দারুল উলূম হাটহাজারী’র মুহতামিম হযরত আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (রহ.) পরপারে চলে গেলেন

।। মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহিম ইসলামাবাদী ।।

দেশের সর্বপ্রাচীন ও বৃহত্তম ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম-এর মুহতামিম হযরত আল্লামা আলহাজ্জ মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব গত ৩রা জুন ২০২৩ইং শনিবার রাত ১টায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নাল্লিাহ ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন। একই দিন সন্ধ্যায় মাদরাসা ময়দানে তাঁর নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। হাটহজারী মাদরাসার নিজস্ব কবরস্থান ‘মাকবারায়ে জামেয়া’য় তাঁকে দাফন করা হয়। নামাযে জানাযার ইমামতি করেন জামেয়া ইসলামিয়া আজিজুল উলূম বাবুনগরের মুহতামিম হযরত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.) হাটহাজারী এলাকার কৃতি সন্তান। ১৯৪৭ইং সনের ১৫ই জুন তাঁর জন্ম। পিতার নাম মরহুম কাজী আবদুল আজিজ (তিনি কুতবে আলম শাহ জমির উদ্দিন রহ. এর মুরিদ ছিলেন)। তাঁর মাতার নাম আঞ্জুমান খাতুন। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র ও ভক্ত রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে মাওলানা শোয়াইব আলমপুরী হাটহাজারী মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

তিনি দশ বছর বয়সে দারুল উলূম হাটহাজারীতে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ইং সনে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পাশ করেন। হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা শেখ আহমদ সাহেব, নাজেমে তালিমাত হযরত আল্লামা কবির আহমদ সাহেব মরহুমের সহপাঠি ছিলেন।

আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.) প্রথমে হাটহাজারী উপজেলা গড়দুয়ারা মাদরাসা ও মেখল ঈসাপুর বাজারস্থ ফয়জিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯১ইং সনে হাটহজারী মাদরাসায় নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি হাদিস-তাফসীরসহ আরবি বিভাগের বিভিন্ন দরসী কিতাবের দরস দেন এবং মাদরসার বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে অবদান রাখেন। বিশেষ করে মাদরাসার জায়গা-জমি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে হযরতের অবদান অবিস্মরণীয়। এ বিষয়ে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি (রহ.) মাদরাসার বিভিন্ন কাজ তার মাধ্যমে সমাধান করাতেন।

আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মানুষকে বিশেষ বিশেষ বিষয়ে খাছ যোগ্যতা প্রদান করে থাকেন। যিনি যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সে বিষয়ের জন্য তিনি আল্লামা। ২০২০ইং সনের ২০ সেপ্টেম্বর তিনি হাটহাজারী মাদরাসার তিন সদস্য বিশিষ্ট মজলিসে ইদারী’র সদস্য নিযুক্ত হোন। মুফতি আবদুচ্ছালাম চাটগামীর ইন্তেকালের পর ৮ই সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম নিযুক্ত হন এবং ৮ই জুন ২০২২ সালে মজলিসে শূরা তাঁকে মুহতামিম নিযুক্ত করে।

নিকট অতীতে আরো কয়েকজন বিশিষ্ট আলেম- হাটহাজারী মাদরাসার উস্তায ইন্তেকাল করেছেন। প্রত্যেকেই আপন আপন বিষয়ে বিশেষ স্বীকৃতি লাভ করেছেন। যেমন, কবি ও আদীব হিসেবে হযরত আল্লামা মুহাম্মদ হারুন সাহেব (রহ.), ফিকাহ ও ফাতাওয়া বিষয়ে হযরত আল্লামা মুফতি আবদুচ্ছালাম চাটগামী ও আল্লামা মুফতি নূর আহমদ সাহেব (রহ.), মুবাল্লিগে ইসলাম হিসেবে হযরত আল্লামা মমতাজুল করীম (বাব হুযূর) আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

আবার কিছু আলেমকে আল্লাহ তাআলা হাদীস, তাফসীর, ফিকাহ-ফাতাওয়া, সাহিত্য, তাছাউফ প্রভৃতি বিষয়ে মেধা ও যোগ্যতা প্রদান করেছেন। সব বিষয়ে তারা অবদান রেখেছেন। বিশ^ব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছেন।

বিশ^বিখ্যাত ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলূম দেওবন্দে দেড়শত বছর কাল মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস-এর পদ একই সাথে রাখা হয়নি। মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস এবং ফাতাওয়ার মসনদের দায়িত্ব আলাদা রাখা হয়েছে।

