প্রচলিত মিলাদ সম্পর্কে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মতামতঃ একটি পর্যালোচনা

।। মাওলানা মুহাম্মাদ নোমান আল-আযহারী ।।

মিলাদুন্নবী সম্পর্কে ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মতামত কী- এ প্রসঙ্গে সৌদি আরবের প্রসিদ্ধ আলেম, আমাদের উস্তাদ, শায়খ শরীফ হাতিম আল-আওনী (হাফি.)এর একটি লেখা দৃষ্টিগোচর হয়েছে। লেখাটির মূল বক্তব্য এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে যে, ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মতো এতো বড় মুজতাহিদ আলেমও মিলাদুন্নাবী উদযাপন করাকে জায়েয মনে করতেন এবং এর দ্বারা উদযাপনকারী ব্যক্তির সওয়াব হাসিল হবে মর্মে ফাতওয়া দিয়েছিলেন।

উপর্যুক্ত লেখাটির কারণে কিংবা অন্য কারও বক্তব্যের কারণে হোক, মিলাদুন্নবীকে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) জায়েয মনে করতেন- এই ধারণাটি আমাদের তরুণ সমাজের চিন্তা-জগতকে ব্যাপকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গত বছর এ নিয়ে চরম বিতর্ক হয়েছে। এখনও সেই বিতর্কের রেশ কাটেনি। বিদআত এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর চিরাচরিত কঠোর অবস্থানের কথা সর্বজন বিধিত। তাই মিলাদ প্রসঙ্গে ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর এরকম বক্তব্য যখন প্রচার করা হচ্ছে, তখন সেটা মানুষকে চরমভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলবে- এটাই স্বাভাবিক। এদেশের যারা এই বিভ্রান্তির শিকার হয়েছেন তাদের সমস্যা হচ্ছে, তারা ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মূল কিতাবাদি পড়ে তাঁর মতামত না জেনে একজন শায়খের উদ্ধৃতির উপর ভরসা করেছেন। অথবা কেউ ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর খণ্ডিত বক্তব্য পড়েছেন।

শায়খ হাতিম আল-আওনীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে হয় যে, তিনি ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মিলাদ সংক্রান্ত উদ্ধৃতির ক্ষেত্রে ইবনে তাইমিয়ার পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য উল্লেখ করেননি। এ বিষয়ে ইবনে তাইমিয়ার মূল ফাতওয়া কী সেটাও উল্লেখ করেননি। যে অংশটি উল্লেখ করেছেন সেটাকেও এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, এর কারণে পাঠকের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তিনি যে অর্থে ইবনে তাইমিয়ার কথাটির উদ্ধৃতি দিয়েছেন সে অর্থে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) কথাটি বলেছেন- এমনটাও প্রমাণিত হয় না। সামনের আলোচনায় বিষয়টিকে আরও বিশদভাবে খতিয়ে দেখার প্রয়াস পাবো।

মিলাদুন্নবী সম্পর্কে ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মূল ফাতওয়া কি?

প্রচলিত মিলাদ সম্পর্কে ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর ফতোয়া হচ্ছে- এটি সম্পূর্ণ বিদআত। তাঁকে জন্মদিনের রাত উদ্যাপন সম্পর্কে মাসআলা জিজ্ঞাসা করে হলে তিনি বলেছিলেন-

وَأَمَّا اتِّخَاذُ مَوْسِمٍ غَيْرِ الْمَوَاسِمِ الشَّرْعِيَّةِ كَبَعْضِ لَيَالِي شَهْرِ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ الَّتِي يُقَالُ: إنَّهَا لَيْلَةُ الْمَوْلِدِ أَوْ بَعْضِ لَيَالِيِ رَجَبٍ أَوْ ثَامِنَ عَشَرَ ذِي الْحِجَّةِ أَوْ أَوَّلِ جُمْعَةٍ مِنْ رَجَبٍ أَوْ ثَامِنِ شَوَّالٍ الَّذِي يُسَمِّيهِ الْجُهَّالُ عِيدَ الْأَبْرَارِ فَإِنَّهَا مِنْ الْبِدَعِ الَّتِي لَمْ يَسْتَحِبَّهَا السَّلَفُ وَلَمْ يَفْعَلُوهَا وَاَللَّهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى أَعْلَمُ.

