প্রাকৃতিক দুর্যোগঃ ইসলাম কী বলে?

।। মাওলানা মুহাম্মদ নোমান আল-আযহারী ।।

বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব এই সময়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত। গত ২৩শে জুন আফগানিস্তানে আঘাত হেনেছে ভয়াবহ ভূমিকম্প। বিবিসি’র তথ্য মতে ৬.১ মাত্রার এই শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি নিহত এবং অন্তত দেড় হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের জন্য এটি কতোটা গভীর একটি মানবিক বিপর্যয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশে পূর্ব-উত্তর জেলাগুলোতে, বিশেষতঃ সিলেট-সুনামগন্জে যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেটা স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে দীর্ঘ এক মাস ধরে। দেশের মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলোর রহস্যময় নিরবতা ছিলো অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ও অমানবিক। সরকারের পক্ষ থেকেও যেটুকু সহায়তা পাওয়া গিয়েছে সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিসংখ্যান না থাকার কারণে প্রকৃত চিত্রটা আমাদের সামনে হয়তো আসছে না। নতুবা বাস্তব চিত্র যে কল্পনার চেয়েও বেশি ও হৃদয়বিদারক তা সহজেয় অনুমেয়।

এসবের মধ্যেও শান্ত্বনার বিষয় হচ্ছে, বরাবরের মতো এই দুর্যোগেও দেশের ওলামায়ে কেরাম এবং ইসলামী সমাজ স্বতস্ফূর্তভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। শুরু থেকেই ওলামায়ে কেরাম বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় যেভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে তা তাদের গৌরবময় ইতিহাসে আরেকটি সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হবে। ব্যক্তিগতভাবে, দলবদ্ধভাবে, যে যেভাবে পেরেছে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

আমরা মানুষ। তাই আমরা মানবিক দূর্বলার উর্ধ্বে উঠতে পারি না। এ কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে এরকম প্রকৃতিক দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে আমরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। সঠিক চিন্তাশক্তি লোপ পায়। আর শয়তান তো আছেই প্রতিনিয়ত আমাদের ঈমানের ভিতকে নড়বড়ে করে দেয়ার জন্য। তাই যেকোন প্রাকৃতিক-অপ্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা বিপর্যয়ে নিম্নে আলোচিত বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত।

[ এক ]

মানবজীবন সৃষ্টিগতভাবেই সুখ-দুঃখের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হবে- এটাই আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত নিয়ম। তিনি মানবজাতিকে এই দুনিয়ায় তাঁর খলীফা হিসেবে পাঠিয়েছেন। তাদের উপর দুনিয়াকে আবাদ ও সমৃদ্ধ করার যে গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছেন, তা পালন করতে গেলে  তাদেরকে এই দুটো অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। নিখাদ সুখ কিংবা নিরেট দুঃখ – এ দুটো কেবল আখিরাতেই ঘটবে।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন- “অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি বিপদ-কষ্টের মধ্যে।” (সূরা আল বালাদ, আয়াত- ৪)।

তিনি আরও বলেছেন- “হে মানুষ! তুমি তোমার রবের কাছে পৌছা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাত লাভ করবে।” (সূরা ইনশিক্বাক, আয়াত- ৬)।

[ দুই ]

আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন গোটা সৃষ্টি জগতের খালিক ও মালিক। সুখ-শান্তি, হাসি-কান্না, লাভ-ক্ষতি, জন্ম-মৃত্যু সবই তাঁর হাতে। তিনি যা ইচ্ছে তা-ই করতে পারেন। তাঁর কাজের জন্য কাউকে কৈফিয়ত দিতে হয় না। “তিনি যা যা করেন তার ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা যাবে না”। (সূরা আল-আন্বিয়া, আয়াত- ২৩)। এতদসত্ত্বেও তাঁর সব কাজই হিকমতপূর্ণ। তিনি হাকীম, প্রজ্ঞাময়। তাঁর কোন একটি কাজই হিকমতবিহীন নয়। তিনি বলেছেন- “নিশ্চয় আমি জানি যা তোমরা জান না।” (সূরা বাকারা, আয়াত- ৩০)।

অতএব, বন্যা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস, দাবানল, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ’সহ যাবতীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় আল্লাহর হুকুমেই সংঘটিত হয় এবং এর পেছনে অনেক সুপ্ত কারণ ও হিকমত থাকে; যা খালিচোখে আমাদের নজরে পড়ে না। আমরা কেবল এগুলোর বাহ্যিক ধ্বংসাত্বক রূপটাই দেখি, কিন্তু পর্দার আড়ালের অন্তর্নিহিত হিকমত আমাদের উপলব্ধিতে আসে না।

এসকল দুর্যোগ-মুসিবতের আসমানী হিকমত আদ্যোপান্ত জানাতো মানুষের পক্ষে সম্ভব না। তবে কিছু বিষয় অনুধাবন করার অবকাশ আছে। যেমন-

