।। ডা. তানজিনা রহমান ।।
তথাকথিত প্রগতিশীল নারী সমাজের বিশ্বাস, ‘হিজাব পরা মানে ব্রেইনে গিট্টু পড়ে যাওয়া, বোরকা পরা মানেই নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে বস্তায় ঢেকে ফেলা’। তবে কি খুব ধারালো তীক্ষè বুদ্ধি সম্পন্ন এটা বোঝাতেই তারা উলঙ্গ, অর্ধউলঙ্গ থাকেন?
আমার কাছে তো উল্টো মনে হয়! স্থুল বুদ্ধির মেয়েরা নিজেকে প্রদর্শন করে অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়। যার বুদ্ধি আছে তার এসবের প্রয়োজন নাই।
তারা নিজেদের ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী বলে দাবি করেন। যদি তাই হয় তবে স্বেচ্ছায় যারা বোরকা হিজাব পরছেন, তাদের উপর নিজস্ব মতামত চাপিয়ে উনারা কী প্রমাণ করলেন? কেউ স্বেচ্ছায়, স্বাচ্ছন্দ্যে হিজাব পরছে; এটা মানতে না পারাটাও এক রকম চিন্তার বৈকল্য।
এবার এদের বাদ দিয়ে একটু অন্যদিকে নজর ফেরাই। কিছুদিন আগে পশ্চিমা দেশে বসবাসকারী এক মুসলিম নারী আমাকে বিভিন্নভাবে বোঝাবার চেষ্টা করলেন যে, কুরআনে বোরকা বা হিজাবের কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে মডেস্টির কথা! শালীনভাবে চললেই হলো। তার মতে, তিনি হজ্জ করে এসেছেন, কাজেই তিনিও কম জানেন না। এই দলও মূলত ফিতনা ছড়াচ্ছে।
একটু ভাবি, মডেস্টি আসলে কী? মডেস্টির সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম, একেক ক্লাসে একেক রকম, একেক দেশে একেক রকম!
পশ্চিমা দেশে স্কার্ট বা পা দেখানো কাপড় মডেস্ট, অথচ আমাদের দেশে তা অশালীন। আবার তারা শাড়ির মতো পেট দেখানো পোশাককে অশালীন মনে করে, যা আমাদের কাছে শালীন। এমন জাতিও আছে যারা কিছু না পরে থাকাকেই স্বাভাবিক মনে করে। মোটকথা, যা আপনার কাছে শালীন তা অন্যের কাছে অশালীন মনে হতেই পারে।
‘মডেস্টি’র এই গোলক ধাঁধায় আল্লাহ আযযা ওয়াজাল আমাদের ঘুরপাক খাওয়ার জন্য ছেড়ে দেননি। কুরআন পাঠানো হয়েছে গাইডেন্স হিসেবে কেয়ামত পর্যন্ত। আল্লাহ বলে দিয়েছেন রাসূলুল্লাহর (সা.)এর পরে আর কেউ গাইড করতে আসবে না আমাদের।
আমরা মুসলিমরা সবাই এক উম্মাহ। পৃথিবীর সকল মুসলিম পুরুষ এবং মহিলারা সতর ঢাকবে একই নিয়মে পৃথিবীর যে প্রান্তেই তার বাস হোক না কেন! যেন দেখা মাত্রই তাকে চেনা যায় যে, তিনি মুসলিম।
মুসলিম মেয়েরা কী পদ্ধতিতে মডেস্ট হবে সেটাও বলে দেয়া হয়েছে। পর্দার বিধান মুসলিম মেয়েদের জাহেল থেকে আলাদা করেছে। মডেস্টির উদাহরণ রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কন্যা, স্ত্রীদের দিয়ে বিশ্বাসী মহিলাদের জন্য দেখিয়ে গেছেন।
কয়েক বছর ধরে আরো একটি দলের উদ্ভব হয়েছে, যাদের আমার কাছে তথাকথিত প্রগতিশীলদের চাইতেও বেশি বিপদজনক বলে মনে হয় মুসলিম নারীদের জন্য। কারণ, এরা হিজাবী। মাথার হিজাবের জন্য অনেকেই এদের ফাঁদে পা দেন, না বুঝে।
তাদের বক্তব্য- “আল্লাহ মানুষকে খলীফা করে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন! ছেলেরা বাইরে কাজ করবে আর মেয়েরা করবে ঘরের ভেতরে; এটা আলাদা করে বলেননি। আমরা যেখানে থাকি সেটা ‘বাসস্থান’, ঘর না। কুরআনে ঘর বলতে পুরো দুনিয়াকে বোঝানো হয়েছে, বাসস্থানকে নয়। কাজেই মেয়েদের তাদের ‘ঘর’ মানে পুরো দুনিয়া বুঝে নিতে হবে…। মেয়েরা ঘরে আটকে থেকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে”।