অর্থাৎ- “শরীয়তের বৈধ দিবস ছাড়া অন্যকোন দিবস যেমন, রবিউল আওয়ালের যে রাতকে ‘লাইলাতুল মাওলিদ’ বলা হয়, এভাবে রজব মাসের নির্দিষ্ট কোন রাত, জিলহজ্জ মাসের ১৮ তারিখের রাত, রজব মাসের প্রথম জুমার দিন এবং শাওয়াল মাসের দিন যেটাকে অজ্ঞ লোকেরা ‘ঈদুল আবরার’ বলে- এগুলো সবই এমন সব বিদআত কর্মকাণ্ড, যেগুলোকে আমাদের সালাফগণ পছন্দ করেননি এবং পালনও করেননি। আল্লাহ সর্বজ্ঞানী”। (মাজমুউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া- ২৫/২৯৮)।

শায়খ শরীফ হাতিম ইবনে তাইমিয়ার কিতাব ‘ইকতিদাউস সীরাতিল মুস্তাকীম’-এর যে জায়গাটার উদ্ধৃতি দিয়েছেন তার ৩ পৃষ্ঠা পূর্বে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) লিখেছেন-

فإن هذا لم يفعله السلف، مع قيام المقتضي له وعدم المانع منه لو كان خيرًا. ولو كان هذا خيرًا محضا، أو راجحًا لكان السلف رضي الله عنهم أحق به منا، فإنهم كانوا أشد محبة لرسول الله صلى الله عليه وسلم وتعظيمًا له منا، وهم على الخير أحرص.

অর্থাৎ- “এই কাজটি (মিলাদ উদযাপন) সালাফ আলেমদের কেউই করেননি, এই কাজের প্রতি (مقتضي) বা উৎসাহব্যাঞ্জক কারণ থাকা সত্ত্বেও এবং এর বিরুদ্ধে কোন (مانع) বা বাধা না থাকা সত্ত্বেও। যদি এই কাজটি কল্যাণকর হতো অথবা করাটা উচিত হতো, তাহলে পূর্ববর্তী আলেমগণ এর বেশি হকদার ছিলেন। কারণ, তারা আমাদের চেয়েও বেশি নবীপ্রেমী ছিলেন। রাসূলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও তারা অগ্রগামী ছিলেন এবং উত্তম কাজের ব্যাপারে তারা অধিক সচেতন ছিলেন”।  (ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকীম, ইবনে তাইমিয়া- ২/১২৩)।

এর দ্বারা স্পষ্ট হয় যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মিলাদ সংক্রান্ত যাবতীয় অনুষ্ঠানকে স্পষ্ট বিদআত মনে করতেন এবং এর থেকে মুসলমানদেরকে সতর্ক করেছেন।

এছাড়াও ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) যাবতীয় নবআবিষ্কৃত ঈদ, দিবস এবং ইসলাম সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাধারণ ফাতওয়া প্রদান করতে গিয়ে লিখেছেন-

سائر الأعياد والمواسم المبتدعة من المنكرات المكروهات سواء بلغت الكراهة التحريم أو لم تبلغه.

অর্থাৎ- “যাবতীয় নবআবিষ্কৃত ঈদ এবং দিবস (ইসলাম সংক্রান্ত অনুষ্ঠান) নিন্দনীয়, পরিত্যাজ্য এবং মাকরূহের অন্তর্ভুক্ত। মাকরূহের স্তরটা হারামের পর্যায়ে পৌঁছুক বা না পৌঁছুক”। (প্রাগুক্ত- ২/৮২)।

তিনি অন্যত্র লিখেছেন-

ما أحدث من المواسم والأعياد فهو منكر وإن لم يكن فيه مشابهة لأهل الكتاب.

অর্থাৎ- নবআবিষ্কৃত ঈদ এবং দিবসসমূহ মুনকার (পরিত্যাজ্য), যদিও সেগুলো আহলে কিতাবের অনুষ্ঠানের সাথে সাদৃশ্য না হয়। (প্রাগুক্ত- ২/৮২)।

পূর্বে উল্লিখিত ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর মিলাদ সংক্রান্ত ফাতাওয়াগুলোর সাথে পরের দুটি সাধারণ ফাতাওয়াকে মিলিয়ে দেখলে এ বিষয়টি আরও পষ্ট হয় যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর সঠিক অবস্থান হচ্ছে, তিনি মিলাদুন্নবীর যাবতীয় ধরন ও পদ্ধতিকে বিদআত মনে করতেন।