দেড় শতাব্দী কাল পর বর্তমানে দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম আল্লামা মুফতি আবুল কাসেম নুমানী সাহেব একই সাথে মুহতামিম ও শায়খুল হাদীসের দায়িত্ব পালন করছেন। শত বছর অতিবাহিত হবার পর হাটহাজারী মাদরাসায় মুহতামিম ও শায়খুল হাদীস এর দায়িত্ব একই সাথে আল্লামা শাহ আহমদ শফি সাহেব (রহ.) পালন করেছেন।

আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.) আল্লামা হাবীবুল্লাহ সাহেবের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। মুহতামিম হিসেবে নিজের পূর্ণ মেধা মাদরাসার প্রশাসনিক ও উম্মাহর বড় বড় খেদমতে নিয়োজিত রেখেছিলেন।

মজলিশে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের সভাপতি এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলন সংস্থা বাংলাদেশ-এর সভাপতির দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন।

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া ও হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমীয়ার অন্যতম দায়িত্বশীল এর দায়িত্ব পালন করেছেন।

সারা বাংলাদেশে কওমী মাদরাসারগুলোর পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব বিশাল জিম্মাদারী। তিনি এ দায়িত্বও পালন করেছেন। আল্লাহ পাক তার এসব খিদমাত কবুল করুন।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার ছাত্র উম্মুল মাদারিস হাটহাজারী মাদরসায় অধ্যয়ন করতে চায়। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা এবং আসাতেযায়ে কেরামের বেতন-ভাতা আদায়ে কোটি কোটি টাকার দরকার প্রতি বছর।

হাটহাজারী মাদরাসার বর্তমান শায়খুল হাদীস, নতুন মুহতামিম, নায়েবে মুহতামিম, মুঈনে মুহতামিম, নাজেমে তালিমাত ও অন্যান্য আসাতেযায়ে কেরাম সময়ের বিশিষ্ট আলেম হিসেবে স্বীকৃত ও সমাদৃত। ইনশাআল্লাহ উম্মুল মাদারিসের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা চলমান থাকবে।

আরও পড়তে পারেন-

দারুল উলূম হাটহাজারী’র খেদমতকে আরও অগ্রসর এবং পরিচিত করা এবং বিশ^ব্যপী ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দারুল উলূম হাটহাজারী থেকে একটি আরবি, উর্দূ, ইংরেজি সাময়িক পত্র-পত্রিকা প্রকাশ করা দরকার। মাসিক করা না গেলেও ত্রৈমাসিক করা যায়। ইউরোপ ও বিশ^ব্যাপী সঠিক দ্বীন প্রচারের জন্য এর প্রয়োজন।

দারুল উলুম দেওবন্দের ন্যায় ২০ খন্ডের একটি ফাতাওয়া গ্রন্থ প্রকাশ করা দরকার। আরো দারকার খানেকাহ-এর বিকাশ। একটা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী থাকাও দরকার।

জীবন সমস্যার ইসলামী সমাধান পেশ করার নিমিত্তে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.)এরও এ ধরনের অনেক চিন্তা ছিল। তিনি কঠিন সময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সময় পেয়েছিলেন কম। তিনি হাটহাজারীতে একটি কেন্দ্রীয় কবরস্থান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন লালন করতেন। অনেকের কাছে তার এই ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছিলেন। তাঁর এবং আল্লামা শাহ আহমদ শফি সাহেবের অসমাপ্ত এসব কাজ পূর্ণ করা সময়ের দাবি।

নতুন মুহতামিম সাহেব বানীয়ে মাদরাসা হযরত মাওলানা হাবীবুল্লাহ কুরাইশী (রহ.)এর ইলমী ও রক্তের উত্তারিধকারী এবং নায়েবে মুহতামিম সাহেবও মাদরাসার প্রতিষ্ঠাকালীন পৃষ্ঠপোষক, মুহাদ্দিস, ফকীহ ও পীরে কামেল শাহ জমির উদ্দিন (রহ.)এর নাতি। মুঈনে মুহাতামিম সাহেব একজন বিখ্যাত দায়ী, মুফতি ও কর্মবীর ব্যক্তিত্ব। মাদরাসায় রয়েছেন বিশিষ্ট ও বিখ্যাত শায়খুল হাদিস ও দক্ষ মুহাদ্দিস, মুফতি ও আসাতাযায়ে কেরাম। আল্লাহর উপর ভরসা করে সামনে এগিয়ে যাওয়া দরকার। হাটহাজরী মাদরসার লক্ষ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ছাত্রদেরকে মাদরসার উন্নয়নে সংগঠিত করা প্রয়োজন। আল্লাহর দরবারে কায়মনেবাক্যে দোয়া মুনাজাত করা দরকার সকলের।

