।। রাকিবুল হাসান ।।
মিনারা বেগম। ভোলার স্বচ্ছল কৃষক পরিবারের কর্ত্রী। বড় বসতবাড়ি, ধানি জমি, ফল-ফসল আর নানান গাছ-গাছালিতে ভরা আঙিনা। আদর্শ বাঙালি পরিবার। কিন্তু তার সাথে ইকোনোমিস্টের এক সাংবাদিকের কথা হয়েছে ঢাকার ঘিঞ্জি বস্তিতে। স্বামী, সন্তান, নাতিপুতি নিয়ে এক ঘরে গাদাগাদি করে রাত কাটান। মশার সাথে ভাগাভাগি করে। এখানেই দিন, এখানেই রাত। খাওয়া-নাওয়া সব। তার ঘরদোর সব এখন আগ্রাসী নদীগর্ভে। ভিটেমাটিও ভেসে গেছে স্রোতের টানে। মিনারা বেগম পরিবেশ বিপর্যয় বুঝেন না। বুঝেন না উষ্ণায়ন। তিনি শুধু বুঝেন এখন তিনি সর্বস্বান্ত, নিঃস্ব, বস্তিবাসী। জাতিসংঘের ভাষ্যমতে মিনারা বেগম ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’, কিন্তু তিনি জানেন না ক্লাইমেট রিফিউজি কী। পরিবেশ বিপর্যয় যে আসলেই ‘বিপর্যয়’ সেটা আমরা না বুঝলেও মিনারা বেগম এবং তার মতো প্রতিবছর ঢাকায় আশ্রয় নেওয়া চার লক্ষ ভিটেমাটিহীন মানুষ বুঝে। ভাবা যায়? শুধু বাংলাদেশেই প্রতিবছর ক্লাইমেট রিফিউজি চার লাখ!
শিল্প বিপ্লবের পর থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১.১-১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ধারণা করা হচ্ছে বর্তমান গতিতে চলতে থাকলে এই শতাব্দির শেষ নাগাদ ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। সময়টা কিন্তু খুব দূরে নয়। আমরা কিছুটা পাব, আমাদের সন্তানরা পুরোপুরি পাবে। যদি তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি বৃদ্ধি পায় তবে কী ঘটবে? বর্তমান পৃথিবীর জনসংখ্যা সাত বিলিয়নেরও বেশি। প্রতি এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এক বিলিয়ন মানুষকে স্থানান্তরিত হতে হবে। বাংলাদেশের মতো দ্বীপ-বদ্বীপ রাষ্ট্রগুলো ভুগবে সবার আগে। বাংলাদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে পাঁচ মিটার উঁচুতে অবস্থান করে। তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সমুদ্রপৃষ্ঠ তিন মিটার উপরে উঠে আসবে। যার সহজ অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাবে। নেদারল্যান্ডসের বহু অঞ্চল এখনই সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে। সেখানে কৃত্রিম ভাবে বাঁধ তৈরি করে, ভাসমান ঘরবাড়ি বানিয়ে মানুষ থাকছে। ফিজি আইল্যান্ডের তুগোরোসহ বহু দ্বীপ ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে। সেখানকার অধিবাসীরা এখন তাকিয়ে দেখে বাপ-দাদার কবরের মিনারাটা শুধু দেখা যায়; পানির উপর ভেসে আছে। এটুকু ছাড়া আর বুঝার উপায় নেই এখানে একসময় জনবসতি ছিল। ঘরদোর ছিল; ব্যস্ত এলাকা ছিল। পৃথিবীর দশ ভাগ মানুষ সমুদ্রতীরবর্তী শহর-নগরে বাস করে। তাদের অনেক পরিণতিই হবে ফিজির জলমগ্ন ডুবোচরের মতো। শুধু যে আমাদের মতো দরিদ্র দেশগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা না। প্যারিস এবং বার্লিনও বাস-অযোগ্য হয়ে যাবে। অতিরিক্ত তাপে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাবে। নিউ ইয়র্ক সিটিতে ঘনঘন আঘাত হানবে প্রলয়ংকরী ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সুনামি। মিনারা বেগম থেকে শুরু করে হোয়াইট হাউজÑ কেউ তখন রক্ষা পাবে না।
