ইলম অন্বেষণে যেসব বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি জরুরি

।। শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা ।।

ইমাম মুহাম্মাদ (রহ.) বলেন, তালিবুল ইলমের মধ্যে এই তিনটি গুণ না থাকলে ইলমের পরিপূর্ণতা অর্জিত হবে না-

১. ইলমের প্রতি আগ্রহ।
২. জন্মগত মেধা ও বুঝশক্তি ।
৩. প্রয়োজন পরিমাণ জীবিকার ব্যবস্থা।

ইমাম শাফিয়ী (রহ.) বলেন, তালিবুল ইলমের মধ্যে এই তিনটি গুণ থাকা জরুরি-

১. দীর্ঘ জীবন তথা- দীর্ঘদিন ইলম অন্বেষণ।
২. আর্থিক সচ্ছলতা তথা- তালিবুল ইলমকে শিক্ষাকালীন অবস্থায় জীবিকা উপার্জন থেকে দূরে থাকতে হবে এবং অল্পে তুষ্ট থাকতে হবে।

আরও পড়তে পারেন-

৩. বুঝশক্তি ও মেধা। যাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে মেধা প্রদান করা হয়, সে তার গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছতে পারে।

এ তিনটি বিষয় ইমাম শাফিয়ীর মধ্যে পরিপূর্ণরূপে পাওয়া যেতো। এ কারণে তিনি মাত্র ৫৪ বছর জীবন পেলেও আল্লাহ তাআলা তার ইলমে অতুলনীয় বরকত দিয়েছেন।

আল্লামা মাওয়ারদী বলেন, নিম্নের গুণাবলি থাকলে তালিবুল ইলম আল্লাহর তাওফিকে ইলমে পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পারে। যথা-

১. বোধশক্তি।
২. বুঝশক্তি।
৩. প্রতিভা।
৪. ইলম অর্জনের আগ্রহ।
৫. প্রয়োজন পরিমাণ সম্পদ।
৬. অন্যান্য কাজ থেকে অমুখাপেক্ষিতা।
৭. দুঃখ-বেদনাহীন একাগ্রতা।
৮. দীর্ঘ জীবন।
৯. স্নেহশীল ও দয়ালু উস্তাদ।

হাফেজ ইবনুন নাজ্জার ইমামুল হারামাইনের উদ্ধৃতিতে এই কবিতা উল্লেখ করেছেন-

أخي لن تنال العلم إلا بستة

سألبِتكَ عَنْ تفصِيلِهَا بِبَيانِ

ذكاء وَحرُضُ وَافْتِقَارُ وَغَرْبَةٌ

وَتلقِين أُسْتَاذِ وَطُولُ زَمَانِ

ওহে ভাই, ৬টি বিষয় ব্যতীত তুমি ইলম পাবে না। সেগুলো হলো- মেধা, আগ্রহ, দারিদ্র্য, প্রবাস, উস্তাদের দীক্ষা ও দীর্ঘ সময়।

আল্লামা ইবনুল আরাবী বলেন, অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার শর্ত ও দায়িত্ব অনেক, কিন্তু মৌলিকভাবে নিচের ৭টি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা জরুরি-

১. ইখলাস। ২. ইলমের জন্য বিনয়। ৩. উস্তাদের সামনে বিনয়। ৪. উস্তাদের পরামর্শ প্রতিপালন । ৫. ধারাবাহিকভাবে ইলম অর্জন। ৬. ইলমি আলোচনা এবং ৭. ইলমের ওপর আমল।

আল্লামা সাখাভী (রহ.) বলেন, কিছু বিষয় ইলম অর্জনে অত্যন্ত সহায়ক-

১. দ্রুত ও নির্ভুলভাবে ইবারত পড়া।
২. সুন্দর হস্তাক্ষরে দ্রুত লিখতে পারা।
৩. ভালো ছাত্রদের সাহচর্য।
৪. নেতা ও ধনীদের কাছে যাতায়াত না করা।
৫. সময়কে কাজে লাগানো।

অল্প বুঝের চিকিৎসা নেই

বিশিষ্ট ফকিহ তাবিয়ী ইমাম আবদুল্লাহ বিন শুবরুমার কাছে এক ব্যক্তি মাসআলা জিজ্ঞেস করতে এলো। তিনি মাসআলা বলে দিলেন।

সে বলল, আমি বুঝতে পারিনি। ফলে তিনি পুনরায় বুঝিয়ে দিলেন। এরপরও সে বলল, আমার বুঝে আসেনি। তখন তিনি বললেন, “তুমি বুঝতে না পারলে আবার বুঝিয়ে দিলে হয়তো বুঝে আসবে। কিন্তু তোমার মধ্যে যদি বোঝার সক্ষমতাই না থাকে, তবে এর চিকিৎসা নেই”। অর্থাৎ যে ব্যক্তির বুঝশক্তি কম, তাকে বোঝাতে থাকলে কোনো ফায়দা নেই।

[শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ আওয়ামা রচিত ‘মাআলিমু ইরশাদিয়া’ গ্রন্থ থেকে সংক্ষেপে অনূদিত]

ভাষান্তর- রাইহান খাইরুল্লাহ

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।