কে এলো ঐ
– মালেকা ফেরদৌস
শুক্লা দ্বাদশীর চাঁদ আকাশে আবির ছড়িয়ে অস্তের পথে
সুবহে সাদিক, এখনও ঘোর কাটেনি আঁধার রাতের
আরবের মরুর দিগন্তে প্রকৃতি জাগছে- যুগান্তের জমাট
অন্ধকার, বেদনা যেন রুদ্ধবাক দাঁড়িয়ে, পুণ্যবতী নারী মা
আমেনা অবাক বিস্ময়ে চোখ খুললেন-
তাঁর ছোট্ট কুটির বর্ণিল আলোয় ঝলমলে,
বেহেশতের সুরভিতে ভরে গেছে ঘর,
কোল জুড়ে তার পূর্ণ শশী মুহাম্মদ,
পাখির কলরব আর ফুলের
সৌরভের ‘ক্ষেপণাস্ত্রে ভরে ওঠে পবিত্র বারুদ’
লতা পাতা, তৃণ, ফুল ফল, পুণ্যাত্মা ফেরেস্তারা সমস্বরে গেয়ে ওঠে- সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
সিজদায় নত হয় সব- কেঁপে ওঠে বিশ্বের ভোর।
ভয়ে কাঁপে লাত, মানতের পূজারীর দল,
খসরুর রাজ প্রাসাদের স্বর্ণচূড়া ভেঙে চুর,
কাবার মূর্তিগুলো খান খান, মরুর বুকে
নহরের কল্লোল ওঠে সিরিয়ায়।
মক্কার আকাশ ভরে যায় আল্লাহর দূত আবাবিলে
ছিন্ন ভিন্ন হয়ে হয়ে আবরাহার বিশাল হস্তীবহর।
‘কুল মাখলুকাতে ধ্বনি ওঠে কে এলো ঐ…..।
ওগো আমার দয়াল মাওলা
– এ.কে.এম. আছাদুজ্জামান ফিরোজ
ওগো আমার দয়াল মাওলা আরশের অধিপতি
মাফ করে দেন এ নাদানের জীবনের সকল গুনাহ রাশি।
ভুল করিয়া করছি গুনাহ মাওলানা বুঝলে করতাম না,
মাফ করে দেন ওগো মাওলানা আর গুনাহ করব না।
জাহান্নামে দিলেও মাওলা আমার বলার কিছু নাই
আপনি ছাড়া আমার তো আর অন্য কোন মাবুদ নাই।
সারা জীবন ওগো মাওলা আপনার হুকুম মানার চেষ্টা করেছি
পারি নাই ভুল হয়েই গেছে এখন তাই ক্ষমা চাইতেছি
যেমনি ভুলি নাই মাওলা দুনিয়ায় আমি আপনাকে
তেমনি ভুলবেন না মাওলা এ গুনাহগার পাপীকে
কবর, হাশর, পুলসিরাত, মিজান আর দুনিয়াতে
আপনার দয়া ক্ষমা মাগছি সর্বদা সকাল দুপুর সাঁঝে
আপনার ‘রহমান’ নামের উসিলাতে মাওলা ক্ষমা ভিক্ষা চাই
দয়ার নবীর উসিলাতে আমায় মাফ করে দেন তাই,
দয়া করেন ক্ষমা করেন মাওলা আমি এক পাপী গুনাহগার
মাফ করে দেন ওগো মাওলা উম্মতের জীবনের সকল অনাচার।
অসহায় মানবতা
– মোস্তাকিম বিন আমির
মানবতা এক দিন
মনুষ্য সীমানা অতিক্রম করে
পৌঁছেছিল হিংস্র পশুদের মাঝে
ব্যাঘ্র আক্রমণ করেনি কোন ভেড়াকে
অথচ পানি খেয়েছিল এক ঘাটে।
ওদের মাঝেও গড়ে ওঠেছিল ভ্রাতৃত্ব বন্ধন
তাই ঘটেনি কোন অঘটন।
কিন্তু আজ মানুষের মাঝে নেই ভ্রাতৃত্ব বন্ধন,
মানবতাও প্রায় বিলুপ্তির পথে অগ্রসরমান।
মানবতা আজ মা-বাবা হারা
এতীমের মতো অসহায় হয়ে
কাঁদে ফেরে মানুষের দ্বারে দ্বারে
সৃষ্টিরা সব নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে
মানবতার নিদারুণ অসহায়ত্ব….
চোখের নোনা জল ফেলে
সৃষ্টিরা সব কাঁদছে নীরবে।
অমানুষদের কর্ম
– আদ্রিতা জাহান রিতু (নওমুসলিম)
মানুষের সাথে মানুষের কোন বিভেদ করেনি ধর্ম,
যতটা বিভেদ তৈরি করেছে অমানুষদের কর্ম।
যুক্তি তর্কে ধর্ম আলাদা মানুষ আলাদা নয়,
ধর্ম নিয়ে কূটনীতি হলে হয় সমাজের ক্ষয়।
প্রকৃত হিন্দু দূর্গা পূজায় রাখবে না কুরআন,
প্রকৃত মুমিন কভূ করবে না কুরআনের অপমান।
দু’ পক্ষই দুষছে যখন প্রকৃত দোষী হাসছে,
সে নিশ্চই তৃতীয় পক্ষ স্বার্থসিদ্ধি করছে।
হিন্দু মুসলিম আঘাত পেলে লাভ হবে কোন মানুষের?
সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দরকার আজ আমাদের।
আগুনে ঘি ঢালছে সবাই সবাই হিসেব কষছে,
সেই মা জানে কতটা দুঃখ যে আজ সন্তান হারাচ্ছে।
মা যে আমার হিন্দু আর সন্তান মুসলমান,
আঘাত আসুক যেদিক থেকেই কাঁদবে আমার প্রাণ।
যুক্তির মাঝে মুক্তি মিলুক জয় হোক শুধু মানুষের,
মিলে মিশে থাকুক মানুষ হয়ে একে আজ অন্যের।
#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ
মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/