জিজ্ঞাসা-সমাধান

পরিচালনায়- ইসলামী আইন ও গবেষণা বিভাগ
আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

তহারাত বা পাক-পবিত্রতা

(৯২০৮) শারাফাত আলী, নরসিংদী।
জিজ্ঞাসা:
আমরা পানির জন্য যে ট্যাপ ব্যবহার করি। মাঝে মাঝে ট্যাপ দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হয়। এই পানি দিয়েই আমরা অজু গোসল করি। জানার বিষয় হলো, আমাদের অজু-গোসল সহীহ হচ্ছে কি না?

সমাধান: প্রথমে আপনাকে অনুসন্ধান করে দেখতে হবে যে, পানি দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ বা উৎস কী? যদি দুর্গন্ধের কারণ পাইপে বা টাংকিতে থাকা কোনো নাপাকি বা অপবিত্র বস্তু হয়, তাহলে ঐ পানি দিয়ে অজু বা গোসল করা যাবে না।

আর যদি পানির আয়রনজনিত কারণে অথবা ট্যাপ বা পাইপে জং ধরার কারণে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে, তাহলে সে পানি দিয়ে অজু বা গোসল করা যাবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা- ১/১৭-১৮, ফাতাওয়া তাতারখানিয়্যা- ১/১৬৩, রদ্দুল মুহতার- ১/১৮৫)।

সালাত

(৯০৯) ওয়ালীদ হোসাইন, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
জিজ্ঞাসা:
সালাম বাদ আরয এই যে, গত ২৩ নভেম্বর ইশার নামাযে ইমাম সাহেব ভুলক্রমে প্রথম বৈঠক না করে তৃতীয় রাকাতের জন্য পুরোপুরি দাঁড়িয়ে যান। পরে মুক্তাদিগণ তাকবীর দিলে তিনি পুনরায় বৈঠকে ফিরে আসেন এবং শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা দিয়ে নামায শেষে করেন। প্রশ্ন হলো, আমাদের নামায শুদ্ধ হয়েছে কি না?

সমাধান: প্রশ্নোক্ত সূরতে আপনাদের নামায শুদ্ধ হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম হলো, ইমাম সাহেব ভুলক্রমে প্রথম বৈঠক না করে পরিপূর্ণ দাঁড়িয়ে গেলে বা দাঁড়ানোর কাছাকাছি হলে নামায জারি রাখা; পুনরায় বৈঠকে ফিরে না যাওয়া; পিছন থেকে তাকবীর না দেওয়া এবং শেষ বৈঠকে সাহু সিজদার মাধ্যমে নামায শেষ করা। (ফাতহুল কাদীর- ১/৪৪৫, আল বাহরুর রায়েক- ২/১০১, মারাকিউল ফালাহ- ২৪৫)।

(৯১০) আমীর হামযা, রাজশাহী।
জিজ্ঞাসা:
কোনো ব্যক্তি যদি ফজরের সুন্নাত পড়ার সময় ইমাম সাহেব থেকে তিলাওয়াতে সিজদা শুনেন, তাহলে তার উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত কখন ওয়াজিব হবে?

সমাধান: ঐ ব্যক্তি যদি সুন্নাত শেষ করার পর, ইমাম সাহেব সিজদা তিলাওয়াত আদায় করার পূর্বেই ইমাম সাহেবের ইকতিদা করেন, তাহলে ইমাম সাহেবের সাথে সিজদা আদায় করবে। আর যদি ইমাম সাহেব সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করার পর ঐ রাকাতে রুকুর পূর্বে বা রুকুতে ইমাম সাহেবের ইকতিদা করেন, তাহলে ঐ ব্যক্তির সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে হবে না। তবে তিনি যদি পরের রাকাতে ইমাম সাহেবের ইকতিদা করেন, তাহলে নামাযের পর সিজদায়ে তিলাওয়াত একাকি আদায় করে নিবেন। (বাদায়েউস সানায়ে- ১/৪৩৮, আল বাহরুর রায়েক- ২/২১৫)।

যাকাত ও দান-সাদাকা

(৯১১) সাবের আহমদ, জামালপুর।
জিজ্ঞাসা:
আমি বিভিন্ন দোকানে পাইকারি চা পাতা বিক্রয় করি। দোকানদাররা সাধারণত বাকিতে মাল রাখেন। পরে আস্তে আস্তে টাকা দেন। বছরের শেষে যখন যাকাত আদায় করি তখন অনেকের কাছে টাকা বাকি থেকে যায়। এমতাবস্থায় যেই পরিমাণ টাকা বাকি আছে, সেই টাকারও কি যাকাত দিতে হবে?
সমাধান: প্রশ্নোক্ত সূরতে পাওনা টাকা যাকাতের নেসাবে হিসেব গণ্য হবে। তবে পাওনা টাকার যাকাত তৎক্ষণাৎ আদায় না করে সেই টাকা উসূল হওয়ার পর আদায় করারও অবকাশ রয়েছে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা- ১০৩৫১, দুরারুল হুক্কাম- ১/১৭৩, আদ্দুররুল মুখতার- ২/৩০৫)।

(৯১২) হাফেজ কালীমুল্লাহ, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
জিজ্ঞাসা:
আমাদের মাদরাসার পাশে একজন গরিব ব্যক্তি মারা গেছেন। তার উপর কিছু ঋণ ছিলো। মারা যাওয়ার পূর্বে তিনি সে ঋণ আদায় করতে পারেনি। আমাদের মাদরাসার একজন শিক্ষক উক্ত মৃত ব্যক্তির ঋণ নিজের যাকাতের টাকার মাধ্যমে আদায় করে দিতে চাচ্ছেন। জানার বিষয় হলো, যাকাতের টাকার মাধ্যমে ঋণ আদায় করলে যাকাত আদায় হবে কি না?