সভ্যতার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যে। চাষাবাদ, পশুপালন, সমাজগঠনের সূচনা এখানেই। ধীরে ধীরে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে মানবসভ্যতা। পৃথিবী যখন উষ্ণ হতে শুরু করেছে, সর্বপ্রথম উত্তপ্ত হয়েছে ঠিক বিষুবরেখা বরাবর অবস্থিত অঞ্চলগুলো। কিন্তু সেগুলোর বেশিরভাগই এখন বাস-অযোগ্য। দিন দিন বাড়ছে। সাহারা থেকে শুরু করে প্রায় গোটা অঞ্চলই এখন মরুভূমি। কারণ মানুষের দেহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, চাষাবাদের উপযুক্ত, পশুপালনের জন্য আদর্শ একটা তাপমাত্রা রয়েছে। তাপমাত্রা এর চেয়ে বেড়ে গেলে সেখানে চাষাবাদ করা যায় না। ভূমি শুকিয়ে বালুতে পরিণত হয়। পশুপাখি মরে যায়। মানুষের দেহের কর্মোপযোগী নির্দিষ্ট তাপমাত্রা রয়েছে। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আমাদের দেহ ঘাম নিঃসরণ করে শীতল হয়। যদি বাইরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় তবে দেহ ঘাম নিঃসরণ করতে পারবে না। দেহ শীতল হবে না। উত্তপ্ত হতে হতে একসময় মৃত্যু ঘটবে হিট স্ট্রোক থেকে।
আরও পড়তে পারেন- বাংলায় হিন্দু রেনেসাঁস: প্রগতিশীলতা ও ইসলামবিদ্বেষ
সিভিলাইজেশন টেম্পারেচার বলতে বুঝানো হয় যেখানে বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১১-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সভ্যতা বিকাশের জন্য সবচেয়ে উপযোগী তাপমাত্রা এটি। এই তাপমাত্রায় মানুষের প্রোডাক্টিভিটি সর্বোচ্চ মাত্রায় থাকে। এর কম বেশি হলে ধীরে ধীরে ক্ষয় শুরু হয়। বর্তমানে সিভিলাইজেশন টেম্পারেচার এরিয়ার ভেতরে পড়েছে- উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, আনাতোলিয়া, চীন, জাপান ও কোরিয়া। এ থেকে বুঝা যায় এই অঞ্চলেই কেন বর্তমান পৃথিবীর অধিকাংশ উন্নত রাষ্ট্রের অবস্থান। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র বিষুব অঞ্চল থেকে ধীরে ধীরে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে সরে এসেছে। বিষুব অঞ্চলের সভ্যতার সূতিকাগার এখন বিরান মরুভূমি। কিন্তু পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেলে এখনকার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলগুলোও অত্যধিক উষ্ণ হয়ে যাবে। যেমন বাংলাদেশের তাপমাত্রা প্রতিবছর বাড়ছে। এগুলো সিভিলাইজেশন টেম্পারেচার বা প্রোডাক্টিভিটি সার্কেলের বাইরে পড়ে যাবে। ফলে এসব অঞ্চলে মানুষ কাজ করতে পারবে না।
উৎপাদনশীলতা হারাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে যেসব অঞ্চল কর্মোপযোগিতা হারাবে তার মাঝে রয়েছে চীন, জাপান, মেক্সিকো ও আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল। চীন, ভারত, পাকিস্তানে ইতোমধ্যেই নতুন নতুন এলাকার মরুকরণ শুরু হয়েছে। আফ্রিকাতে আগে থেকেই আছে, এখন তীব্রতর হচ্ছে।
শাপে বর বলে একটা কথা আছে। উষ্ণায়ন এখন পৃথিবীর বহু দেশ, জাতি ও অঞ্চলের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। পাশাপাশি কিছু দেশের জন্য নিয়ে এসেছে অবারিত সুযোগ! পৃথিবীর মেরু অঞ্চলগুলো এখন বরফ ঢাকা। ফলে সেখানে সভ্যতা বিকশিত হয়নি। দক্ষিণ মেরুতে মানুষের বসবাস নেই বললেই চলে। উত্তর মেরুতে আছে। কিন্তু পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বরফ গলে যাচ্ছে। উন্মুক্ত হচ্ছে সুবিশাল ভূমি। সাথে আছে এখনো পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত, অধরা খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার।