এদের অনেকেই নিকাব না পরার পক্ষে নিজস্ব ফতোয়াও দিচ্ছেন। নাঊযুবিল্লাহ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযি.) থেকে বর্ণিত, ‘তোমাদের কারও স্ত্রী যদি (জামাতে নামায পড়ার জন্য মসজিদে আসতে) অনুমতি চায়, তবে তাকে যেনো বাধা না দেয়।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৮৩১ ইফা)। তবে বিভিন্ন হাদিসে পরিষ্কারভাবে এটাও বলা হয়েছে, মসজিদে যাওয়া নারীদের জন্য জরুরি নয়; বরং মসজিদ অপেক্ষা ঘরে নামায আদায় করা তাদের জন্য উত্তম।
যেমন- হযরত আবদুল্লাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘ক্ষুদ্র কক্ষে নারীদের নামায বড় কামরার নামাযের তুলনায় উত্তম। ঘরের নির্জন কোণে নামায ক্ষুদ্র কক্ষের নামাযের তুলনায় উত্তম’। (আবু দাউদ, হাদিস- ৫৭০, হাদীসটি সহীহ)। অন্য বর্ণনায় হযরত উম্মে সালামা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, ‘নারীদের ঘরে নামায পড়া ঘরের বাইরে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম’। (আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস- ৯১০১)।
এই হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা তাহলে কী দাঁড়াবে? পুরো দুনিয়াই যদি ঘর হয়, মসজিদ এবং ঘরের বাইর তাহলে কোথায়? আউটার স্পেসে? আল্লাহু আকবার।
হিজাবী ফেমিনিস্টরা মেয়েদের নানামুখী কাজের উদাহরণ দিতে যেয়ে খাদিজা (রাযি.)এর ব্যবসার উদাহরণ, আয়েশা (রাযি.)এর ঘোড়ায় চেপে যুদ্ধের উদাহরণ টানেন। আমরা উত্তেজিত হই। কিন্তু কোন প্রেক্ষাপটে তারা এটা করেছিলেন সেটার দিকে নজর দেই না। জানতেও চাই না।
রাসূলুল্লাহ (সা.)এর সময়ে মেয়েরা এমনকি নামাযে ইমামতিও করেছেন বলে উম্মু ওয়ারাকার উদাহরণ টানেন এই প্রসঙ্গে। আমরা আবারো উত্তেজিত হই। অথচ এই হাদীস কোন কোন আলেম দুর্বল বলেছেন, যারা সহীহ বলছেন তারাও এ ব্যাপারে একমত, তাঁর ঘরে সবাই নারী ছিলেন। (আবু দাউদ, হাদীস- ৫৯১)।
উলামাদের মতে উম্মু ওয়ারাকাহ এমন এক সময়ের নারী সাহাবী ছিলেন, যখন হাতেগোনা কয়েকজন ছিল যাদের পুরো কুরআন মুখস্থ ছিল, তখনও পর্যন্ত কুরআন কোথাও লেখা হয়নি। তিনি তাঁর নিজ পরিবারে নামায পড়িয়েছেন, যেখানে শুধু মহিলারাই ছিলেন। তিনি পাবলিক প্লেসে বা পুরুষদের উপস্থিতিতে ইমামতি করেননি। ইবন সা’দ বলেন, রাসূল (সা.) তাঁকে বদরের যুদ্ধে যাবার অনুমতি দেননি…। তিনি শহীদের মর্যাদা পেয়েছিলেন যুদ্ধ করার জন্য নয়, বরং তাঁর নিজের ঘরে সালাহ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের জন্য।
উল্লেখ্য যে, কোন মহিলা কোন মহিলার ইমাম হতে পারবে কিনা? এ ব্যাপারে প্রথম কথা হল, মহিলাদের জন্য জামাত জরুরী নয়। (ফাতহুল বারী- ২/২৯০)। দ্বিতীয়ত: মহিলাদের ইমামতির বৈধতা রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত নয়। তাঁর যুগে কিংবা সাহাবায়ে কেরামের যুগে কিংবা তাবিঈ-যুগে এর প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া বিভিন্ন হাদীসে পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে, মসজিদে যাওয়া নারীদের জন্য জরুরি নয়; বরং মসজিদ অপেক্ষা ঘরে নামায আদায় করা তাদের জন্য উত্তম। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৫৭০, আহমাদ, হাদীস নং- ২৭০৯০)।
ইমাম ইবনু হাযম (রহ.) বলেন, এটাই একজন মানুষের দ্বীনদারী ও আল্লাহভীতি কমতি থাকার আলামত যে, সে মাসআলার ক্ষেত্রে এমন মত খোঁজে, যা তার খাহেশ অনুযায়ী হয়।
আমরা তো দুনিয়াবী সব কিছুতে বেস্টটাই খুঁজি। তবে জান্নাতী নারীদের ভেতর বেস্টদের দিকে নজর কেন দেই না?
