্থা বর্জন করে, অনেক কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করে আমরা এখানে এসেছি। নিশ্চয় এর পেছনে অতি মহৎ একটি উদ্দেশ্য আছে। এই মহৎ উদ্দেশ্য কী? এই মহৎ উদ্দেশ্য হল- ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা। ইলমে দ্বীন কী? ইলমে দ্বীন কাকে বলে? আমরা মাদরাসায় অনেকগুলো কিতাব পড়ি, অনেকগুলো ‘ফন’ পড়ি। সবগুলো কী ইলমে দ্বীন? না কি ইলমে দ্বীন বলতে নির্দিষ্ট কোনো কিছু আছে। হ্যাঁ, ইলমে দ্বীন বলতে নির্দিষ্ট কিছু আছে। সবগুলো ইলমে দ্বীন নয়।
ইলমে দ্বীন হল কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান। ইলমুল আকায়িদ, ইলমুল আখলাক, ইলমুল আহকাম। এভাবেও বলা যায়, আল-ফিকহুল আকবার, আল-ফিকহুল আওসাত, আল-ফিকহুল আসগর। এককথায় শরীয়তের জ্ঞানটাই আমরা এখানে অর্জন করতে এসেছি। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। এটাই আমাদের মাকসাদ।
তবে এছাড়াও আমরা মাদরাসায় আরো অনেক ইলম ও ‘ফন’ পড়ি। যেমন- ইলমে নাহু, ইলমে সরফ, ইলমে বালাগাত, মানতিক, ফালসাফা, সাহিত্য ইত্যাদি। এগুলো পড়ি মাকসাদ অর্জনের মাধ্যম ও ওসায়িল হিসেবে। এসব মাধ্যম অর্জনের জন্য আমরা অনেক পড়াশোনা করি, অনেক মেহনত করি। কিন্তু এগুলো আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। এগুলোর মাধ্যমে কুরআন-হাদীস সঠিকভাবে বুঝার এবং জানার যোগ্যতা অর্জন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
আরও পড়তে পারেন-
আহলে কুরআন: কুরআন বলে ‘তুমি মিথ্যাবাদি’
মুমিন জীবনে নামাযের গুরুত্ব
আল্লাহর অসীম কুদরত ও মহিমা আত্মোপলব্ধির উৎকৃষ্ট উপায়
কুরআন অবমাননা: আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বনাম হিন্দুত্ববাদ
যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আলেম সমাজের প্রস্তুতি
এখন যদি এসব ওসায়িলের মধ্যে আমাদের পড়াশোনা শেষ হয়ে যায় মাকসাদ ছাড়া, তাহলে আমাদের মেহনত বৃথা যাবে, নিরর্থক হবে। যেমন- কেউ খানা খাবে। খানা খাওয়ার জন্য রান্না করতে হবে। রান্না করার জন্য লাকড়ি লাগবে। সে পাহাড়ে গিয়ে অনেক কষ্ট-মেহনত করে লাকড়ি আনল। এখন যদি সে বলে, আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমি খুব ক্লান্ত। রান্না করব না এবং রান্না না করে, তাহলে তার সব মেহনত বৃথা যাবে, নিরর্থক হবে।
আমরা এখানে শুধুমাত্র এ সকল বিদ্যাকে উদ্দেশ্য করে তার উপর মেহনত করার জন্য আসিনি। এগুলো উদ্দেশ্য করে চর্চার জন্য বহু বিদ্যালয় আছে। এটা মাদরাসা। দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। মানুষ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে দ্বীনের জন্য, দ্বীনি ইলম বিতরণের জন্য। দুনিয়ার জন্য নয়। এসব বিদ্যা তারাও অর্জন করে, আমরাও অর্জন করি। তারা অর্জন করে দুনিয়ার জন্য, দুনিয়া হিসেবে, পার্থিব বিদ্যা হিসেবে। আমরা অর্জন করি দ্বীনের জন্য, কুরআনের বিদ্যা অর্জনের জন্য, কুরআন-সুন্নাহর বিদ্যা বিশ্বের দিকদিগন্তে ইশাআতের জন্য, বিশ্বকে ইলমে দীনের আলোয় উদ্ভাসিত করার জন্য। এখানেই আমরা আর তাদের মাঝে বিরাট তফাত।
প্রিয় ছাত্র ভাইয়েরা!
