ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস ও হিন্দিবাদী রবীন্দ্রনাথ

।। তারেকুল ইসলাম ।।

প্রতি বছরই আমরা ফেব্রুয়ারি ভাষার মাসকে পাই। ভাষার মাস এলেই আমরা একুশের চেতনায় উৎফুল্ল ও উদ্বেলিত হয়ে উঠি। আমাদের আবেগের মহাসাগরে ভাষাপ্রেম উথালপাথাল করে দুলে ওঠে। চেতনা ও হৃদয়ের গভীরে আলোড়ন তোলে। ভাষার মাস নিয়ে, একুশের চেতনা নিয়ে সারাদেশে আলোচনা, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের জোয়ার বয়ে যায়। দেশের বুদ্ধিজীবী ও লেখকশ্রেণি পত্রপত্রিকায় নানা ধরনের ও বহুমাত্রিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখেন। এবারও তথৈবচ, কোনো ব্যতিক্রম নেই। কিন্তু কথা হচ্ছে, ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস বা একুশের চেতনা সংক্রান্ত আমাদের চিন্তা ও ভাবনা প্রকৃতার্থে কতটা মৌলিক ও গভীরতর- তা আলোচনার দাবি রাখে।

লক্ষণীয় যে, বামপন্থি ও সেকুলার শ্রেণির ইতিহাসবিদ, লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ বা কলাম লিখতে গিয়ে ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত পরিপূর্ণভাবে উল্লেখ ও উপস্থাপনের ব্যাপারে সীমাবদ্ধ থাকেন। বস্তুতপক্ষে, ভাষা-আন্দোলনের উৎপত্তি ও উৎসের ইতিহাসকে আজ মনে হয় অতি সচেতন ও সূক্ষ্মভাবেই খ-িত করা হচ্ছে। সাধারণত বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মিছিলে সালাম-রফিক-বরকত-জব্বারের গুলিবিদ্ধপূর্বক শহীদ হওয়া দিয়েই তারা লেখা শুরু করেন। প্রশ্ন হলো, বায়ান্নতে যারা মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন, যারা পাক হানাদারের বুলেটবৃষ্টির মুখে শহীদ হলেন, সেদিন তাদেরকে ভাষা-আন্দোলনে নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়েছিল কোন সংগঠন?

অথচ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার বছর তথা ১৯৪৭-এর দেশবিভাগের বছরেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয় তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে। এ সংগঠনটির পুরো নাম ছিল পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিস। আমাদের দেশ তখনো পাকিস্তান থেকে পৃথক না হওয়ায় সংগঠনটির নামের আগে ‘পাকিস্তান’ শব্দটি ছিল। এ কারণেই এই সংগঠনের নাম মুখে নিতে বা লিখতে তথাকথিত সেকুলার প্রগতিশীলদের এত এলার্জি!

ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর লিখেন, ‘১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঢাকা সফরে এসে পল্টন ময়দানে এক জনসভায় বলে বসেন, পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। যে নাজিমুদ্দিন ১৯৪৮ সালের ১৫ মার্চ বাংলা রাষ্ট্রভাষার দাবি নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তার এই বিশ্বাসঘাতকতায় স্বভাবত পূর্ববঙ্গের জনমত বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এর প্রতিবাদের জন্য তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।

তমদ্দুন মজলিসের পক্ষ থেকে অধ্যাপক আবুল কাসেম ও আমি এই সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলাম। এই পরিষদের পক্ষ থেকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল কলেজের সামনে বাংলা ভাষা সমর্থকদের ওপর পুলিশের গুলিতে রফিক, শফিক, সালাম, বরকত প্রমুখ তরুণদের রক্তে রাজপথ সিক্ত হয়ে উঠলে ভাষা-আন্দোলনের নতুন গতিবেগ সৃষ্টি হয়’ (দৈনিক ইনকিলাব, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১২)।

অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে বলতে হয়, যে সংগঠনটির মাধ্যমে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ভিত্তি গড়ে ওঠে সেই সংগঠনটি অর্থাৎ তমুদ্দন মজলিসের কথা সেকুলার সুশীলদের কথায়, লেখায় ও আলোচনায় গুরুত্ব পায় না। সে কারণেই বর্তমান প্রজন্ম একুশে ফেব্রুয়ারির দিন পাক হানাদারের গুলিতে শহীদ হওয়া বরকত-রফিক-জব্বার-সালামের নাম জানলেও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া মূল সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের নাম ও অবদানের ইতিহাস জানতে পারে না। তাই স্মরণও করা হয় না।