শায়খ শরীফ হাতিম আল-আওনীর দাবি

এবার শায়খ হাতিম আল-আওনী ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর যে কথাটার উদ্ধৃতি দিয়েছেন সেটা দেখা যাক। তিনি বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে মিলাদকে জায়েয প্রমাণ করতে গিয়ে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) সম্পর্কে লিখেছেন-

بل هذا شيخ الإسلام ابن تيمية في كتابه (اقتضاء الصراط المستقيم)، مع حكمه على المولد بأنه بدعة؛ إلا أنه عذر مقيميه، بل اعتقد حصول الأجر العظيم لهم فيه، فقال (رحمه الله): (فتعظيم المولد، واتخاذه موسما، قد يفعله بعض الناس، ويكون له فيه أجر عظيم؛ لحسن قصده، وتعظيمه لرسول الله صلى الله عليه وسلم. كما قدمته لك: أنه قد يحسن من بعض الناس، ما يستقبح من المؤمن المسد (

অর্থাৎ- “… বরং শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া স্বীয় কিতাব ‘ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকীমে’ মিলাদকে বিদআত বলা সত্ত্বেও মিলাদ পালনকারীদেরকে মাযুর সাব্যস্ত করেছেন (অর্থাৎ- তাদেরকে মন্দ ভাবেননি)। শুধু তাই নয়; মিলাদ পালন করার কারণে তাদের অনেক বড় সওয়াব হাসিল হবে বলেও মনে করেছেন। তিনি (ইবনে তাইমিয়া) বলেছেন- “মিলাদকে সম্মান করা এবং এটাকে নির্দিষ্ট দিবস বানানো- এই কাজটা অনেকে করে থাকে। তার নেক নিয়্যাত এবং রাসূলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কারণে এই কাজের জন্য সে সওয়াবও পাবে। যেমনটা আমি পূর্বেও বলে এসেছি যে, সাধারণ মুসলমানের এমন কিছু কিছু কাজকে মেনে নেয়া হয়, যেগুলো পোক্ত মুমিনের ক্ষেত্রে নিন্দনীয় হিসেবে ধরা হয়”। (ইসলাম অনলাইন সাইটে ২৩/১/২০১৩ তারিখে প্রকাশিত শায়খ শরীফ হাতেম আল আওনীর ফাতওয়া)।

শায়খ হাতিম আল-আওনী এখানে ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর বলা “নেক নিয়্যাত এবং রাসূলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কারণে সে সওয়াবও পাবে” – এই কথা দুটির উপর জোর দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.) সামগ্রিকভাবে মিলাদকে মন্দ ভাবতেন না। এই উদ্ধৃতিটি ছাড়া ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর আর কোন বক্তব্য তিনি উল্লেখ করেননি। মূলত, ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর এ ধরনের আরো ২টি বক্তব্য পাওয়া যায়, যেগুলোকে সরল চোখে দেখলে মনে হবে যে, ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মিলাদ পালন করাকে সওয়াবের কাজ মনে করতেন।

১ম উদ্ধৃতি: ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন-

وكذلك ما يحدثه بعض الناس، إما مضاهاة للنصارى في ميلاد عيسى عليه السلام، وإما محبة للنبي صلى الله عليه وسلم، وتعظيمًا. والله قد يثيبهم على هذه المحبة والاجتهاد، لا على البدع – من اتخاذ مولد النبي صلى الله عليه وسلم عيدًا.

অর্থাৎ – “অনুরূপভাবে, খ্রিস্টানরা যেমন হযরত ঈসা (আ.)এর জন্মানুষ্ঠান পালন করে তেমনি তাদেরকে অনুসরণ করতে গিয়ে অথবা নবীজির প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে কেউ কেউ মিলাদ সংক্রান্ত যেসব বিষয় আবিষ্কার করে, সেগুলোর ক্ষেত্রে আল্লাহ তাদেরকে সওয়াব দান করবেন, তাদের মুহাব্বাত এবং পরিশ্রমের কারণে, বিদআতের কারণে নয়”। (ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকীম- ২/১২৩)।

২য় উদ্ধৃতি: তিনি বলেছেন-

وأكثر هؤلاء الذين تجدهم حراصًا على أمثال هذه البدع، مع ما لهم من حسن القصد، والاجتهاد الذين يرجى لهم بهما المثوبة …