আমরা জানতে পারলাম আমাদের উদ্দেশ্য কী? আমাদের মাকসাদ কী? আমাদের উদ্দেশ্য হল ইলমে দ্বীন অর্জন করা। আমরা মাদরাসায় যা কিছু পড়ি সবগুলো আমাদের মাকসাদ না। কিছু মাকাসিদ (লক্ষ্য-উদ্দেশ্য), কিছু ওসায়িল (মাধ্যম)। কোনগুলো মাকাসিদ, কোনগুলো ওসায়িল- এ সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। মাকাসিদ আর ওসায়িলের মাঝে যদি পার্থক্য করতে না পারি, তাহলে আমরা লক্ষ্যচ্যুত হব, এক্সিডেন্ট করব। কোনগুলো ওসায়িল, কোনগুলো মাকাসিদ তা আমাদের খুব ভালো করে জানতে হবে, নির্ণয় করতে হবে। তারপর ওসায়িল পাড়ি দিয়ে মাকাসিদে পৌঁছতে হবে। ওসায়িলে ঘুরতে থাকলে তো আমাদের মাকাসিদ হাছিল হবে না। যেমন, আমার সিঁড়ি আছে। আম পাড়ব। প্রথমে আমাকে সিড়িঁ বেয়ে গাছে উঠতে হবে। তারপর ডালে হাত রাখতে হবে। হাত বাড়িয়ে আম ধরতে হবে। তা না করে যদি আমি সিড়িঁতেই উঠানামা করতে থাকি, তাহলে সিড়িঁতে উঠার কোনো অর্থ থাকবে না; মাকসাদ হাছিল হবে না। এটা শিশুদের খেলায় পরিণত হবে।
ইলম বা বিদ্যা অর্জনের উপকরণ
ইলম বা বিদ্যা অর্জনের উপকরণ হল চারটি।
عقل رجاح، شيخ فتاح، كتب صحاح، مداومة وإلحاح.
“মেধা লাগবে। যোগ্য উস্তাদ লাগবে। ভালো নির্বাচিত গ্রহণযোগ্য কিতাব লাগবে। তারপর অবিরাম পরিশ্রম করতে হবে।”
যে কোনো ইলম; ওসায়িল হোক বা মাকাসিদ- পা-িত্য অর্জনের জন্য এ উপকরণগুলো অপরিহার্য। ওসায়িলে ওসায়িল অর্জনের পরিমাণ, মাকাসিদে মাকাসিদ অর্জনের পরিমাণ এ উপকরণগুলো কাজে লাগাতে হবে।
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, সাধারণত আমরা মনে করি, দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত আমাদের পড়াশোনা শেষ। দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়লে আমরা মাকসাদের অন্তিম চূড়ায় পৌঁছে যাব। আসলে আমাদের এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার যে, দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত আমরা যে পড়াশোনা করি, তাতে আমাদের বেশি সময় মাকাসিদে ব্যয় হয়, না কি ওসায়িল বা মাধ্যমে ব্যয় হয়।
জরিপ করলে নিশ্চয় আমরা উপলব্ধি করতে পারব যে, আমাদের বেশি সময় ওসায়িলে ব্যয় হয়। আকীদার কিতাব পড়ি মেশকাত জামাতে। হাদীস পড়ি মেশকাত এবং দাওরায়ে হাদীসে। তারজামায়ে কুরআন কিছু মাদরাসায় ১০ পারা করে করে ৩ বছর পড়ানো হয়। আর কিছু মাদরাসায় ১৫ পারা করে ২ বছর পড়ানো হয়। তাফসীরের কিতাব পড়ি মাত্র একটি বা দু’টি। ফিকহের কিতাব শুরু থেকে থাকলেও তা ৫/৬টি থেকে বেশি নয়। আবার এগুলোর অধিকাংশ প্রাথমিক স্তরের। এছাড়া বাকি সব পড়া আমাদের ওসায়িল কেন্দ্রিক। নাহু, সরফ, মানতিক, ফালসাফা, বালাগাত, সাহিত্য ইত্যাদি। এর কারণ কী? রহস্য কী?
এর কারণ হচ্ছে, এটা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। আমরা বাধ্য, মাজবূর। কেননা, মাকসাদের কিতাবগুলো আরবি। এগুলো পড়তে হলে প্রথমে আরবি ভাষায় মাহারা (পা-িত্য) অর্জন করতে হবে। আরবী ভাষায় মাহারা অর্জন করার জন্য মাদরাসায় আমাদেরকে নাহু, সরফ, বালাগাত, সাহিত্য ইত্যাদির কিতাবাদি পড়ানো হয়। আবার মেধাকে শাণিত করার জন্য মানতিক, ফালসাফা, দর্শন ইত্যাদির জ্ঞানও থাকা প্রয়োজন। এজন্য এসব বিষয়ের কিতাবাদিও আমাদেরকে পড়ানো হয়। ওসায়িলের এসব কিতাবাদি পড়তে পড়তে আমাদের অনেক সময় চলে যায়। আমাদের বয়স অনেক বেড়ে যায়।
অন্যদিকে স্বল্প ও সীমিত সময়ে পূর্ণাঙ্গরূপে মাকসাদ অর্জন করা সম্ভব নয়। মাকসাদ অর্জনের জন্য অসীম সময়; দীর্ঘ সময় মেহনত করা প্রয়োজন। তাই সবদিক বিবেচনা করে মাদরাসায় আমাদেরকে ওসায়িলের কিতাবাদি সমাপ্তির পর মাকাসিদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিতাব পড়িয়ে মাকাসিদের সাথে আমাদের শুধু সম্পর্ক করিয়ে দেওয়া হয়, পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। যাতে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়াশোনা করে আমাদের যে যোগ্যতা অর্জন হবে, সে যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে বুদ্ধিমত্তার সাথে নিবিড়ভাবে অবিরাম সাধনা করে আমরা মাকসাদ অর্জন করতে পারি। দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত আমাদের পড়াশোনা শেষ; দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়লে আমরা মাকসাদের অন্তিম চূড়ায় পৌঁছে যাব- এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