সমাধান: যাকাতের টাকা উপযুক্ত প্রাপ্য কাউকে মালিক না বানিয়ে সরাসরি মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করলে যাকাত আদায় হবে না। কেননা, যাকাত আদায় হওয়ার জন্য যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে মালিক বানিয়ে দেয়া শর্ত। আর মৃত ব্যক্তিকে মালিক বানানো যায় না। এমতাবস্থায় তার ঋণ শোধ করলে যাকাতও আদায় হবে না। তবে মৃত ব্যক্তির যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ওয়ারিসকে যদি যাকাতের টাকা দেয়া হয় এবং সে তার নিজের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করে দেয়, তাহলে দাতার যাকাত আদায় হয়ে যাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস- ৭১৭০, মাবসূতে সারাখসী- ২/৩৬৫, বাদায়েউস সানায়ে- ২/৩৯)।

(৯১৩) শেখ মোহর আলী, গাজীপুর।
জিজ্ঞাসা:
আমার বড় বোন, গত রমাযানে একজনকে পাঁচ হাজার টাকা যাকাত দিয়ে বললেন, ‘এগুলো অমুক অমুক ব্যক্তির কাছে এতো এতো করে পৌঁছে দিবে’। ঐ লোক চার হাজার টাকা অন্যদের দিয়ে, বাকি এক হাজার টাকা নিজে (গরিব হওয়ায়) রেখে দিল। বিষয়টি আমার বড় বোন জানতেন না। এখন আমার বোনের যাকাত আদায় হয়েছে কি? যাকাত আদায় না হলে কী করণীয়?

শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে উক্ত উকিলের কী হুকুম হবে? সঠিক সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।

সমাধান: আপনার বোনের ১০০০ হাজার টাকার যাকাত আদায় হয়নি। কেননা, সে প্রতিনিধি আপনার বোনের কথামতো যাকাত না দিয়ে তার অগোচরে নিজেই টাকা রেখে দিয়েছে। টাকাটা উপযুক্ত প্রাপকের কাছে পৌঁছায়নি। সুতরাং আপনার বোনকে সেই ১০০০ টাকার যাকাত পুনরায় আদায় করতে হবে। আর উক্ত ব্যক্তি গরিব হলেও মালিকের অনুমতি ছাড়া সম্পদ ব্যবহার করে গুনাহগার সাব্যস্ত হয়েছেন। তাই তাকে টাকা ফেরত দিয়ে খালেস দিলে তাওবা করতে হবে। (মাবসূতে সারাখসী -১৯/৭২, হাশিয়াতুশ শালাবী মাআত তাবয়ীন -১/২০৫, আল বাহরুর রায়েক -২/২২৭)।

(৯১৪) হাফেয মাওলানা জিয়াউর রহমান, গাইবান্ধা।
জিজ্ঞাসা:
একজন বিত্তবান পিতার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে পরিবারের অমতে স্বেচ্ছায় মাদরাসায় ভর্তি হয়। পিতার মত না থাকায় সেই সন্তানকে পরিবার থেকে কোনো টাকা-পয়সা দিচ্ছে না। যার দরুন তাকে বেশ কষ্ট করে চলতে হয়। অনেক সময় প্রয়োজনীয় কিতাবাদি ক্রয় করতে পারে না। সে বাড়ী থেকে অনেক দূরবর্তী একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। তাকে যাকাতের টাকা কিংবা যাকাতের টাকায় কিতাবপত্র ক্রয় করে দিলে আমার যাকাত আদায় হবে কি?

সমাধান: হ্যাঁ, তাকে যাকাতের টাকা কিংবা যাকাতের টাকায় কিতাবপত্র ক্রয় করে দিলে আপনার যাকাত আদায় হবে। কেননা, ঐ ছাত্র ব্যক্তিগতভাবে সম্পদশালী নয়, তাই তাকে যাকাত প্রদান করা শরীয়াতের দৃষ্টিতে জায়েয হবে; বরং ইলমে দ্বীনের শিক্ষার্থী হওয়ায় তাকে দেওয়া উত্তম। (সূরা মাআরিজ, আয়াত- ২৫, বাদায়েউস সানায়ে- ২/৪৭, তাবয়ীনুল হাকায়েক- ১/৩০৩, ফাতহুল কাদীর- ২/২৭২)।

(৯০১৫) কারীমুল হক, ফেনী।
জিজ্ঞাসা:
বর্তমান প্রায় সব জায়গায় এমন কিছু পেশাদার ভিক্ষুক দেখা যায় যে, বাস্তবে তারা অভাবী নয়; বরং দাতাদের চেয়েও ধনী। অর্থাৎ নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। এমন ভিক্ষুককে দান-সদাকা করার হুকুম কী? আর এসব দান সেই ভিক্ষুকদের জন্য গ্রহণ করার বিধান কী?

সমাধান: প্রশ্নের বর্ণনা যদি সঠিক হয়, তবে এদেরকে দান না করলে কোনো অসুবিধা নেই, বরং জানাশোনা সত্ত্বেও এ ধরনের ব্যক্তিকে দান-সদাকা করা ঠিক হবে না। কেননা, এর দ্বারা তাদের সুযোগ করে দেয়া হয়; ফলে তারা আরো অলস হয়ে উপার্জন থেকে বিরত থাকে।

ইসলামে সক্ষম ব্যক্তিদের ভিক্ষাবৃত্তি করার অনুমতি নেই। যারা প্রয়োজনে নয়; বরং সম্পদ বৃদ্ধির লোভে ভিক্ষাবৃত্তি করে, তাদের জন্য রয়েছে কঠিনতম শাস্তি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ سَأَلَ النَّاسَ أَمْوَالَهُمْ تَكَثُّرًا، فَإِنَّمَا يَسْأَلُ جَمْرًا فَلْيَسْتَقِلَّ أَوْ لِيَسْتَكْثِرْ

‘যে ব্যক্তি নিছক সম্পদ বৃদ্ধির জন্য মানুষের কাছে ভিক্ষা করে বেড়ায়, বস্তুত সে জ¦লন্ত অঙ্গার ভিক্ষা করছে। (তার ভেবে দেখা উচিত) সে কি কম নিবে না বেশি নিবে।’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস- ২২৮৯)।

(৯০১৬) মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ (সবুজ), ঢাকা।
জিজ্ঞাসা: বর্তমান করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের লক্ষ্যে নফল সদাকা প্রকাশ্যে দেয়া উত্তম, নাকি গোপনে দেয়া উত্তম?