অর্থাৎ, “…এদের অধিকাংশ লোক, যাদেরকে এসব বিদআতের প্রতি গুরুত্বশীল হতে দেখো, যারা তাদের নেক নিয়্যাত এবং পরিশ্রমের কারণে সওয়াব পাবে বলে আশা করা যায়…” (প্রাগুক্ত- ২/১২৪)।

ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর উপরোল্লিখিত ৩টি উদ্ধৃতিতে যে বিষয়টি কমন পাওয়া যাচ্ছে সেটা হলো- তিনি মিলাদ পালনকারীদের মধ্যে দু’টি বিষয় খুঁজে পেয়েছেন- নবী-প্রেম ও পরিশ্রম এবং তাদের সওয়াব প্রাপ্তির ব্যাপারে আশা ব্যক্তি করেছেন। এর থেকে শায়খ হাতিম আল-আওনী’সহ কেউ কেউ ধরে নিয়েছেন যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মিলাদ উদযাপন করাকে মন্দ ভাবেননি। বরং শর্তসাপেক্ষে জায়েয মনে করতেন।

শায়খ হাতিম আল-আওনীর বক্তব্য যদি আমরা ধরে নিই তাহলে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর এই মতটি পূর্বে উল্লিখিত তাঁর ফতোয়ার সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে যায়! তাই শায়খ আওনীর বক্তব্যকে সরলভাবে নেয়ার কোন সুযোগ থাকছে না। মূলত: আমরা যদি এই ৩টি উদ্ধৃতিকে সেগুলোর আগের এবং পরের ইবারতের সাথে মিলিয়ে দেখি তাহলেও এই সংশয় থাকার অবকাশ থাকে না যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মীলাদের ব্যাপারে কোন রকম শীথিলতা প্রদর্শন করেছিলেন। ইমাম তাইমিয়া (রহ.)এর সবগুলো বক্তব্যকে একাডেমিকভাবে খতিয়ে দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

প্রথম উদ্ধৃতির পর্যালোচনা:

শায়খ হাতিম আল-আওনীর উল্লেখ করা উদ্ধৃতিটিকে আমি প্রথম উদ্ধৃতি হিসেবে ধরেছি। এই উদ্ধৃতির সারমর্ম হচ্ছে, নেক নিয়্যাত এবং রাসূলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কারণে মিলাদ পালনকারী ব্যক্তি তার কাজের সওয়াব পাবে। মূলত এই কথাটি ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মুসলমানদের আমলের প্রকার উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছেন। তিনি আমলকে ৩ ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- ১. সর্বদিক দিয়ে নেক এবং জায়েয আমল, যেটাতে কোন রকমের কারাহাত বা নিন্দনীয় কিছু নেই। ২. ভালো এবং খারাপের মিশ্রিত আমল। যেগুলোতে নিয়্যাত বা অন্যকোন জায়েয কর্মের কারণে ভালো দিকও যেমন আছে, অনুরূপ- অন্যভাবে দেখলে সেখানে খারাপ দিকও আছে। ৩. যেগুলো সর্বদিক দিয়ে মন্দ কাজ। ইবনে তাইমিয়া (রহ.) ২য় প্রকারের উদাহরণ দিতে গিয়ে মিলাদের কথা উল্লেখ করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি এই প্রকারের মধ্যে (صوم وصال) বা লাগাতার নফল রোযা রাখা, বৈধ যৌনকর্ম ত্যাগ করা, কোন কোন রাতকে নির্দিষ্ট করে ইবাদত করা, যেমন রজব মাসের প্রথম রাত ইত্যাদি। এর সবগুলোর মধ্যে কিছু ভালো দিক যেমন আছে তেমনি কিছু মন্দ দিকও আছে।

মিলাদের রাতে এবং রজব মাসের প্রথম রাতে নামায, দোয়া-দরুদ পড়া, স্ত্রী-সহবাস এবং নফসের খাহেশাত থেকে দূরে থাকা, রোযা রাখা- এসব হচ্ছে ভালো দিক। কিন্তু এগুলোর প্রত্যেকটিতেই মন্দ দিক আছে। মীলাদের রাত বা রজবের রাতের ইবাদতের মন্দ দিক হচ্ছে, এসব দিবসকে উদযাপন করা এবং এই উপলক্ষে বিশেষ ইবাদতের প্রচলন করা বিদআত। নবীজি, সাহাবীগণ এবং সালাফের কোন আলেমগণ এসব কস্মিনকালেও করেননি। এভাবে ‘সওমে ওয়েসাল’ বা লাগাতার নফল রোযা রাখার মধ্যে রোযা জিনিসটাতো নেক আমল, কিন্তু সেটাকে এভাবে বিরতিহীনভাবে রাখাটা মাকরূহ এবং সুন্নাত পরিপন্থী।