(১) এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ অবাধ্য কাফেরদেরকে সাজা প্রদান করেন। তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নেন। যেমন, তফানের মাধ্যমে নূহ আলাঃ-এর কওমকে সাজা দেয়া হয়েছিলো। ঘূর্ণিঝড়ের দিয়ে হুদ আলাঃ-এর কওম থেকে প্রতিশোধ নেয়া হয়েছিলো। বজ্রপাতের মাধ্যমে সালেহ আলাঃ-এর কওমকে ধ্বংস করা হয়েছিলো। তীব্র আওয়াজ দিয়ে শুয়াইব আলাঃ এর কওমকে, পাথর বর্ষণ করে লূত আলাঃ-এর কওমকে এবং সাগরে ডুবিয়ে ফেরআউন এবং তার দলবলকে ধ্বংস করেছিলেন।

এই মর্মে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন- “সুতরাং তাদের প্রত্যেককেই আমরা তার অপরাধের জন্য পাকড়াও করেছিলাম। তাদের কারো উপর আমরা পাঠিয়েছিলাম পাথরকুচিসম্পন্ন প্ৰচণ্ড ঝটিকা। তাদের কাউকে আঘাত করেছিল মহানাদ, কাউকে আমরা প্রোথিত করেছিলাম ভূগর্ভে এবং কাউকে আমরা করেছিলাম নিমজ্জিত। আর আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তাদের প্রতি যুলুম করবেন; বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করছিল।” (সূরা আনকাবুত, আয়াত- ৪০)।

পাশাপাশি এসব ঘটনার মধ্যে অন্যদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। যাতে তারা এই পরিনতি বরণ করা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজে বের করে। আল্লাহ তায়ারা বলেছেন- “এবং তাদের কাহিনীর মধ্যে জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে শিক্ষা।” (সূরা ইউসুফ, আয়াত- ১১)।

(২) এগুলো মুমিনদের জন্য পরীক্ষাও হতে পারে। তাদের ঈমানের স্বচ্ছতাকে পরখ করে দেখার একটি সুযোগ হতে পারে।  আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি তোমাদের মধ্যে মুজাহিদ ও ধৈর্যশীলদেরকে জেনে নিই এবং আমি তোমাদের অবস্থা পরীক্ষা করি।” (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত- ৩১)।

উহুদ যুদ্ধের বিপর্যয় সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন- “তোমাদেরকে যদি (উহুদ যুদ্ধে) কোন আঘাত লেগে থাকে, তবে অনুরূপ আঘাত (বদর যুদ্ধে) তাদেরকেও তো লেগেছে এবং মানুষের মধ্যে এ (বিপদের) দিনগুলিকে পর্যায়ক্রমে আমি অদল-বদল করে থাকি। [১] আর (উহুদের পরাজয় এ জন্য ছিল,) যাতে আল্লাহ বিশ্বাসিগণকে জানতে পারেন এবং তোমাদের মধ্য হতে কিছুকে শহীদরূপে গ্রহণ করতে পারেন। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন না। এবং যাতে আল্লাহ বিশ্বাসিগণকে পরিশুদ্ধ ও অবিশ্বাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে পারেন।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত- ১৪০-১৪১)।

আরও পড়তে পারেন-

(৩) এই বিপর্যয়গুলো কখনো কখনো মুমিনদের গুনার মাফ করার একটি উপলক্ষ হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দিচ্ছেন- “নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধনপ্রাণ এবং ফলের (ফসলের) নোকসান দ্বারা পরীক্ষা করব; আর তুমি ধৈর্যশীলদেরকে সুসংবাদ দাও।” (সূরা বাকারা, আয়াতঃ ১৫৫)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ” মুমিন বান্দা যেসকল বালা-মুসিবত, দুঃখ-বেদনা, দুশ্চিন্তা, মনোকষ্টের মুখোমুখি  হয়- এমনকি একটি কাঁটাও যদি তার পায়ে বিঁধে – আল্লাহ তায়ালা এগুলোর বিনিময়ে তার গুনাহ মাফ করে দেন”। (বুখারী- হাদীস নং- ৫৬১১)।

[ তিন ]

যেসকল বিপর্যয়ের আমরা মুখোমুখি হই সেগুলোকে মোটাদাগে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ১. যেগুলোর সৃষ্টির পেছনে বাহ্যিকভাবে মানুষের হাত নেই, যেমন ঝড়তুফান, ভূমিকম্প ইত্যাদি। ২. যেগুলো মানুষ নিজে তৈরি করে, যেমন যুদ্ধবিগ্রহ, আগুন লাগানো, পরিবেশ দূষিতকরণ ইত্যাদি। প্রথমোক্ত প্রকারকে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে চিন্থিত করি। আর দ্বিতীয় প্রকারকে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ বলতে পারি।

প্রথমটি অর্থাৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে আমাদের দুটি করণীয় হতে পারে। প্রথমতঃ দুর্যোগ সংগঠিত হওয়ার পূর্বেই এ বিষয়ে পর্যাপ্ত পরিমান সতর্কতা অবলম্বন করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যেমন বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের ক্ষেত্রে আগে থেকে সম্ভাব্য বন্যাকবলিত এলাকাগুলো চিন্থিত করে এগুলোকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