আরও পড়তে পারেন-
আহলে কুরআন: কুরআন বলে ‘তুমি মিথ্যাবাদি’
মুমিন জীবনে নামাযের গুরুত্ব
আল্লাহর অসীম কুদরত ও মহিমা আত্মোপলব্ধির উৎকৃষ্ট উপায়
কুরআন অবমাননা: আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বনাম হিন্দুত্ববাদ
যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আলেম সমাজের প্রস্তুতি
ভবিষ্যত পৃথিবীর সভ্যতা বর্তমান দ্রাঘিমাংশ থেকে সরে উত্তরে স্থানান্তরিত হবে। কানাডা, গ্রীনল্যান্ড (বর্তমানে অনুল্লেখযোগ্য এবং প্রায় বাস-অযোগ্য), স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলো এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে রাশিয়া হবে নতুন পরিবর্তিত পৃথিবীর প্রাণকেন্দ্র। সভ্যতার রাজধানী। সাইবেরিয়ার ৫৩% এলাকা রাশিয়ার দখলে। পৃথিবীর মোট ভূমির নয় শতাংশই সাইবেরিয়া দখল করে আছে। ১৩.১ মিলিয়ন স্কয়ার কিলোমিটারের দানবীয় অঞ্চল। কিন্তু এখানে মানুষ বসবাস করে মাত্র তেত্রিশ মিলিয়ন! সোজাসুজি বললে বাংলাদেশের মতো অতীব ক্ষুদ্র ভূখ-ে যেখানে বাস করে ১৮ কোটি মানুষ, সেখানে পৃথিবীর নয় ভাগ ভূমি দখল করে রাখা সাইবেরিয়ায় বাস করে সাড়ে তিন কোটিরও কম! কিছুদিন পর হয়ত আমাদের ঢাকা শহরের জনসংখ্যাই এরচে বেশি হবে।
সাইবেরিয়ার বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে দুই ট্রিলিয়ন ডলারের কয়লা, স্বর্ণ, হিরা, লোহা, এলুমিনিয়াম, কোবাল্ট, লিড, নিকেল, প্লাটিনামসহ অসংখ্য মহামূল্যবান খনিজ। হাতের মোবাইল থেকে শুরু করে সুপারসনিক জেট কিংবা হাইপারসনিক মিসাইল, সবখানে এসব খনিজের চাহিদা হু-হু করে বাড়ছে। বর্তমানে বিশ্ববাজারের মোট এলুমিনিয়ামের সাত ভাগ রাশিয়া একাই সাপ্লাই দেয়। বলা বাহুল্য, রাশিয়ার এলুমিনিয়ামের ৯৫ শতাংশ আসে সাইবেরিয়া থেকে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসের রিজার্ভ রয়েছে রাশিয়ার কাছে। এছাড়া তেলের বাজারে দেশটির একক সাপ্লাই তেল বৈশ্বিক চাহিদার পাঁচ শতাংশ। বলতে গেলে ইউরোপ চলে রাশিয়ার তেল-গ্যাসে। বারোটি পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপ এবং এশিয়ার বাজারে রাশিয়া এসব প্রাকৃতিক সম্পদ সরবরাহ করে। রাশিয়াকে বলা হয় ইউরোপের হার্ট। অনবরত এখান থেকে গোটা ইউরোপজুড়ে রক্তের ন্যায় আধুনিক সভ্যতার প্রধান চালিকাশক্তিগুলো পাম্পিং হচ্ছে। এর সাথে যোগ হবে সাইবেরিয়ার প্রায় দশ ট্রিলিয়ন ডলারের অনাবিষ্কৃত প্রাকৃতিক সম্পদ! এক্ষেত্রে রাশিয়ার ভৌগলিক অবস্থানও তাকে এগিয়ে রাখবে। দেশটি একইসাথে ইউরোপ এবং এশিয়ার বিস্তৃত। ফলে সমান্তরালভাবে এটি দুই মহাদেশে সম্পদ রপ্তানি করতে পারবে।
সভ্যতার প্রাণ কী? খাদ্য। সভ্যতা গড়ে তোলা তো বহুদূর। মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন হচ্ছে খাদ্য। উষ্ণায়নের ফলে ২০৮০ সাল নাগাদ সাইবেরিয়ার অর্ধেক ভূমি চাষাবাদের উপযুক্ত হয়ে যাবে। কী বিপুল পরিমাণে খাদ্য উৎপাদিত হবে ভাবা যায়? কল্পনারও অতীত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, শ্রমিক আসবে কোত্থেকে? ভূমি নিয়ে বসে থাকলেই তো হবে না, জমির বুকে ঘাম ঝরানো শ্রমিকও লাগবে। মজার বিষয় হচ্ছে উষ্ণায়নের ফলে যেসব অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে (যেমন, চীন, মধ্য এশিয়া), সেগুলোর সাথে রাশিয়ার সরাসরি সংযোগ। বরং বলা ভালো এগুলো রাশিয়ারই উঠোন। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এসব অঞ্চল থেকে দলে দলে ক্লাইমেট রিফিউজি খুব সহজেই শ্বেত ভল্লুকের ‘নতুন অবমুক্ত ভূমি’তে শ্রম দিতে পারবে।