যারা দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত নারী, তারা কিন্তু কেউ জিহাদ/যুদ্ধ করেননি বা এই কারণেও দুনিয়াতে জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়ার মর্যাদা পাননি।
হযরত ফাতিমা (রাযি.) ছিলেন আল্লাহর রাসূলের অত্যন্ত আদরের সন্তান। তিনি বলেছিলেন, ফাতিমা আমার দেহের অংশ, সে যাতে খুশি হয় আমিও তাতে খুশি হই, সে যাতে কষ্ট পায় আমিও তাতে কষ্ট পাই। তিনি ছিলেন দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত! চার সর্বশ্রেষ্ঠ নারীদের একজন, জান্নাতে হবেন নারীদের কর্ণধার। অথচ ফাতিমা (রাযি.) একাই সব কাজ সম্পাদন করার চেষ্টা করতেন। যাতা ঘোরাতে ঘোরাতে তাঁর হাতে কড়া পড়ে গিয়েছিল। মশক ভর্তি পানি টানতে টানতে বুকে দাগ পড়ে গিয়েছিল। রাসূল (সা.)এর কাছে যখন তাঁর প্রাণপ্রিয় মেয়ে ফাতিমা ঘরের কাজের জন্য সাহায্যকারী চাইলেন, তিনি বলেছিলেন আমি তোমাকে এর চাইতে উত্তম কিছু শিখিয়ে দেই। তিনি চাইলে ১ জন না ১০ জন খাদিমা দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তিনি তাসবীহ শেখালেন.. কেন? এই উদাহরণ টানতে কেন যেন আমাদের ভাল লাগে না।
উম্মুল মু’মিনীন খাদিজা (রাযি.) ছিলেন অসম্ভব বুদ্ধিমতি। তাঁর বাবা ছিলেন কুরাইশ বংশের একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি তাঁর বাবার ব্যবসায়ী দক্ষতা পুরোটাই পেয়েছিলেন। সেসময়ে পুরুষ শাসিত সমাজে একজন মেয়ের পক্ষে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া যথেষ্টই কঠিন ছিল। বাবা মারা যাবার পর ব্যবসার ভার কাঁধে নেন এবং লোক লাগিয়ে সফলভাবে সেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। কিন্তু সে সবই তাঁর রাসূল (সা.)এর সাথে বিয়ের আগে, ইসলামে আসার আগের কথা। আল্লাহর রাসূল (সা.)এর সাথে বিয়ের পর উভয়ের সম্মতিতে তাঁরা ব্যবসা ছেড়ে দেন এবং সব দান করে দেন। এখনকার সময়ে হলে হয়ত আমরা বলতাম, “এতো ভাল ব্যবসা জানে, ছেড়ে দিয়ে কত বড় ভুলই না করল! এতো মেধা ভাল উদ্যোক্তা হতে পারত! কত লোকের কর্মসংস্থান হতো! আর বেশি বেশি সাদাকা করতে পারত! ইসলামের তো উপকারই হতো”।
আরও পড়তে পারেন-
আহলে কুরআন: কুরআন বলে ‘তুমি মিথ্যাবাদি’
মুমিন জীবনে নামাযের গুরুত্ব
আল্লাহর অসীম কুদরত ও মহিমা আত্মোপলব্ধির উৎকৃষ্ট উপায়
কুরআন অবমাননা: আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বনাম হিন্দুত্ববাদ
যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আলেম সমাজের প্রস্তুতি
অভিজাত পরিবারে বিলাসিতায় বড় হওয়া খাদিজা (রাযি.) অত্যন্ত কষ্টের জীবন বেছে নেন। সংসার জীবনের আর্থিক কষ্ট তিনি খুবই ধৈর্য এবং সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করেন। তাঁর পারিবারিক আভিজাত্য নয়, ব্যবসায়ী দক্ষতা এবং সফলতা নয়, তাঁর চরিত্রের মাহাত্ম্য, ধৈর্য এবং আচরণ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ও তাঁর রাসূলকে সন্তুষ্ট করতেই নিবেদন করেন।
উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাযি.) ছিলেন সবচেয়ে জ্ঞানী এবং ইলমে পারদর্শী নারী। শরিয়ার ১/৪ জ্ঞান তাঁর কাছ থেকেই এসেছে। রাসূলের সান্নিধ্যে থাকার কারণে তাঁর তাফসীর জ্ঞান তখনকার ইমামদেরও ধারণার ঊর্ধ্বে ছিল। আয়েশা (রাযি.)এর শান্তির ‘ঘরই’ ছিল হাদীসের প্রথম দারস কেন্দ্র। তার জ্ঞান ছিল সরাসরি কুরআন এবং সুন্নাহ নির্ভর! দুই হাজারেরও বেশি হাদীস তিনি বর্ণনা করে গেছেন। যদি রাসূল (সা.)এর সাথে বিভিন্ন মাহফিলে উপস্থিত থাকতেন তাহলে আরো বেশি হাদীস হয়তো পাওয়া যেত। তিনি বেশির ভাগ সময় ঘরেই কাটাতেন। পর্দার ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত সচেতন ছিলেন, এমনকি অন্ধ ব্যক্তির সামনেও পর্দা ছাড়া যাননি। একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে, উসমান (রাযি.) হত্যার বিচার চেয়ে যুদ্ধে নেমেছিলেন, যেটা ইতিহাসে উটের যুদ্ধ নামে পরিচিত।
জ্ঞানের দিক থেকে আয়িশা (রাযি.) তখনকার সব নারীদের চেয়ে তো বটেই বরং অনেক সাহাবাদের থেকেও এগিয়ে ছিলেন। আবার দুনিয়াতে জান্নাতের সংবাদ পাওয়া, জান্নাতি নারীদের ভেতর শ্রেষ্ঠত্বে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাদের সকলের জীবনই ছিল আল্লাহমুখী, আখিরাতমুখী।
আমরা দ্বীনের শিক্ষা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি না নিজেদের ইগোর কারণে। শব্দগুলো মুখের ভেতরেই নড়াচড়া করে, কিন্তু অন্তর পর্যন্ত পৌঁছে না!
কেউ কেউ বাইরে কাজ করাটাকেই জীবনের স্বার্থকতা বলে মনে করতেই পারে, কিন্তু ঢালাওভাবে সবার জন্য সেটা প্রযোজ্য নয়! এটা বুঝতে হবে। একের জন্য হয়ত কাজটি ফরযে কিফায়া, আরেকজনের জন্য নয়। এখানে পরিবেশ ও অবস্থানগত হালাল হারামের প্রশ্নও আছে। আমার প্রধান দায়িত্বটি আমি অবহেলা করছি কি না; এটিও বিবেচনায় রাখতে হবে!
বাইরে কাজ না করেও কারো জ্ঞানের পরিধি, হিকমা অনেক বেশি থাকতে পারে। শয়তান আমাদের চোখে ঘরের কাজকে ছোট করে দেখাতে চেষ্টা করে; এটা তার মিশনেরই একটা অংশ। কারণ, এই কাজের ভেতরে আল্লাহ বারাকাহ রেখেছেন। আবার ইলম শিক্ষা প্রত্যেকের জন্য ফরয। আমরা বাইরে কাজ করলাম কি করলাম না- সেটার চাইতে এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের ভেতর ইলম চর্চা আছে কি না, আমরা আখিরাতমুখী কি না। বাইরে কাজ করা না করা নিতান্তই একটা দুনিয়াবি বিষয় আমার কাছে।
তর্কে অনেকেই পটু, আমার স্বল্প জ্ঞান, বিচার বিবেচনা দিয়ে তাদের জ্ঞানের গভীরতা মাপা আমার আয়ত্তের বাইরে। তবে শয়তান কিন্তু জ্ঞানীদের জ্ঞানের মাধ্যমেই ধোঁকা দেয়। দিন শেষে গন্তব্য জান্নাত নাকি জাহান্নাম সেটাই আসল।
বুখারীর একটি হাদীস মনে পড়ছে, “উম্মে সালামা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীত অবস্থায় ঘুম থেকে জেগে ওঠে বলতে লাগলেন, সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ তাআলা কতই না খাযানা নাযিল করেছেন আর কতই না ফিতনা অবতীর্ণ হয়েছে। কে আছে যে হুজরাবাসিনীদেরকে জাগিয়ে দেবে যেন তারা নামায আদায় করে। এ বলে তিনি তার স্ত্রীগণকে উদ্দেশ্য করেছিলেন। তিনি আরও ইরশাদ করলেন, দুনিয়ার মধ্যে বহু বস্ত্র পরিহিতা পরকালে বিবস্ত্রা থাকবে”। (সহীহ বুখারী, ইলামিক ফাউন্ডেশন, হাদীস নং- ১১৫)।
এই চরম ফিতনার যুগে যে সকল বোনেরা আত্মবিশ্বাসের সাথে রাব্বাতুল-বাইত বা ‘ঘরের রানি’ হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন, স্রোতের বিপরীতে চলার এই ঈমানী শক্তিতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরো বারাকাহ দিন। আমীন।
লেখক: কন্সালট্যান্ট, সনোলজিস্ট। ইমেইল- dr.tanzina@live.com
#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ
মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/