১২৯৭ হি. /১৮৮০ইং থেকে বাংলাদেশে দেওবন্দ কেন্দ্রিক ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। দেওবন্দ মাদরাসার প্রথম যুগের ছাত্র প্রথম বাংলাদেশী ফাযেল হাটহাজারী মাদরাসার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী (রহ.)এর খলীফা আল্লামা আবদুল ওয়াহেদ বঙ্গালী (রহ.)। কুতবে আলম শাহ জমির উদ্দীন (রহ.)। বানীয়ে জামেয়া ও মুহতামিম শায়খুল ইসলাম আল্লামা হাবীবুল্লাহ কুরাইশী (রহ.), হযরত মাওলানা ছুফি আজিজুর রহমান বাবুনগরী (রহ.), হযরত মাওলানা আবদুল হামিদ (রহ.) সাহেবানের ইখলাস, পরিশ্রম, দোয়া ও রুহানী তাওয়াজ্জুহ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি। আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.) এ কথা বলতেন অনেক সময়। আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা নসীব করুন। তিনি ও আকাবিরের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ ব্যক্তিত্ব। ব্যক্তিগত জীবনে আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.) হাটহাজারী মাদরসার প্রথম শায়খুল হাদীস উস্তাযুলকুল শায়খুল হাদীস আল্লামা সাঈদ আহমদ সন্দ্বিপী (রহ.)এর নাতনি জামাতা ছিলেন।

আকাবিরের মাসলাকের প্রতি মরহুম মুহতামিম সাহেবের গভীর শ্রদ্ধা ও ভক্তি-ভালোবাসা ছিল। নবী কারীম (সা.) পরিবারের সদস্যগণের প্রতি তার গভীর ভক্তি ও ভালোবাসা ছিল। একবার হাটহাজারী মাদরাসায় একজন আওলাদে রাসূলের (সা.) আগমন হয়। তাঁকে কিছু হাদিয়া প্রদান করা হয়। তাঁর আগমন উপলক্ষ্যে খানা-মেহমানদারী বড় আকারে করা হয়। তিনি হাদিয়া ও মেহমানদারীর সমস্ত খরচ নিজের পক্ষ হতে বহন করেন। এটা নবী (সা.) প্রেমের বহিঃপ্রকাশ।

আল্লামা ইয়াহইয়া সাহেব (রহ.) একজন ছাহেবে নিছবত বুযুর্গ ছিলেন। প্রথমে হযরত আল্লামা শাহ অবদুল ওয়াহাব সাহেব (সাবেক মুহতামিম হাটহাজারী মাদরাসা)এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। তার ইন্তেকালের পর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি সাহেবের কাছে রুজু করেন এবং খেলাফত লাভে ধন্য হন। মুহতামিম সাহেব (রহ.) বিনয়ের কারণে বায়আত করতে চাইতেন না।

সামাজিক, রাজনৈতিক সব ব্যাপারে তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ছিল। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তাসহ জনপ্রতিনিধি সকলের সাথে তাঁর পরিচয় ছিল। দ্বীনের প্রয়োজনে তাদের সাথে বসতেন; দাবি-দাওয়া পেশ করতেন। কারাবন্দি আলেমদের মুক্তির বিষয়েও তিনি অনেক পরিশ্রম করেছেন। বহু মাদরাসা পরিচালনার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন এবং সুচিন্তিত মতামত প্রদান করতেন। তার জীবন ও কর্মের উপর একটি স্বতন্ত্র জীবনী গ্রন্থ রচিত ও প্রকাশিত হওয়া উচিত। সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসবেন আশা করি।

এ লেখকের সাথেও মরহুমের আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। তাকে কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়। মরহুম হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (রহ.) একজন আশেকে রাসূল (সা.) ছিলেন। তিনি কয়েকবার রাসূলে করীম (সা.)কে স্বপ্নে দেখেন।

ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ মানব দরদী বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্ব হযরত (রহ.)এর জীবন থেকে শেখার অনেক কিছু আছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে তাঁর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার তৌফিক দান করুন। বর্তমান সময়ে ইসলামী ও জাতীয় নেতৃত্বের শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহ পাক নেতৃত্বের শূন্যতা ও সঙ্কট থেকে জাতিকে রক্ষা করুন।

আল্লাহ পাক আমাদেরকে আল্লাহর হুকুম ও নবী (সা.)এর সুন্নাহ মোতাবেক এবং আকাবের ও আসলাফের আদর্শ মতো জীবন পরিচালনার তৌফিক দান করুন।

লেখক: সাংবাদিক, লেখক এবং প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক- তালিমুল ইসলাম বালিকা মাদ্রাসা, শুয়াবিল, নাজিরহাট পৌরসভা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।