এ ধরনের কাজগুলোর ক্ষেত্রে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন যে, দ্বীনের ব্যাপারে সাধারণত উদাসীন থাকে এমন কোন সাধারণ মুসলমান যদি এই কাজগুলো করে ফেলে, তাহলে সে তার ‘নেক নিয়্যাতের’ কারণে সওয়াব পাবে। দেখুন তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন যে, সে ব্যক্তি তার নিয়্যাতের কারণে সওয়াব পাবে। কিন্তু তাই বলে কাজটা বৈধ হয়ে যাবে না। বরং সেটা অবৈধই থাকবে। যেমন ‘বিরতিহীনভাবে নফল রোযা রাখা’ তার জন্য বৈধ হয়ে যায়নি। বৈধ স্ত্রীর সাথে সঙ্গম ত্যাগ করা তার জন্য জায়েয হয়ে যায়নি। অনুরূপভাবে কেউ যদি বিদআতের বিষয়টি না জানার কারণে রবিউল আওয়াল মাসে মিলাদ উপলক্ষে নামায, সদকাহ ইত্যাদি কোন নেক আমল করে তাহলে সে তার নেক নিয়্যাতের কারণে সওয়াব পাবে। কারণ, সে বিদআতের হুকুমটি জানে না। কিন্তু তাই বলে মিলাদ পালনকরাটা বৈধ হয়ে যাবে না, সেটা বিদআতই থাকবে।

আরও পড়তে পারেন-

এর একটি উদাহরণও তিনি দিয়েছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হান্বল (রহ.)এর মাযহাব হচ্ছে, কুরআন শরীফকে বিভিন্ন কারুকার্যময় করে সাজানো মাকরুহ। একদিন এক লোক এসে তাঁকে বললো- অমুক আমীর তার কুরআনকে সজ্জিত করার পেছনে ১ হাজার দীনার ব্যয় করেছে। এটা শুনে ইমাম আহমাদ বললেন- “তাদেরকে ছেড়ে দাও। এটা তাদের স্বর্ণমুদ্রা ব্যয় করার জন্য ভালো জায়গা”। নতুবা তারা নর্তকিদের পেছনে গোনাহের কাজে সেগুলো ব্যায় করতো। ইমাম আহমাদের এই কথার অর্থ এই নয় যে, কুরআনকে স্বর্ণ-রূপা দিয়ে সজ্জিত করা জায়েয। বরং তিনি বিশেষ ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার বিশেষ পরিস্থিতির কারণে বলেছেন যে, তাকে ছেড়ে দাও। তাঁর নিকট কুরআনকে সজ্জিত করা মাকরূহ হওয়া’র মাসআলাটি অপরিবর্তিতই থাকবে। শায়খ হাতিম আল-আওনী ইবনে তাইমিয়ার যে ইবারতটির উদ্ধৃতি দিয়েছেন, তার পরের ৩টি পৃষ্ঠা দেখলে এই কথাগুলো পষ্ট হয়ে যায়। (প্রাগুক্ত- ২/১২৬-১২৮)।

দ্বিতীয় উদ্ধৃতির পর্যালোচনা

এই উদ্ধৃতির ক্ষেত্রেও একই কথা। এই ইবারতের পূর্বের প্যারার ৫টি লাইনের উপর দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পাই যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন-

وإنما الغرض أن اتخاذ هذا اليوم عيدًا محدث لا أصل له، فلم يكن في السلف لا من أهل البيت ولا من غيرهم-من اتخذ ذلك اليوم عيدًا، حتى يحدث فيه أعمالًا. إذ الأعياد شريعة من الشرائع، فيجب فيها الاتباع، لا الابتداع …… وإنما يفعل مثل هذا النصارى الذين يتخذون أمثال أيام حوادث عيسى عليه السلام أعيادًا، أو اليهود، وإنما العيد شريعة، فما شرعه الله اتبع.

