জামাতে নামায আদায়ে কোনরূপ শৈথিল্য বরদাশত করা হবে না: জামিয়া প্রধান

গভীর অধ্যবসায়ের সাথে পড়াশোনার পাশাপাশি দৈনন্দিন আমল ও ইবাদতে গভীর মনোযোগী ও পরিপূর্ণ সুন্নাতের অনুসরণ করে চলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (দা.বা.)।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদের উদ্দেশ্যে এক বার্তায় জামিয়া প্রধান আল্লামা ইয়াহইয়া (দা.বা.) বলেন, জামিয়ার সকল শিক্ষার্থীকে অবশ্যই প্রতি ওয়াক্ত নামাযে তাকবীরে ঊলার সাথে জামাতে শামিল হতে হবে। জামাতে নামায আদায়ের বিষয়ে কোনরূপ শৈথিল্য বা অলসতা বরদাশত করা হবে না।

এ পর্যায়ে জামিয়া প্রধান পবিত্র কুরআনের সূরা বাক্বারার ৪৩ নং আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা জামাতে নামায আদায়ের তাগিদ দিয়ে ইরশাদ করেছেন, তোমরা রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো। অর্থাৎ জামাতে নামায আদায়কারীদের সঙ্গে নামায আদায় করো। আর আমাদের আখেরী নবী হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)ও সারা জীবন জামাতে নামায আদায় করে দেখিয়েছেন যে, নামায জামাতে আদায় করতে হয়। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) সারা জীবন জামাতের সঙ্গেই নামায আদায় করেছেন। এমনকি ইন্তেকাল আগে অসুস্থতার সময়ও জামাত ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামের পুরো জীবন সেভাবে অতিবাহিত হয়েছে।

আরও পড়তে পারেন-

আল্লামা ইয়াহইয়া (দা.বা.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পার্থিব মোহ ও লোভ-লালসাকে পরিত্যাগ করে দ্বীনের প্রচার-প্রসার এবং সমাজে দ্বীন প্রতিষ্ঠার মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখে আপনারা মাদ্রাসা শিক্ষাকে বেছে নিয়েছেন। সুতরাং এই মহান লক্ষ্য পুরণে সবার আগে আপনাদের নিজেদের ব্যক্তিজীবনে দ্বীনের পরিপূর্ণ অনুসারী ও অনুগামী হতে হবে। আপনাদের জীবনকে সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা, সর্বোচ্চ আদর্শ এবং সর্বোচ্চ তাক্বওয়ার মধ্যে সাজাতে হবে। ছাত্র জীবন হচ্ছে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি অনুশীলন করে নিজের মধ্যে লব্ধ জ্ঞান আত্মস্থ করার সময়। আপনারা নিজেদের আহরিত জ্ঞান দিয়ে যদি নিজেদেরকেই সাজিয়ে তুলতে না পারেন, তবে অন্যের মাঝে কীভাবে নববী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করবেন?

আল্লামা ইয়াহইয়া (দা.বা.) ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, মাদ্রাসার সকল ছাত্রকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায তাকবীরে ঊলার সাথে জামাতে আদায় করতে হবে। এ জন্য পড়ালেখার চাপ বা অন্য কোন অপারগতা গ্রহণযোগ্য হবে না। কারো মধ্যে গাফলতি দেখা গেলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এছাড়া আপনাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল পর্যায়ে রাসূল (সা.)এর জীবনাদর্শ তথা পরিপূর্ণ সুন্নাতের অনুসরণ করতে হবে। প্রতিদিন ফজরের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে নিয়ম করে কুরআন তিলাওয়াত করবেন। রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে গভীর রাতে ওঠে তাহাজ্জুদ আদায় করে ফজরের আগে ১-২ ঘণ্টা কিতাব অধ্যয়ন করবেন। আপনাদের পারস্পরিক কথাবার্তা ও চলাফেরায় সম্মান ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে হবে। জামিয়ার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও আইন পূর্ণরূপে মেনে চলতে হবে।

তিনি বলেন, এভাবে যদি মেহনত-সাধনা করে পড়াশোনা করেন, নিজেদের দৈনন্দিন জীবনকে সুন্নাতের আলোকে সাজিয়ে তুলেন এবং জামিয়ার সকল আইন মেনে নিজেকে আদর্শ ও পরিশুদ্ধতা নিয়ে পরিচালিত করতে পারেন, ইনশাআল্লাহ আপনারা এখান থেকে শিক্ষাউত্তীর্ণ হয়ে কওম-মিল্লাতের যোগ্য রাহবার ও খাদেম হয়ে সম্মান-শ্রদ্ধার্জনের সাথে দ্বীনের বহুমুখী কাজ আঞ্জাম দিতে পারবেন। এতে আপনাদের ইহকাল ও পরকাল সাফল্যমণ্ডিত ও বরকতময় হবে, ইনশাআল্লাহ।

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।