আরও পড়তে পারেন-

ভাষা-আন্দোলনের পথিকৃৎ ও প্রধান সংগঠক অধ্যাপক আবুল কাসেম তমদ্দুন মজলিস প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে বাংলা ভাষায় পদার্থবিদ্যার ক্লাসে তাঁর শিক্ষার্থীদের লেকচার দিয়ে আলোড়ন তুলেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে বাংলা ভাষায় লেকচার দেয়ার মতো হিম্মত তৎকালীন সময়ে প্রায় অসম্ভব ও প্রচণ্ড- দুঃসাহসিক কাজ ছিল। কিন্তু অধ্যাপক আবুল কাসেম দৃঢ়চিত্তে ও প্রবল মনোশক্তি নিয়ে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন। এরপর থেকেই তিনি বুকের মধ্যে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার স্বপ্ন লালন করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ‘পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিস’ প্রতিষ্ঠা করেন। তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত তমদ্দুন মজলিসের মাধ্যমেই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সর্বব্যাপী সার্থক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

তমদ্দুন মজলিসের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এদেশে বিপ্লবী ইসলামী আদর্শের প্রতিষ্ঠা এবং পূর্বপাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিকে সার্থক আন্দোলনে রূপদান করা। তারও আগে উপমহাদেশে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সর্বপ্রথম দাবি জানিয়েছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এবং তিনি ১৯২১ সালে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার লিখিত প্রস্তাব পেশ করেন। এছাড়া তৎকালীন সময়ে আরো অনেকেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে ছিলেন। তবে তাঁদের তৎপরতা ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক, তখনো ভাষা-আন্দোলন জনগণের সম্মিলিত রূপ পরিগ্রহ করেনি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য তখনো বিক্ষোভ, মিছিল, আন্দোলন এবং রাজপথে গণজোয়ার শুরু হয়নি। কিন্তু অধ্যাপক কাসেমের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় যুগপৎ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। আওয়ামী মুসলিম লীগ, ছাত্রলীগ প্রভৃতি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোও তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, তমদ্দুন মজলিসই হচ্ছে ভাষা-আন্দোলনের ‘জনক সংগঠন’। ভাষা-আন্দোলনের অগ্রদূত অধ্যাপক আবুল কাসেমের অপরিসীম অবদানের কথাও আজ বর্তমান প্রজন্মের অগোচরে রয়ে গেছে।

প্রসঙ্গক্রমে, ভারতবর্ষের জাতীয় ভাষা বা রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের অভিমত জানা জরুরি। আমরা তো শুধু জিন্নাহকেই দোষারোপ করি উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ইস্যুতে। অথচ খোদ রবীন্দ্রনাথও ভারতের রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে হিন্দিকে সমর্থন করেছিলেন, বাংলাকে নয়! ১৯১৮ সালে বিশ্বভারতী’তে রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় হিন্দি ভাষার পক্ষে রবীন্দ্রনাথের ওকালতির বিরোধিতা করে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছিলেন, ‘ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেকে বাংলা ভাষা হিন্দি অপেক্ষা উন্নততর এবং বাংলাকেই ভারতের সাধারণ ভাষায় পরিণত করা যেতে পারে’।

এছাড়া স্বাধীনতা পেলে ভারতবর্ষের জাতীয় ভাষা বা রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণ সম্পর্কে জানতে চেয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে একটা পত্র লিখেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। তখন গান্ধীর পত্রের জবাবে হিন্দির পক্ষে অভিমত দিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন- The only possible national language for inter-provincial intercourse is Hindi in India. অর্থাৎ, আন্তঃপ্রাদেশিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভারতের একমাত্র সম্ভাব্য জাতীয় ভাষা হতে পারে হিন্দি (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্র বর্ষপঞ্জী, কলকাতা, ১৯৬৮, পৃষ্ঠা-৭৮)। এটাই হলো নোবেলজয়ী শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথের বাংলার প্রতি ভালোবাসার নমুনা। জিন্নাহকে ক্ষমা করা গেলো না, কিন্তু একই ইস্যুতে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে ছাড় পেয়ে যান বুঝে আসে না।