অর্থাৎ- “এই দিনটিকে (গদীরে খামের দিন) ঈদ হিসেবে পালন করা নবআবিষ্কৃত কাজ, যার কোন শরয়ী ভিত্তি নেই। সালাফের মধ্যে এবং আহলে বাইতের মধ্যে এমন কোনও ব্যক্তি নেই যে, এই দিনটিকে বিশেষ আমলের জন্য ঈদ হিসেবে উদযাপন করেছেন। কারণ, ঈদ হচ্ছে একটি শরীয়তের বিধান। অতএব, এ ক্ষেত্রে শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ করতে হবে। কোনভাবেই ইচ্ছে মতো নতুন কিছু আবিষ্কার করা যাবে না। …… এরকম কাজগুলো মূলত ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা করে থাকে। খ্রিস্টানরা যেমন হযরত ঈসা (আ.)এর বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান পালন করে। বস্তুত ঈদ হচ্ছে শরয়ী বিধান। আল্লাহ শরীয়ত হিসেবে যেটা বৈধ করেছেন সেটা অনুকরণীয় হবে”।

এটুকু বলার পরে তিনি বলেছেন- “অনুরূপভাবে যারা খ্রিস্টানদের অনুসরণ করে অথবা নবী-প্রেমের কারণে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর নামেও এরকম কিছু করে থাকে, তাহলে সে নেক নিয়্যাতের কারণে তো সওয়াব পাবে, কিন্তু তা কোনোভাবেই তার বিদআত কর্মের কারণে নয়। তাছাড়া, মওলিদের তারিখ নিয়ে তো এমনিতেই মতভিন্নতা আছে”।

এরপর তিনি বলেছেন- “এই কাজটি পূর্ববর্তী আলেমদের মধ্যে কেউ করেননি مقتضي (চাহিদা) থাকা সত্ত্বেও এবং (مانع) না থাকা সত্ত্বেও। যদি এটা নেক কাজ হতো তাহলে সালফগণই এই কাজের বেশী হকদার ছিলেন। কারণ, তারা আমাদের চেয়েও নবীজিকে বেশি ভালোবাসতেন এবং সম্মান করতেন”। (প্রাগুক্ত- ২/১২৩)।

ইবনেই তাইমিয়া (রহ.)এর এই বক্তব্যের মধ্যে ৩টি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ-

১. তিনি মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানকে শীয়াদের অনুষ্ঠান ‘গাদীরে খাম’ এবং খ্রিস্টানদের ক্রিসমাসের সাথে তুলনা করে একই ক্যাটাগরিতে উল্লেখ করেছেন। অতএব, গদীরে খাম যদি না-জায়েয অনুষ্ঠান হয় তাহলে মিলাদুন্নবীকে ইবনে তাইমিয়া কীভাবে জায়েয মনে করবেন?

২. তিনি এগুলোকে ‘ঈদ’ (অর্থাৎ- ‘অনুষ্ঠানের দিন’) শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করছেন। বর্তমানে যেমন ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ বলা হয়। তারপর তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ঈদ ‘তাওকীফী’ বিষয়। এটা শরীয়তের একটি বিধান। শরীয়তে যে দিনগুলোকে বিশেষভাবে পালন করার বিধান রাখা হয়েছে সেগুলোকেই কেবল ‘ঈদ’ বা বিশেষ দিন হিসেবে পালন করা যাবে। খেয়ালখুশি মতো নতুন কিছু আবিষ্কার করা যাবে না।

৩. নবীজি, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবেতাবেয়ীন এবং সালফে সালেহীনের মধ্যে কেউ কাজটি করেনি- মুক্তাদী (مقتضي) থাকা সত্ত্বেও এবং মানে’ (مانع) না থাকা সত্ত্বেও। অর্থাৎ, রাসূলের জন্মকে কেন্দ্র করে কোন বিশেষ কিছু পালন করা যদি নেক কাজ হতো তাহলে অবশ্যই তার বিধান রাসূলের যুগেই নাযিল হতো। নবীজি এবং সাহাবীগণ সেটা পালন করতেন। যেমন আশূরার রোযার বিধান এসেছে। কারণ, আল্লাহ দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন। কোন হুকুম বাদ রাখেননি। এটা যদি দ্বীন হতো তাহলে তার চাহিদা বা দাবি হচ্ছে এই ব্যাপারে আল্লাহর হুকুম নাযিল হওয়া। দ্বিতীয়ত কোন (مانع) বা বাধাও ছিলো না।