সমাধান: নফল সদাকা গোপনে দেয়া উত্তম; যাতে লোক দেখানোর গুনাহ হতে সহজে বেঁচে থাকা যায়। তবে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ্যেও দেয়া যাবে। যেমন- উৎসাহ প্রদানার্থে অথবা অন্য যৌক্তিক কোনো কারণে। তবে সর্বাবস্থায় রিয়ামুক্ত হতে হবে। (সূরা বাকারা, আয়াত- ২৭১, সহীহ বুখারী, হাদীস- ১, ফাতহুল কাদীর- ২/১৭১)।

আরও পড়তে পারেন-

(৯০১৭) ইবরাহীম ফুয়াদ, রাউজান, চট্টগ্রাম।
জিজ্ঞাসা:
আমার পাশের বাড়িতে এক হিন্দুলোক ভাড়া থাকেন। অভাব-অনটনে তার দিন কাটে। তাকে কি আমি নফল সদাকা করতে পারবো?

সমাধান: হ্যাঁ, নফল দান-খয়রাত অমুসলিমকেও করা যাবে। এ ব্যাপারে প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইবরাহীম নাখয়ী (রহ.) বলেছেন, ‘অমুসলিমদেরকে যাকাত দিয়ো না, নফল সদাকা দাও’। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা- ১০৫১২, মাবসূতে সারাখসী- ৩/১১১, ফাতহুল কাদীর- ৪/২৬০)।

সিয়াম

(৯০১৮) ফখরুল ইসলাম, রাজবাড়ী।
জিজ্ঞাসা:
আমি গত রমযানে রোযা অবস্থায় কোভিড-১৯এর টিকা গ্রহণ করেছি। জানার বিষয় হল, আমার রোযা আদায় হয়েছে, নাকি আবার কাযা আদায় করতে হবে?

সমাধান: রোযা রেখে যে কোনো ধরনের টিকা, ইনজেকশন; চাই তা শিরায় দেয়া হোক কিংবা চামড়ায় কিংবা মাংসে, রোযা ভাঙবে না এবং এটাই অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরামের মত। কারণ টিকার দ্বারা যেসব ঔষধ শরীরে প্রবেশ করানো হয়, তা সরাসরি পাকস্থলিতে পৌঁছায় না। (বাদায়েউস সানায়ে-২/৯৩, রদ্দুল মুহতার-২/৩৯৬, এমদাদুল ফাতাওয়া-২/১৪৫)।

(৯০১৯) আফজল মিয়া, কুষ্টিয়া।
জিজ্ঞাসা:
আমি একজন হার্টের রোগী, হার্টের রক্তনালী ব্লক হয়ে যাওয়ার কারণে ডাক্তার আমাকে এনজিওগ্রাম করার পরামর্শ দেন। (এনজিওগ্রাম হলো, ঊরুর গোড়ার দিকে চামড়া ফুটো করে একটি বিশেষ ধমনীর ভেতর দিয়ে (যা হার্ট পর্যন্ত পৌঁছতে পারে) ক্যাথেটার প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষা করা। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমি রমাযানের রোযা রেখে এনজিওগ্রাম করেছি। এতে আমার রোযার কোনো সমস্যা হয়েছে কি?

সমাধান: রমাযানের রোযা রেখে এনজিওগ্রাম করার কারণে আপনার রোযা ভেঙে যায়নি। কেননা, ক্যাথেটার সরাসরি পেটে পৌঁছায় না বিধায় রোযা ভাঙার কারণ পাওয়া যায়নি। অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে এনজিওগ্রাম করলে রোগী অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। আর রোযা অবস্থায় দুর্বল করে দেয় বা দুর্বলতা বৃদ্ধি করে- অপরিবাহর্য না হলে এমন যে কোনো কাজ থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়। সুতরাং রোযা অবস্থায় এনজিওগ্রাম না করানোই শ্রেয়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস- ৯৪১১, বাদায়েউস সানায়ে- ২/৯৩, রদ্দুল মুহতার- ২/৩৯৫)।

(৯০২০) মুহাম্মদ কাসেমী, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা:
আমার ছোট ভাইয়ের বয়স মাত্র সাড়ে ১১ বছর। সে গত রমাযানে একটি রোযা রেখে বিকালের দিকে ভেঙে ফেলে। জানার বিষয় হলো, তার এই রোযাটি কি কাযা করতে হবে?

সমাধান: না, আপনার ঐ ছোট ভাই যেহেতু নাবালেগ, তার উপর রোযা ফরজ হয়নি। আর ফরজ না হলে তা কাযা করার বিধানও প্রযোজ্য হবে না। তাই সে রোযা রেখে ভেঙে ফেলায় তাকে ঐ রোযার কাযা করতে হবে না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস- ২৫১১৪, বাদায়েউস সানায়ে- ২/৮৩, রদ্দুল মুহতার- ২/৪০৯)।

হজ্জ-ওমরা

(৯০২১) আবু বকর, পাবনা।
জিজ্ঞাসা:
আমরা জানি, হজ্জের মধ্যে জিনায়েতের কারণে দম দিতে হয়। এই দম দেয়ার নিয়ম কী? এবং এটি কারা খেতে পারবে?