যাই হোক, বাংলাদেশের একশ্রেণির সেকুলাররা ভাবেন, ভাষা-আন্দোলন এদেশের সর্বস্তরের তথা গণমানুষের সেকুলার মন-মানসিকতার ফল এবং শুধু ভাষা-আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি মুসলমান তাদের আত্মপরিচয়ের সন্ধান করেছে। প্রকৃতপক্ষে, তারা ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করছেন। কারণ, এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি মুসলমান ৪৭এর দেশভাগের সময় প্রধানত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের উচ্ছেদকল্পে বিশেষত প্রজাপীড়ক হিন্দু জমিদারশ্রেণির শোষণ থেকে মুক্তিলাভের জন্যই পাকিস্তানের সাথে গাঁটছড়া বাঁধে। কিন্তু পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানের জালিম স্বৈরশাসকদের অত্যাচার ও বঞ্চনা দিনে দিনে বাড়তে থাকলে পূর্বপাকিস্তানের বাঙালি মুসলমানেরা স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। ইসলামবিদ্বেষী সেকুলাররা মনে করে, রাষ্ট্রভাষা ইস্যুতে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত এলে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি মুসলিম সমাজ ইসলামী চেতনা ও মুসলিম জাতিসত্তার কথা ভুলে গিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে নেমে সেকুলার চেতনায় উদ্ভাসিত হয়েছে। সেকুলারদের এমন ধারণা শুধু উদ্ভটই নয়, এর নেপথ্যে রয়েছে ইসলামের প্রতি তাদের সুপ্ত ঘৃণা ও বিদ্বেষও।

আমাদের ভাষা-আন্দোলন ফ্যাসিবাদবিরোধী ও জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের চিরন্তন লড়াইয়ের প্রেরণাদীপ্ত অনুষঙ্গ হিসেবে দেদীপ্যমান। এক্ষেত্রে ইসলামের জুলুমবিরোধী চেতনাও অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল, যা তমদ্দুন মজলিসের আদর্শ ও ভূমিকায় লক্ষণীয়। অথচ তথাকথিত সেকুলার হুজুগ ও উগ্র বাঙালি জাতিবাদী চেতনা দ্বারা আমাদের রক্তাক্ত ভাষা-আন্দোলনের মূল স্পিরিটকে এতদিন ধরে কলুষিত ও বিকৃত করা হয়েছে। এই ইসলামবিদ্বেষী সেকুলার হুজুগ ও বাঙালি জাতিবাদকে পরাজিত করা না গেলে বাঙালি মুসলমানের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভবিষ্যত অন্ধকার দেখি। এজন্য এদেশের আলেম সমাজকে মাতৃভাষা চর্চার মাধ্যমে অগ্রগতি ও উৎকর্ষ লাভ করতে হবে।

এদেশের আলেম সমাজকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের নেতৃত্ব গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ১৯৮৪ সালের ১৪ই মার্চে কিশোরগঞ্জের একটি মাদরাসায় বিশ্বখ্যাত আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব আল্লামা সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী এক ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই; তা হলো- এ দেশের ভাষা ও সাহিত্য। বাংলা ভাষাকে অন্তরের মমতা দিয়ে গ্রহণ করুন এবং মেধা ও প্রতিভা দিয়ে বাংলা সাহিত্যচর্চা করুন। কে বলেছে, এটা অস্পৃশ্য ভাষা? কে বলেছে, এটা হিন্দুদের ভাষা? দ্বীন-ইসলামের প্রচার-প্রসার ও গবেষণায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চা করা যাবে না, এমন চিন্তা কেউ পোষণ করলে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য? এমন ভ্রান্ত ও আত্মঘাতী ধারণা বর্জন করুন। এটা অজ্ঞতা, এটা মূর্খতা এবং আগামী দিনের জন্য এর পরিণতি বড় ভয়াবহ। এ যুগে ভাষা ও সাহিত্য হলো চিন্তার বাহন, হয় কল্যাণের চিন্তা, নয় ধ্বংসের চিন্তা। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে আপনারা শুভ ও কল্যাণের এবং ঈমান ও বিশ্বাসের বাহনরূপে ব্যবহার করুন। অন্যথায় শত্রুরা একে ধ্বংস ও বরবাদির এবং শিরক ও কুফুরির বাহনরূপে ব্যবহার করবে’।

ভাষা-আন্দোলনের সাথে সেকুলার চেতনার কোনো সংযোগই ছিল না। আবার ভাষা-আন্দোলন আমাদের ইসলামী চেতনারও বিরোধী ছিল না; বরং ছিল নিজস্ব তাহযীব তমদ্দুন ও আত্মচেতনা রক্ষারই মূল অবলম্বন। প্রখ্যাত কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক আরিফুল হক তাঁর ‘সংস্কৃতির মানচিত্র’ বইয়ের ‘বাংলাদেশই বাংলাভাষার প্রাণকেন্দ্র হোক’ শীর্ষক প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী বিপুল জনগোষ্ঠী সেই ১৯৪৯ সালেই হিন্দিকে তাদের জাতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা ভাষার বিচ্ছিন্নতাকে মেনে নিতে পারেনি। তার কারণ, মুসলমানরা বরাবরই বাংলা ভাষাকে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির অংশ মনে করে এসেছে। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন পরিচালিত হয়েছে সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব তাহযীব তমদ্দুন রক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে’।

লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক। Email: tareqislampt@gmail.com

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।