এখানে ৩নং পয়েন্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বিদআতের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্তের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বিদআত বলা হয় নবী-যুগ এবং সাহাবী-যুগের পরবর্তী সময়ে এমন নতুন কিছু আবিষ্কার করা- যেটা (مقتضي) থাকা সত্ত্বেও এবং কোন রকম (مانع) না-থাকা সত্ত্বেও নবীজি এবং সাহাবায়ে কেরাম করেননি এবং কুরআন-হাদীসে যার কোন (أصل) বা ভিত্তি পাওয়া যায় না। এটা বিদআতের নিখুঁত সংজ্ঞা। এই সংজ্ঞাটিকে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) মিলাদুন্নবীর উপর প্রয়োগ করেছেন। তারপরেও কি বলা হবে যে, ইবনে তাইমিয়্যা মিলাদকে সামগ্রিকভাবে বিদআত মনে করতেন না?!

তৃতীয় উদ্ধৃতির পর্যালোচনা

ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর এই বক্তব্যটি আরো বেশি স্পষ্ট। এই ইবারতটাকেও যদি আমরা তার পূর্বের এবং পরের কিছু ইবারতসহ পাঠ করি তাহলে দেখতে পাবো যে, তিনি বলেছেন-

وإنما كمال محبته وتعظيمه في متابعته وطاعته واتباع أمره، وإحياء سنته باطنًا وظاهرًا، ونشر ما بعث به، والجهاد على ذلك بالقلب واليد واللسان. فإن هذه طريقة السابقين الأولين، من المهاجرين والأنصار، والذين اتبعوهم بإحسان. وأكثر هؤلاء الذين تجدهم حراصًا على أمثال هذه البدع، مع ما لهم من حسن القصد، والاجتهاد الذين يرجى لهم بهما المثوبة، تجدهم فاترين في أمر الرسول، عما أمروا بالنشاط فيه، وإنما هم بمنزلة من يحلي المصحف ولا يقرأ فيه، أو يقرأ فيه ولا يتبعه وبمنزلة من يزخرف المسجد، ولا يصلي فيه.

অর্থাৎ- “রাসূলের প্রকৃত ভালোবাসা হচ্ছে তার অনুসরণ-অনুকরণ করা, তার সুন্নাতকে ভেতরে বাইরে জিন্দা করা এবং এর পেছনে নিজের অন্তর, হাত এবং যবান দ্বারা সর্বাত্মক শ্রম ব্যয় করা। এটাই সকল সাহাবী এবং তাঁদের অনুসারীদের তরীকা। আর ঐ সকল লোক যাদেরকে তোমরা এ ধরণের বিদআত কর্মকান্ডের প্রতি বেশি আগ্রহী হতে দেখো – যদিও তারা নেক নিয়্যাত এবং শ্রমের বদৌলতে সওয়াব পাবে বলে আশা করা যায়; তাদেরকে তোমরা দেখবে যে, তারা নবীজি যেসকল কাজের নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলো থেকে পলায়ন করে। এরা ঐসকল মানুষের মতো, যারা কুরআনকে বিভিন্নভাবে সজ্জিত করে রাখে, কিন্তু কুরআন পড়ে না। অথবা পড়ে, কিন্তু আমল করে না। এবং তাদের মতো- যারা মসজিদে কারুকার্য করে ঠিকই, কিন্তু সেই মসজিদে গিয়ে নামায পড়ে না”। (প্রাগুক্ত- ২/১২৪)।

এই পূর্ণাঙ্গ ইবারতটি পড়ার পর কারো এরকম সংশয় জাগার কথা নয় যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.) তাঁর এই বক্তব্যের মাধ্যমে মিলাদের কোন প্রকারকে জায়েয দেখাতে চেয়েছেন। বরং তিনি এ ধরনের কর্মকান্ডকে নবী-প্রেমের নামে ভন্ডামী হিসেবে তুলে ধরেছেন। দু’টি উদাহরণ দিয়েও তিনি বিষয়টি বুঝিয়েছেন।

এতটুকু আলোচনা থেকে এটা যদিও প্রমাণিত হয় যে, ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর সঠিক মতামত হচ্ছে, মিলাদুন্নবী সামগ্রিকভাবে এবং সর্বাবস্থাতেই বিদআত, কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। সেটা হচ্ছে, ইবনে তাইমিয়ার নিকট মিলাদুন্নবী বিদআত হলে তিনি কেন এই বিদআত কর্ম পালনকারীর সওয়াব প্রাপ্তির ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন? বিদআত কাজ করে কীভাবে একজন ব্যক্তি সওয়াবের হকদার হতে পারে?