সমাধান: উট, গরু ও ছাগল; এই তিন শ্রেণির প্রাণির যেকোনো একটি দিয়েই জিনায়েতের দম আদায় করা যায়। তবে সর্বোত্তম হলো দমের জন্য উট নির্বাচন করা। তারপর গরু, এরপর ছাগল। তবে দুটি ক্ষেত্রে তথা জুনুবী অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারত করলে বা উকূফে আরাফার পর সহবাস করলে দম স্বরূপ ছাগল দেওয়া জায়েয হবে না; বরং উট বা গরু দিতে হবে। বয়সের ক্ষেত্রে কুরবানীর পশুর যে হুকুম, দমের ক্ষেত্রেও সেই হুকুম প্রযোজ্য। জিনায়াতের দম কুরবানীর তিন দিনসহ বছরের যে কোনো সময়ে আদায় করতে পারবে। তবে হারাম শরীফের চৌহদ্দিতেই আদায় করতে হবে। যবাই করার পর প্রাণীর রশি, লাগাম ও গোশত মিসকীনদেরকে সদাকা করে দিবে। হারাম শরীফের মিসকীনদের তুলনায় যদি হারামের বাইরের মিসকীনরা বেশি মুখাপেক্ষী না হয়, তাহলে হারাম শরীফের মিসকীনদেরকেই সদাকা করা উত্তম।

হজ্জে দুই ধরনের দম দেয়া হয়। এক. দমে শোকর। যেমন- হজ্জে তামাত্তু ও হজ্জে কেরানের দম। এ প্রকারের দম থেকে দমদাতাসহ অন্য যে কোনো ব্যক্তিই খেতে পারবে। দুই. দমে জিনায়াত ও ইহসার। অথাৎ হজ্জে কোনো ওয়াজিব তরক হওয়ার দরুন যেই দম আবশ্যক হয়। এমনিভাবে ইহরাম বাঁধার পর হজ্জে যেতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় যে দম আবশ্যক হয়, এ প্রকারের দম থেকে দমদাতা নিজে ভক্ষণ করতে পারবে না। এমনিভাবে কোনো ধনী মানুষও তা থেকে ভক্ষণ করবে না। এটি গরীব মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দিতে হবে। (ফাতহুল কাদীর- ৩/১৬১, ৩/১৬২, রদ্দুল মুহতার- ২/৬১৬, আল বাহরুর রায়েক- ৩/৭৮)।

(৯০২২) মাওলানা আব্দুস সাত্তার, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা:
আরাফার ময়দানে খুতবা দানকারী খতীব সাহেব বলেন যে, হজ্জ এখানেই শেষ, মদীনায় যাওয়া না যাওয়া আপনাদের ব্যাপার। আমার জানার বিষয় হলো, খতীব সাহেবের উপর্যুক্ত কথা সঠিক কি না? আমরা যারা হজ্জ করতে মক্কায় যাই, তারা মদীনাতেও যাই। আমরা মদীনাতে না গিয়ে সরাসরি দেশে ফিরে আসতে পারবো কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

সমাধান: হজ্জের ফরয এবং ওয়াজিব আমলগুলো মক্কার মাঝেই সীমিত। মক্কায় গিয়ে ফরয ও ওয়াজিব আমলগুলো পূর্ণ করলে হজ্জ সহীহ হবে। এদিক থেকে প্রশ্নোক্ত খতীব সাহেবের কথা ঠিক আছে। তবে, মদীনায় গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মুবারক যিয়ারত করা এবং মসজিদে নববীতে নামায পড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। তাই এটিকে নিতান্তই ঐচ্ছিক কাজ আখ্যা দেওয়া ঠিক নয়; বরং উৎসাহিত করা উচিত।

মদীনায় না গিয়ে সরাসরি মক্বায় গিয়ে হজ্জ করে দেশে ফিরলে হজ্জ হয়ে যাবে। তবে নৈতিক দিক থেকে অনুচিত কাজ বলে বিবেচিত হবে। এছাড়া মসজিদে নববীতে নামায ও রওজা মুবারক যিয়ারতের ফযীলত থেকে মাহরূমও হবেন। (মুসনাদে তায়ালীসী, হাদীস- ৬৫, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস- ২৬৯৩, ২৬৯৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া- ১/২১৯, ১/২৪০)।

(৯০২৩) আবু সাঈদ, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা:
আমরা জানি যে, হজ্জের ইহরাম অবস্থায় প্রয়োজনে সেলাইযুক্ত চাদর ও লুঙ্গি পরা যেতে পারে। কিন্তু কেউ কেউ বলে থাকেন, ইহরামের ভেতর কোনো ধরনের সেলাইযুক্ত কাপড় পরা যাবে না। এমতাবস্থায় সহীহ মাসআলা কী- জানতে চাই।

সমাধান: ইহরাম অবস্থায় মুহরিম পুরুষ সেলাইযুক্ত কাপড় পরিধান করবে না; এটাই নিয়ম। তবে প্রয়োজনে সীমিত সময়ের জন্য পরতে পারবেন। এতে তাকে কাফ্ফারা আদায় করতে হবে। যদি প্রয়োজনের কারণে অর্ধদিন বা ততোধিক পরিমাণ সময় পরিধান করেন; তাহলে তাকে ১টি দম অথবা ৩টি রোযা অথবা ৬ জন মিসকীনের প্রত্যেককে আধা সা’ তথা ১ কেজি ৬৫৭ গ্রাম গম বা সমমূল্য পরিমাণ টাকা দিতে হবে। আর যদি অর্ধদিন থেকে কম সময় পরিমাণ পরিধান করেন; তাহলে ৩টি রোযা বা ৬ জন মিসকীনকে উল্লিখিত পরিমাণের খাবার বা টাকা দিতে হবে। (সূরা বাকারা, আয়াত- ১৯৬, বাদায়েউস সানায়ে- ২/১৮৭)।

(৯০২৪) মাওলানা ইউনুস, কক্সবাজার।
জিজ্ঞাসা:
ফাতেমা খাতুনের ৬৫ বছর বয়সে তার স্বামী মারা যায়। এমতাবস্থায় ইদ্দতের ভেতরে কোন মাহরাম ছাড়া তিনি বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব হজ্জ করতে যেতে পারবেন কি না? বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের আকাশ পথ অতিক্রম করার সময়টুকু মাহরাম ছাড়া সফর করতে পারবেন কি না?