দ্বিতীয়তঃ বিপর্যয় ঘটার পর বিপর্যয়ের ধাক্কা সামাল দেয়ার মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় সামনে রাখা জরুরী-

(১) আল্লাহর ফায়সালা এবং তাকদীরের উপর সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করা। বেশি হাহুতাশ না করা। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন শব্দ মুখ দিয়ে যাতে বের না হয়ে যায় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেন – “তুমি বলে দাও, ‘আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা ছাড়া অন্য কোন বিপদ আমাদের উপর আসতে পারে না। তিনিই আমাদের কর্মবিধায়ক। আর বিশ্বাসীদের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরই ভরসা করা।’ (সূরা তাওবা, আয়াত- ৫১)।

(২) হতাশ না হওয়া এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া, বিপদ যত কঠিনই হোক। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেন- “এবং আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ো না, কারণ অবিশ্বাসী সম্প্রদায় ব্যতীত কেউই আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয় না।’ (সূরা ইউসুফ, আয়াত- ৮৭)।

অন্যত্র রাব্বুলআলামীন ইরশাদ করছেন- “তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা বেহেশত প্রবেশ করবে; যদিও পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদের অবস্থা এখনো তোমরা প্রাপ্ত হওনি? দুঃখ-দারিদ্র্য ও রোগ-বালা তাদেরকে স্পর্শ করেছিল এবং তারা ভীত-কম্পিত হয়েছিল। তারা এতদূর বিচলিত হয়েছিল যে, রসূল ও তাঁর প্রতি বিশ্বাসস্থাপনকারিগণ বলে উঠেছিল, ‘আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে?’ জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।” (সূরা বাকারা, আয়ত- ২১৪)।

(৩) অন্যের সাহায্যের অপেক্ষা না করা; বরং নিজেই বিপর্যয়কে কিভাবে কাটিয়ে উঠা যায় সে ব্যাপারে সাধ্যমত চেষ্টা করা৷ নিজের যতটুকু করা সম্ভব সেগুলো পূর্ণভাবে করা। বাকীটার জন্য আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা করা। এক দরিদ্র ব্যক্তি যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু সাহায্য চাইতে আসে তখন তিনি তাকে টাকা পয়সা না দিয়ে একটি কুড়াল কিনে দিয়েছিলেন। যাতে সে নিজে পরিশ্রমে স্বাবলম্বী হতে পারে।

আর দুর্যোগকবলিত এলাকা থেকে দূরে যাদের বসবাস, বিপর্য থেকে যারা আল্লাহর রহমতে বেঁচে গিয়েছেন, তাদের করণীয় হচ্ছে- বিপর্যস্ত লোকদের দুঃখে ব্যাথিত হওয়া। তাদের জন্য দোয়া করা। সাধ্যমতো তাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “যে ব্যক্তি মুসলমানদের কোন বিষয়কে (বালা-মুসিবতকে) গুরুত্ব দেয় না, সে মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত নয়” (তাবারানী, মুস্তাদরকে হাকেম)। হাদীস শরীফে আরও বলা হয়েছে- “পরস্পর দয়া, ভালোবাসার ক্ষেত্রে মুমিনরা মূলত একটি শরীরের মতো। যখন তার কোন একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার সর্বাঙ্গে জ্বর অনুভূত হয়।” (বুখারী, মুসলিম)।

দ্বিতীয় প্রকার, অর্থাৎ মানবসৃষ্ট বিপর্যয়গুলোর ক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে-

(১) এসকল বিপর্যয় তৈরি করার কারণ-উপকরণগুলো থেকে সর্বোতভাবে দূরে থাকা। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ইরশাদ করছেন- “তোমরা নিজেদরকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না” (সূরা বাকারা, আয়াত- ১৯৫)।

(২) পরিবেশ বিনষ্ট করে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে এমন সকল কর্মকান্ড পরিহার করা। ইসলামে পরিবেশ রক্ষা করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জোর দিযেছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষার প্রতি ব্যাপক উৎসাহিত করেছে।

(৩) যুদ্ধবিগ্রহে না জড়ানো। পরস্পর আলোচনা এবং সৌহার্দ্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সমস্যার সমাধান বের করার চেষ্টা করা।

পরিশেষে যে কথাটা বলতে হয়, বিপর্যয় কোন না কোনভাবে আমাদেরই তৈরি। বা বলা যায়, এগুলোর পেছনে আমাদের কর্ম দায়ী। গুনাহ, পাপাচারে লিপ্ত হয়ে আমরা আল্লাহর গজব ডেকে আনছি। আল্লাহর সৃষ্ট পৃথিবীতে পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে আমরাই বিপর্যয় তৈরি করছি। অতএব, এ সকল বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হলে তাঁর আদেশ-নিষেধ আঁকড়ে ধরতে হবে এবং সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। আল্লাহ তাওফীক দানকারী।

লেখক: অনার্স- ধর্মতত্ত্ব, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, মিসর, মাস্টার্স- শরীয়া ইসলামিয়া, কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়, মিসর এবং সিনিয়র শিক্ষক- জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।