এই প্রশ্নটার সহজ সমাধান আছে।

ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর উপরিউক্ত ৩টি উদ্ধৃতির উপর হালকা নজর বুলালে যে কথাটা বুঝে আসে তা হচ্ছে, তিনি এখানে ‘মীলাদুন্নবী’ পালনকারীকে অজ্ঞ হিসেবে দেখেছেন। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি জানেই না যে, মিলাদ পালন করা বিদআত, সে যদি রবিউল আওয়াল মাসের মিলাদকে কেন্দ্র করে দরুদ, নাত, সাদাকাহ ইত্যাদি বিশেষ কোন নেক আমল করে, তাহলে সে তার নেক নিয়্যাতের কারণে এবং রাসূলের প্রতি ভালোবাসার কারণে সওয়াব পাবে। তার বিদআত কাজটাকে এই জন্য ধরা হচ্ছে না যে, সে কাজটি অজ্ঞতাবশত করেছে। অজ্ঞতাবশত কেবল বিদআত কেন, কেউ হারাম কাজ করলেও ইসলামের বিধান হচ্ছে সেটাকে ওজর হিসেবে ধরা। এ প্রসঙ্গে ইবনে তাইমিয়া (রহ.) আরো স্পষ্ট করে বলেছেন-

أن من كان له نية صالحة أثيب على نيته، وإن كان الفعل الذي فعله ليس بمشروع، إذا لم يتعمد مخالفة الشرع.

অর্থাৎ, “যার ভালো নিয়্যাত থাকবে সে তার নিয়্যাতের কারণে সওয়াব পাবে, যদিও তার কৃত কাজটি প্রকৃতভাবে নাজায়েয হয়, যদি সে ইচ্ছাকৃতভাবে শরীয়তের বিরোধীত না করে”। (প্রাগুক্ত- ২/২৫১)। অর্থাৎ যদি সে কাজটা অজ্ঞতাবশত করে।

এর দ্বারা বোঝা যায় যে, যারা মিলাদ যে বিদআত সেটা কারো কাছে শুনেছে, অথবা এই বিষয়টা জানার সুযোগ তাদের ছিলো, তারপরেও তারা ইচ্ছেকৃতভাবে বা ঘাড়ত্যাড়ামি করে মিলাদুন্নবী পালন করেছে, তারা কোন অবস্থাতেই নিয়্যাতের কারণে সওয়াবের হকদার হবে না। নিয়্যাতের কারণে সওয়াব পাওয়া সংক্রান্ত ইবনে তাইমিয়্যার কথাগুলো তার উপর প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ সওয়াব পাওয়ার বিষয়টিকে ইবনে তাইমিয়্যা (রহ.) বিশেষ একটি অবস্থার সাথে ‘খাস’ করেছেন। সেটা হচ্ছে এই বিষয়ে মিলাদ পালনকারীর (جهالة) বা অজ্ঞতা। এটাকে (العذر بالجهالة) ওজর বিল জাহালা ধরা হবে। কিন্তু সে কারণে তার উদযাপন করা মিলাদটির হুকুমের মধ্যে কোন পরিবর্তন আসবে না। সেটা বিদআতই থাকবে। এই কথাটা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বারবার স্পষ্ট করেছেন।

বস্তুত ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)এর একটি খন্ডিত বক্তব্যের উপর দৃষ্টি দেয়ার ফলে মিলাদের বিষয়ে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। একই সাথে সেটা আমাদের দেশের কিছু তালিবে ইলমের বিভ্রান্তিরও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ আমাদের সকলকে দ্বীনের সহীহ বুঝ দান করুন।

ওয়াল্লাহু ওয়ারা-আল কাসদ!

লেখক: অনার্স- ধর্মতত্ত্ব, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় মিসর, মাস্টার্স- শরীয়া ইসলামিয়া, কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় মিসর এবং সিনিয়র শিক্ষক- আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।