সমাধান: স্বামী-মৃত্যুর ইদ্দত চলাকালীন সময়ে নারীদের জন্য কোথাও যাওয়ার অনুমতি নেই। নিজ গৃহেই অবস্থান করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنْفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا] البقرة: ২৩৪[

‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুবরণ করে, তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশদিন প্রতীক্ষায় থাকবে’। (সূরা বাকারা, আয়াত- ২৩৪)।

অন্যত্র উল্লেখ হয়েছে-
لَا تُخْرِجُوهُنَّ مِنْ بُيُوتِهِنَّ وَلَا يَخْرُجْنَ إِلَّا أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ ]الطلاق: ১[

‘তোমরা তাদেরকে তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা কোনো সুস্পষ্ট অশ্লীল কাজে লিপ্ত না হয়’। (সূরা তালাক, ১ আয়াত)।

তাই প্রশ্নোক্ত মহিলা ইদ্দতরত অবস্থায় হজ্জেই যেতে পারবেন না, চাই সাথে মাহরাম থাকুক বা না থাকুক। অধিকন্তু মাহরাম ছাড়া মহিলাদের একাকী সফর করা জায়েয নেই। (সূরা তালাক, আয়াত- ১, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং- ১৯১৮৪, বাদায়েউস সানায়ে- ২/১২৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া- ১/২১৯)।

(৯০২৫) বদরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ।
জিজ্ঞাসা:
জনৈক ব্যক্তি লন্ডনে থাকেন। তিনি ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় রওয়ানা দেন এবং ইহরাম বাঁধা ব্যতীতই জেদ্দা শহরে পৌঁছান। জেদ্দায় একদিন অবস্থান করার পর তিনি ইহরাম বেঁধে মক্কা শরীফ পৌঁছে উমরা পালন করেন। অতঃপর মাথা হলক করার পর ইহরাম খুলে নেন। এমতাবস্থায় তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। এখন আমার জানার বিষয় হলো, ইহরাম ব্যতীত জেদ্দায় পৌঁছার কারণে তার উপর কি দম ওয়াজিব হবে? ওয়াজিব হলে এখন কীভাবে আদায় করবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

সমাধান: দূরবর্তী ব্যক্তিদের জন্য হজ্জ ও ওমরার সফরে মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা ওয়াজিব। প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি ইহরাম ব্যতীত জেদ্দায় পৌঁছার দরুন সেই ওয়াজিব তরক করেছেন। ফলে তার উপর হারাম শরীফের চৌহদ্দির ভেতরে একটি দম কুরবানী করা ওয়াজিব হয়েছে। তাই সে যে কোনোভাবে হারাম শরীফে দম কুরবানী করার ব্যবস্থা করবে। (আল মুহিতুল বুরহানী- ২/৪৩৫, ফাতাওয়া কাযী খান- ১/১৭৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া- ১/২৫৩)।

বিবাহ, তালাক ও যৌতুক

(৯০২৬) আতাউর রহমান, সিলেট।
জিজ্ঞাসা:
চট্টগ্রামের অধিকাংশ জায়গায় প্রথা আছে যে, বিবাহের পর মেয়ে পক্ষকে বরের জন্য যৌতুক দিতে হয়। তিরস্কারের ভয়ে কিংবা বাধ্য হয়ে অনেকেই যৌতুক দিয়ে থাকে। এটা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কি না?

উল্লেখ্য যে, সীরাতুন্নবী (সা.) নামক গ্রন্থে আছে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যা ফাতেমা (রাযি.)কে চামড়ার তোষক ও পানির মশক দিয়েছিলেন। (সীরাতুন্নবী- ২/৬৪৪)। অনুরূপ ঘটনা আল ইসাবা ফী তাময়ীযিস সাহাবা গ্রন্থের ৮/৫৮ পৃষ্ঠায়ও বর্ণিত আছে। যথা-

قال ابن سعد: أخبرنا عفان حدثنا حماد بن سلمة عن عطاء بن السائب عن أبيه عن علي أن رسول الله صلى الله عليه و سلم لما زوجه فاطمة بعث معها بخميلة ووسادة أدم حشوها ليف ورحاءين وسقاءين

অতএব, আপনাদের সমীপে আরয এই যে, উপরোক্ত ঘটনার সঠিক ব্যাখ্যা ও সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।

সমাধান: যে কোনো ব্যক্তির জন্য অপরের সম্পদ গ্রহণ ও ভোগ করা তখনই বৈধ হবে, যখন সে স্বেচ্ছায় সন্তুষ্টচিত্তে তা প্রদান করবে। জোর-জবরদস্তিপূর্বক প্রদত্ত সম্পদ গ্রহণ ও ভোগ করা জায়েয নয়। হযরত আনাস (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন-
لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسِهِ

‘কোনো মুসলমানের সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কারও জন্য গ্রহণ বৈধ হবে না’ (সুনানে দারাকুতনী, হাদীস- ২৮৮৫)।