রাশিয়ার তিনটি ঐতিহাসিক দুর্বলতা আছে। যেগুলো হাজার বছর ধরে দেশটিকে ভূগাচ্ছে। তন্মধ্যে একটি হলো উষ্ণ পানির সমুদ্রবন্দরের সংকট। রাশিয়ার সমুদ্র উপকূলের দৈর্ঘ্য আমেরিকার উপকূলের দৈর্ঘ্যরে চেয়ে মাত্র ৫০ গুণ বেশি। অদ্ভুত বিষয় হলো, সুবিশাল ও সুদীর্ঘ সমুদ্র উপকূল থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার ঠাঁই হয় প্রায় ল্যান্ড-লকড দেশের তালিকায়। কারণ এর উপকূল প্রায় সারাবছর ঢাকা থাকে বরফে। জাহাজ চলাচলের অনুপযুক্ত। আমদানি-রপ্তানির অযোগ্য। এটি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দুঃখ। কিন্তু উষ্ণায়নের ফলে সেই দুঃখও এবার ঘুচতে যাচ্ছে। উপকূলের বরফ গলে যাবে। উন্মুক্ত হবে নতুন নতুন বন্দর।
বর্তমান প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলোর চেয়ে রাশিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে। আমেরিকার রাজধানীসহ বড় বড় প্রায় সবগুলো শহরই সমুদ্রের কাছাকাছি। কারণ, একসময় আমেরিকা আবাদ হয়েছিল সমুদ্রচারী ইউরোপিয়ান দস্যুদের দ্বারা। তারা এসে মূলত উপকূলীয় শহরগুলোতেই উপনিবেশ গড়েছে। ফলে সেগুলোই এখন প্রধান নগর; অর্থনীতি-রাজনীতির প্রধান কেন্দ্র। চীনেরও একই অবস্থা। বস্তুত, আজকের চীন বা প্রযুক্তিগত চীন বলতে আমরা যা বুঝি সেটা উপকূলীয় চীন। ভেতর দিককার মঙ্গোলিয়া, তিব্বত, জিনজিয়াংসহ অন্যান্য অঞ্চলগুলোর জিডিপি বতসোয়ানার জিডিপির সমান! মোট আয়তনের সিংহভাগ এসব অঞ্চল হলেও এগুলোতে বাস করে মোট জনসংখ্যার মাত্র ছয় শতাংশ! বাকিসব উপকূলীয় চীনে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়বে উপকুলীয় ভূখ-গুলো। এসবের ডেমোগ্রাফি, জিওলজি, ইকোলজি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কীরকম ভয়াবহ হবে সেটা আমরা এখনো জানি না। বিজ্ঞানীরা শুধু কিছু পরিসংখ্যানের মাধ্যমে আমাদেরকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আমেরিকা-চীনের বিপরীতে বর্তমান রাশিয়ার বড় সাতাশটা শহরের মধ্যে মাত্র তিনটা সমুদ্র উপকূলে। বাকিগুলো ভূখণ্ডের এতই গভীরে যে বাহ্যত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট সংকট থেকে সেগুলো ঢের দূরে। এখানেও প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়ে রাশিয়া। আরও বহু বিবেচনায় একুশ শতক যদিও হতে যাচ্ছে আমাদের ‘ধ্বংসে’র শতক, রাশিয়ার জন্য সম্ভবত হতে যাচ্ছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের শতক। সাইবেরিয়া, এন্টার্কটিকায় রাশিয়ার গবেষণাগার নির্মাণ, সেনাক্যাম্প স্থাপন ও অন্যান্য লজিস্টিক ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার প্রবণতা থেকে বুঝা যাচ্ছে তার দৃষ্টি আগামি শতকে। মিনারা বেগমরা হারিয়ে গেলেও ‘ভ্যাসালিয়া মিনারাস্তেভিয়া’রা প্রবল দাপটে ফিরে আসবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাকমিল, মাদরাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ
মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/