মাকসাদ অর্জনে আকাবিরের মেহনত
আমাদের আকাবির এ অল্প সময়ে নয়; বরং দীর্ঘ সময় মেহনত করে মাকসাদ অর্জন করেছেন। তাঁরা যথাযথভাবে এ সিলেবাস পড়ে মাকসাদ অর্জনের একটা যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তারপর এ যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে যার যেভাবে সুযোগ হয়েছে দীর্ঘ সময় মেহনত করে সফল হয়েছেন; মাকসাদ হাছিল করেছেন মাদরাসায় থেকে হোক বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে হোক। যাদেরকে আমরা বড় বলছি, তাঁরা সকলেই এভাবে মেহনত করে বড় হয়েছেন। শুধু ওসায়িল পড়ে বড় হয়ে যাননি। আবার মাকসাদের কিতাব একটু ধরে, এক বছর-দু’বছর পড়ে তাঁরা বড় হননি। তাঁরা অনেক পরিশ্রম করে, দীর্ঘ সময় সাধনা করে বড় হয়েছেন। যেমন, আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী, শাব্বীর আহমদ উসমানী, যফর আহমদ উসমানী (রহ.) প্রমুখ। তাঁদের পড়াশোনা এ অল্প সময়ের পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এ অল্প সময় যথাযোগ্য মেহনত করে তাঁরা মাকসাদ অর্জনের পূর্ণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। পরবর্তীতে এ যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে দীর্ঘ সময় মেহনত করে সফল হয়েছেন। মানযিলে মাকসাদে পৌঁছেছেন।
অতএব, আমাদের মাথায় থাকতে হবে যে, মাকাসিদ অর্জন করা ওসায়িল ছাড়া সম্ভব না। আবার মাকাসিদের কয়েকটি কিতাবের উপর আমরা যে অল্প সময় মেহনত করি- এটাও মাকসাদ অর্জনের জন্য যথেষ্ট না। তাই যথেষ্ট পরিমাণে মেহনত করতে হবে উদ্দেশ্য হাছিলের জন্য। যেটা পরবর্তী সময়ে, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা সমাপ্তির পর।
তবে পরবর্তীতে মেহনত করে সফল হওয়ার জন্য এখন আমাদের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। ওসায়িলের কিতাবগুলো ভালো করে, মেহনত করে পড়তে হবে। তারপর মাকসদের কিতাবগুলো- যা আমাদের সিলেবাসে পড়ানো হয়- এমনভাবে মেহনত করে পড়তে হবে, যেমনভাবে মেহনত করে পড়লে সেগুলোর চাহিদা পূর্ণ হয়; তাকাযা পূর্ণ হয়। অতঃপর দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়াশোনা করে মাকসাদ হাছিলের যে যোগ্যতা অর্জন হবে, সে যোগ্যতা দিয়ে আমাদের মেহনত করতে হবে লম্বা সময়। দারুল উলূম দেওবন্দের শায়খুল হাদীস আল্লামা সাঈদ আহমাদ পালনপূরী (রহ.) বলতেন, মেধা অনুপাতে কারো দশ বছর, কারো পনেরো বছর, আর কারো বিশ বছর মেহনত করতে হবে। তারপর আল্লাহ তায়ালা যদি মানযূর করেন ইলমে পূর্ণতা আসবে, পা-িত্য আসবে, ‘মাহারা’ আসবে।
শেষ কথা
যারা ওসায়িলের কিতাবগুলো ভালো করে, মেহনত করে পড়ে ওসায়িলে পূর্ণমাহারা হাছিল করবে। সাথে সাথে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত মাকাসিদের কিতাবগুলো পুরোদমে মেহনত করে সেগুলোর চাহিদা পূর্ণ হয়, তাকাযা পূর্ণ হয়- এমনভাবে পড়বে। অতঃপর দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়াশোনা করে যে যোগ্যতা অর্জিত হবে, সে যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে মাকাসিদের একেকটি ফনকে উদ্দেশ্য করে বুদ্ধিমত্তার সাথে নিবিড় যত্নে অবিরাম সাধনা করবে, তারাই সফল হবে; তারাই মানযিলে মাকসাদে পৌঁছতে পারবে এবং তারাই উম্মাতের সঠিক রাহনুমায়ী করতে সক্ষম হবে।
আজ এতটুকু বলে আলোচনা সমাপ্ত করলাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার তাওফীক শামিলে হাল হলে ভবিষ্যতে কোনো সময় “দাওরায়ে হাদীস-পরবর্তী দশ-পনেরো-বিশবছর মেহনতের নেসাব, নেযাম বা রূপরেখা কী হবে? কেমন হবে?” এ সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে আমৃত্যু ইলমে দ্বীনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন।
অনুলিখন- ইয়াছিন আরাফাত রাফি
শিক্ষার্থী, ইফতা ২য় বর্ষ, দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ
মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/