বর্তমানে কনে পক্ষ থেকে বরকে বা বর পক্ষকে বিভিন্ন উপঢৌকন দেয়া সামাজিক প্রথায় পরিণত হয়েছে এবং অনেকে সামাজিক চাপে পড়েই এসব দিয়ে থাকেন। না দিলে কনেকে অত্যাচার ও বিড়ম্বানায় পড়তে হয়। এ সবই দাতার সন্তুষ্টির অনপুস্থিতির লক্ষণ। তাই বর পক্ষের জন্য এভাবে কোনো উপঢৌকন গ্রহণ করা জায়েয নয়। অবশ্য যদি সামাজিক কোনো চাপ না থাকে এবং সন্তুষ্টচিত্তে দেয়া হচ্ছে এর পূর্ণ আলামত থাকে, তাহলে এ ধরনের প্রদত্ত সম্পদ গ্রহণ করতে কোনো বাধা নেই। প্রশ্নে উদ্ধৃত বর্ণনাগুলো এ প্রকারে শামিল। এছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী (রাযি.) এর অভিভাবক ছিলেন। অভিভাবক হিসেবে ঘরের প্রয়োজনীয় কিছু আসবাবপ্রত্র দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে বর্তমানে সামাজিক চাপে পড়ে কনে পক্ষ থেকে প্রদত্ত ব্যয়বহুল আসবাবপ্রত্র গ্রহণ করা বা আদায় করা বৈধ বলা যাবে না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস-৮৫৩, সুনানে নাসায়ী, হাদীস- ৩৩৮৪, রদ্দুল মুহতার- ৩/১৫৬)।

(৯০২৭) মাওলানা মাকবুল হোসাইন, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।
জিজ্ঞাসা:
আমরা জানি, দুধভাই ও দুধবোনের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন হারাম। প্রশ্ন হলো, যে দুধ পান করেছে তার অন্যান্য ভাই-বোনের সাথে দুধ-মায়ের সন্তানদের সাথে বিবাহ সহীহ হবে কি?

সমাধান: দুধ সন্তানের সাথে দুধ মাতার আপন সন্তানদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক জায়েয নেই। তবে দুগ্ধপায়ী সন্তানের অন্যান্য ভাইবোনের সাথে দুধ মাতার আপন সন্তানদের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন জায়েয আছে। (রদ্দুল মুহতার- ৩/৩১৭, ফাতাওয়া হিন্দিয়া- ১/৩৪৩, ফাতওয়া দারুল উলূম দেওবন্দ- ৭/৪০৬)।

(৯০২৮) ইউসুফ চৌধুরী, ফেনী।
জিজ্ঞাসা:
বর্তমান সমাজে দেখা যায়, মেয়েরা কোর্টে গিয়ে স্বামীকে লিখিতভাবে ডিভোর্স দেয়। এর উপর ভিত্তি করে বিচারক যদি তাদের মাঝে বিচ্ছেদ করে দেন, তাহলে তালাক পতিত হবে কি?

সমাধান: তালাক দেয়ার অধিকার একমাত্র পুরুষেরই। স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলে তালাক পতিত হবে না। তবে স্বামী যদি কাবিননামায় শর্তের ভিত্তিতে কিংবা শর্তছাড়া লিখিতভাবে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করেন, তাহলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক দিতে পারবে। আর যদি তালাকের ক্ষমতা অর্পণ না করেন, তাহলে স্ত্রী নিজেকে তালাক দিলে বা হাকিম সাহেব কোনো শরয়ী কারণ ব্যতীত তাদের মাঝে বিচ্ছেদ করে দিলেও তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকবে। অবশ্য শরয়ী কারণ বিদ্যমান থাকলে হাকিম সাহেব কর্তৃক বিবাহ বিচ্ছেদ গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া- ১/৩৮৭, রদ্দুল মুহতার- ৩/২৭৬)।

মুয়ামালা-লেনদেন

(৯০২৯) আব্দুল্লাহ, চাঁদপুর।
জিজ্ঞাসা:
আমার আব্বা সরকারি চাকুরিজীবী। সরকারের পক্ষ থেকে বসবাসের জন্য তাকে একটি বাসা দিয়েছে। সরকার আব্বার মূল বেতন থেকে বাসা ভাড়া বাবত কিছু টাকা কেটে রাখে। এদিকে বাসার অর্ধেকে যেহেতু আমাদের সংকুলান হয়ে যায়, তাই বাকি অর্ধেক বাসা তিনি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো, উক্ত বাসা ভাড়া দেয়া শরীয়াতের দৃষ্টিতে জায়েয আছে কি না?

সমাধান: আপনার বাবাকে সরকারকর্তৃক বসবাসের জন্য দেওয়া বাসাটি মূলত ভাড়া বাসার অন্তর্ভুক্ত। আর কোনো বাসা নিজে ভাড়া নিয়ে অন্যকে পুনরায় ভাড়া দেওয়ার অবকাশ রয়েছে। তাই উপর্যুক্ত বাসার এক অংশে আপনাদের বসবাস করা এবং অন্য অংশ ভাড়া দেওয়া জায়েয হয়েছে। (আল বাহরুর রায়েক- ৭/৩০, রদ্দুল মুহতার- ৬/৪, ৬/১৫৬, কাওয়ায়েদুল ফিকহ- ৫৭)।

(৯০৩০) ওমর ফারুক, ময়মনসিংহ।
জিজ্ঞাসা:
আমি দুই লক্ষ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা রেখেছি। এই টাকার মুনাফা আমি কোন কাজে ব্যবহার করব জানালে উপকৃত হব।

সমাধান: আপনি যে দুই লক্ষ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা রেখেছেন, সেই দুই লক্ষ টাকাই শুধু আপনার। এর বেশি আপনি নিতে পারবেন না। সুদ বা ইন্টারেস্ট হিসেবে আপনার একাউন্টে জমা হওয়া টাকা ওঠানো বৈধ হবে না। সেই টাকা সুদ, যার মালিক আপনি নন। অবশ্য কোনো কারণে তুলে ফেললে তা গরিব ও মিসকিনকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দিয়ে দিতে হবে। (সূরা বাকারা, আয়াত- ২৭৫-২৭৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস- ২১৯৫৭, রদ্দুল মুহতার- ৬/১৬১, ১৬৬)।

(৯০৩১) মুহিব্বুল্লাহ মুশতাক, বি-বাড়িয়া।
জিজ্ঞাসা:
প্রচলিত সুদ ভিত্তিক একটি ব্যাংকে আমাদের কিছু টাকা জমা ছিল। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প অল্প টাকা উঠিয়ে খরচ করতাম। সবশেষে হিসেব করে দেখা গেল, আমাদের অজান্তেই আমাদের হাতে প্রায় ১৩,০০০/- টাকার মতো সুদ এসে গেছে। এরপর আমরা টাকাগুলো গরিব মিসকিনদের মধ্যে বিলিয়ে দিই। কিন্তু যাদেরকে টাকাগুলো দিয়েছি তারা জানে না এসব কিসের টাকা। এখনও আমাদের হাতে আরো কিছু টাকা রয়ে গেছে। এখন আমাদের প্রশ্ন- এভাবে টাকাগুলো দান করায় আমাদের গুনাহ হবে নাকি সাওয়াব হবে? আমাদের হাতে রয়ে যাওয়া অবশিষ্ট সুদের টাকা মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিং-এ দেয়া যাবে কি না?

সমাধান: প্রচলিত সুদি ব্যাংকে টাকা জমা রেখে সুদের টাকা উত্তোলন করা বৈধ নয়। সুদ্দাতা, গ্রহিতা, সাহায্যকারী ও বহনকারী সকলের উপরই আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভিশাপ রয়েছে। কেউ যদি ভুলবশত কিংবা অজ্ঞতাবশত সুদের অর্থ নিয়ে নেয়, তাহলে সওয়াবের নিয়ত ছাড়াই গরিবদেরকে সদকা করতে হবে। তবে সেই গরিব ব্যক্তিকে সুদ বলে জানানো আবশ্যক নয়। অতএব, সুদের যে টাকাগুলো গরিবদেরকে দিয়ে দিয়েছেন তা ঠিক আছে। অবশিষ্ট টাকাগুলো গরিব-মিসকিন বা মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিং-এ গরীব ছাত্র থাকলে সওয়াবের আশা ছাড়া সেখানে দান করতে পারবেন। (সূরা বাকারা, আয়াত- ২৭৮-২০, ফাতহুল কাদীর- ৬/১৮, আননাহরু ফায়েক- ৩/২২৮, রদ্দুল মুহতার-২/২৯২)।

কাফন-দাফন

(৯০৩২) আশরাফ আলী, সাতক্ষীরা।
জিজ্ঞাসা:
মৃত ব্যক্তির খাটিয়ার উপর আয়াতুল কুরসী লেখা কাপড় দ্বারা আবৃত করে দেয়া জায়েয আছে কি না?
সমাধান: মৃত ব্যক্তির খাটিয়ার উপর আয়াতুল কুরসী বা অন্য কোনো আয়াত লিখিত কাপড় দ্বারা আবৃত করে দেয়া মাকরূহ। (ফাতহুল কাদীর -১/১৬৯, রদ্দুল মুহতার -১/১৭৯)।

উলূমুল হাদীস

(৯০৩৩) আব্দুল কারীম, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা:
আমাদের দেশে মুহাররম মাসকে বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়। মুহাররমের দশ তারিখ তথা আশূরাকে ফযীলতপূর্ণ মনে করা হয়। অনেকেই গুরুত্বসহ এই মাসের দশ তারিখ রোযা রাখেন। এ বিষয়গুলো আমাদের মাঝে বেশ পরিচিত। তবে আমার জানার বিষয় হলো, আশূরার দিন রোযা রাখা কতটা প্রমাণিত? হাদীসে এ বিষয়ে কীরূপ নির্দশেনা রয়েছে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

সমাধান: আশূরা গুরুত্ববহ ও ফযীলতপূর্ণ একটি দিন। এদিনে রোযা রাখা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আশূরার রোযার বিধানটি মদীনায় ঘোষিত হয়েছে। বিধানটি সূচনার প্রেক্ষাপট হাদীসে এভাবে বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-

قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ فَرَأَى اليَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، فَقَالَ: مَا هَذَا؟গ্ধ ، قَالُوا: هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ، فَصَامَهُ مُوسَى، قَالَ: فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْগ্ধ ، فَصَامَهُ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ

‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করলেন। এখানে তিনি লক্ষ করলেন, ইহুদীরা আশূরার দিন রোযা রাখছে। তিনি বললেন, ‘এটা কিসের রোযা?’ তারা বলল, এটি অতি উত্তম দিন। এই দিন আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাঈলকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন। ফলে হযরত মূসা (আ.) কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এই দিন রোযা রেখেছেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমাদের চেয়ে আমি মূসা (আ.)এর অধিক নিকটবর্তী’। এরপর তিনি রোযা রাখলেন এবং সাহাবাদেরকে রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস- ২০০৪, সহীহ মুসলিম, হাদীস- ১১৩০)।

এ প্রসঙ্গে হযরত আয়েশা (রাযি.) বর্ণনা করেন-
كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الجَاهِلِيَّةِ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُهُ، فَلَمَّا قَدِمَ المَدِينَةَ صَامَهُ، وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ، فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تَرَكَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ، وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ

‘জাহেলী যুগে কুরাইশ গোত্র আশূরার দিন রোযা রাখত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এই দিন রোযা রাখতেন। যখন তিনি মদীনায় আগমন করলেন, এই দিন রোযা রেখেছেন এবং সাহাবাদেরকে রোযা রাখার আদেশ দিয়েছেন। এরপর যখন রমাযানের রোযা ফরয হলো, তিনি আশূরার রোযা ঐচ্ছিক করে দিলেন। কেউ চাইলে রাখতে পারবে এবং চাইলে ছেড়েও দিতে পারবে’। (সহীহ বুখারী, হাদীস- ২০০২)।
হযরত সালামা বিন আকওয়া (রাযি.) বর্ণনা করেন-

بَعَثَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا مِنْ أَسْلَمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ، فَأَمَرَهُ أَنْ يُؤَذِّنَ فِي النَّاسِ: مَنْ كَانَ لَمْ يَصُمْ، فَلْيَصُمْ وَمَنْ كَانَ أَكَلَ، فَلْيُتِمَّ صِيَامَهُ إِلَى اللَّيْلِ

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার দিন আসলাম গোত্রের এক লোককে প্রেরণ করলেন। তাকে লোকদের মাঝে ঘোষণা দিতে বললেন, ‘যারা রোযা রাখেনি তারা যেন রোযা রাখে। আর যারা খেয়েছে তারা যেন রাত পর্যন্ত রোযাকে পূর্ণ করে’। (সহীহ মুসলিম, হাদীস -১১৩৫)।

এ বর্ণনাগুলো থেকে স্পষ্ট যে, আশূরার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও রোযা রাখতেন। স্বীয় সাহাবীদেরকেও রোযা রাখার আদেশ দিতেন। রমাযানের রোযার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে আশূরার রোযা সবার উপর ফরয ছিলো। বিশিষ্ট ইমাম ও হাফিযুল হাদীস আবু জাফর তহাবী (রহ.) বলেন, إن عاشوراء كان فرضا قبل رمضان‘রমাযানের রোযা ফরয হওয়ার পূর্বে এই দিন রোযা রাখা ফরয ছিল’। (ফয়যুল বারী -৪/২০৮)।

ইমামুল আসর আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহ.) সূরা বাকারার ১৮৪ নং আয়াত {أَيَّامًا مَّعْدُودتٍ} এর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনগুলো হলো- আইয়ামে বীয ও আশূরার রোযা। এই রোযাসমূহ রমাযানের পূর্বে ফরয ছিল’। (ফয়যুল বারী- ৪/২৮৯)।

পরবর্তীকালে রমাযানে রোযার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার রোযাকে নফল ধার্য করেছেন। যেমনটি পূর্বে হযরত আয়েশা (রাযি.)এর হাদীসে উল্লেখ হয়েছে। আশূরার রোযা ফরয না থাকলেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গুরুত্বসহকারেই তা পালন করতেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বর্ণনা করেন-

مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَحَرَّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضَّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلا هَذَا الْيَوْمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَهَذَا الشَّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ .

আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই দিন তথা আশূরার রোযা ও এই মাস তথা রমাযানের রোযার উপর অন্য কোনো রোযাকে ফযীলত দিতে দেখিনি। (সহীহ বুখারী, হাদীস -১৮৬৭)।

এছাড়া এদিনে রোযা রাখার ফযীলত বিভিন্ন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যথা- হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন-

أَفْضَلُ الصِّيَامِ، بَعْدَ رَمَضَانَ، شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ.

‘রমাযানের পর সর্বোত্তম রোযা হলো, আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা’। (সহীহ মুসলিম, হাদীস- ১১৬৩)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশূরার রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন-
يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ
“এই রোযা বিগত বৎসরের গুনাহের কাফফারা হয়ে যায়”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস-১১৬২)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমনের প্রথম দিকে শুধু আশূরার দিন রোযা রাখতেন। পরবর্তী সময় যখন ইসলাম পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামের প্রতিটি বিধানে স্বতন্ত্রতার বিকাশ ঘটে, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিনের পরিবর্তে দুই দিন রোযা রাখার ইঙ্গিত দেন। কেননা, তখন ইহুদীরাও এই একদিন রোযা রাখতো। তাদের সাদৃশ্যতা এড়াতেই দুই দিনের কথা বলা হয়। এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন-

حِينَ صَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ.قَالَ: فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ، حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার দিনের রোযা রাখলেন এবং আমাদেরও রোযা রাখতে বললেন। তারা (সাহাবায়ে কেরাম) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইহুদি, খ্রিস্টানরাও এ দিনকে সম্মান করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমরা আগামী বছর নয় তারিখেও রোযা রাখবো’।

ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, পরবর্তী বছর আশূরার দিন আসার আগেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস- ১১৩৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস- ২৪৪৫)।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে অপর এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
صُومُوا يَوْمَ عَاشُورَاءَ، وَخَالِفُوا فِيهِ الْيَهُودَ، صُومُوا قَبْلَهُ يَوْمًا، أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا.

“তোমরা আশূরার দিন রোযা রাখো এবং এতে ইহুদিদের থেকে ভিন্নতা অবলম্বন করো। আশূরার আগে একদিন বা পরে একদিন রোযা রাখো। (মুসানাদে আহমাদ, হাদীস- ২১৫৪)।

এই হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মুহাররমের নবম ও দশম তারিখে রোযা রাখা উত্তম। নবম তারিখে রোযা রাখতে না পারলে একাদশ তারিখেও রোযা রাখা যাবে। কোনো কোনো হাদীসের ভাষ্য থেকে এমনটিই প্রতিভাত হয়।

সর্বোপরি আশূরার রোযা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এ দিনে রোযা রাখতেন। সহাবায়ে কেরামও রাখতেন। যুগে যুগে ধারাবাহিকভাবে এদিনের রোযার আমল অব্যাহত রয়েছে। তাই সামর্থবান প্রাপ্তবয়স্ক নর ও নারীর উচিত, এদিনে রোযা রাখা। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন। আমিন।

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।