মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য ও ঈমানের গুরুত্ব

।। মাওলানা সাঈদ আহমদ ।।

আল্লাহ তাআলা এ জগতকে অনর্থক-অহেতুক ও উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি করেননি। ইরশাদ হয়েছে- اَفَحَسِبۡتُمۡ اَنَّمَا خَلَقۡنٰکُمۡ عَبَثًا وَّاَنَّکُمۡ اِلَیۡنَا لَا تُرۡجَعُوۡنَ “তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না?” (আল মুমিনূন, আয়াত- ১১৫)।

وَمَا خَلَقۡنَا السَّمَآءَ وَالۡاَرۡضَ وَمَا بَیۡنَہُمَا بَاطِلًا ؕ ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ۚ “আমি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছুই অযথা-অনর্থক সৃষ্টি করিনি। এটা কাফেরদের ধারণা মাত্র”। (সোয়াদ- ২৭ ও আদ-দোখান- ৩৮-৩৯)।

সুতরাং তাঁর কাছে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। অতঃপর এ জগতের প্রতিটি কাজের হিসাব-নিকাশ হবে এবং এর প্রতিফল ভোগ করতে হবে। কাজেই এখানে যা ইচ্ছা তা করা যাবে না।

আমাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- وَمَا خَلَقۡتُ الۡجِنَّ وَالۡاِنۡسَ اِلَّا لِیَعۡبُدُوۡنِ “আমি জি¦ন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার-ই ইবাদত করবে”। (আয-যারিয়াত- ৫৬)।

الَّذِیۡ خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَالۡحَیٰوۃَ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ “যিনি মরণ ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন যে, কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম”। (আল মুলক- ২, আল কাহাফ- ৭)।

এ দুনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে কেবল মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য। দুনিয়ার সৌন্দর্যে মাতোয়ারা হয়ে কে আল্লাহ তাআলাকে ভুলে যায়, আর কে আল্লাহ তাআলার হুকুম মতে চলে নিজের জন্য আখেরাতের পুঁজি সঞ্চয় করে- তা দেখার জন্য। তারপর একদিন আসবে, যখন তাকে তার ভালো-মন্দ কাজ অনুসারে ফলাফল দেয়া হবে।

এ জগতে পূণ্য ও পাপ উভয়টি করার সুযোগ আছে

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-  وَہَدَیۡنٰہُ النَّجۡدَیۡنِ ۚ

“আমি তাকে (মানুষকে) দু’টো পথই দেখিয়েছি”। (আল বালাদ- ১০)।

 فَاَلۡہَمَہَا فُجُوۡرَہَا وَتَقۡوٰىہَا ۪ۙ قَدۡ اَفۡلَحَ مَنۡ زَکّٰىہَا ۪ۙ وَقَدۡ خَابَ مَنۡ دَسّٰىہَا ؕ “অতঃপর তার জন্য যা পাপ এবং তার জন্য যা পরহেযগারী, তার ভেতর সেই বিষয়ক জ্ঞানোন্মেষ ঘটিয়েছেন। সে-ই সফলকাম হবে, যে নিজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ করবে। আর ব্যর্থকাম হবে সেই, যে তাকে (গুনাহের মধ্যে) ধসিয়ে দেবে”। (আশ শামস, ৮-১০ আয়াত)।

আল্লাহ তাআলা মানুষকে ভালো ও মন্দ দুই পথই দেখিয়ে দিয়েছেন এবং তাকে এখতিয়ার দিয়েছেন, নিজ ইচ্ছায় চাইলে ভালো পথ অবলম্বন করতে পারে এবং চাইলে মন্দ পথেও যেতে পারে। তবে ভালো পথে চললে পুরস্কার পাবে, আর মন্দ পথে চললে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।

পৃথিবীতে দু’রকমের লোক পাওয়া যাবে

এ দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষাক্ষেত্র এবং পূণ্য ও পাপ উভয়টা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাই এখানে দু’রকমের লোকই পাওয়া যাবে। একদল মুমিন-কৃতকার্য আর একদল কাফের-অকৃতকার্য।

ইরশাদ হয়েছে, اِنَّا ہَدَیۡنٰہُ السَّبِیۡلَ اِمَّا شَاکِرًا وَّاِمَّا کَفُوۡرًا

“আমি তাকে (মানুষকে) পথ দেখিয়েছি, এখন হয় সে কৃতজ্ঞ হবে অথবা অকৃতজ্ঞ”। (আদ দাহর, আয়াত- ৩)।

ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ فَمِنۡکُمۡ کَافِرٌ وَّمِنۡکُمۡ مُّؤۡمِنٌ ؕ وَاللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ

“তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ কাফের এবং কেউ মুমিন। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা দেখেন”। (আত তাগাবুন- ২; ইউনুস- ৪০)।

فَرِیۡقٌ فِی الۡجَنَّۃِ وَ فَرِیۡقٌ فِی السَّعِیۡرِ “একদল যাবে জান্নাতে এবং একদল যাবে জাহান্নামে”।

وَلَوۡ شَآءَ اللّٰہُ لَجَعَلَہُمۡ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً وَّلٰکِنۡ یُّدۡخِلُ مَنۡ یَّشَآءُ فِیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ “আল্লাহ চাইলে সমস্ত লোককে একই দল বানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতে দাখিল করেন”। (আশ্-শূরা, ৭-৮ আয়াত)।

অর্থাৎ- আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে একই দ্বীনের অনুসারী রূপে দুনিয়াতে প্রেরণ করতে পারতেন এবং মুসলিম বানাতে পারতেন। কিন্তু দুনিয়ায় যেহেতু মানব সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য তাদেরকে পরীক্ষা করা, তাই এরূপ করা হয়নি।

আরও পড়তে পারেন-

কেননা, পরীক্ষার দাবি হলো, মানুষকে দিয়ে হক ও না হক বুঝিয়ে স্বইচ্ছার উপর ছেড়ে দেয়া। বরং সে স্বেচ্ছায় বুঝে-শুনে ও নিজ বোধ বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে নিখিল বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা নিদর্শনাবলীর মধ্যে চিন্তা করবে এবং তার ফলশ্রুতিতে খুশি মনে তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাতের প্রতি ঈমান আনবে।

নবীগণকে পাঠানো হয় সে সব নিদর্শনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এবং আসমানী কিতাব নাযিল করা হয় সে পরীক্ষাকে সহজ করার লক্ষ্যে।

আর এ পরীক্ষার উপরই আখেরাতের পুরস্কার ও শাস্তি নির্ভর করে। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কাউকে নিজ ইচ্ছায় মুসলিম বানান না।

ইবাদত: ঈমান ও আমল উভয়ের সমষ্টির নাম এবং এতেই দুনিয়া-আখিরাতের সফলতা:

ইরশাদ হয়েছে, যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে, তারাই সৃষ্টির সেরা। তাদের পালনকর্তার কাছে তাদের পুরস্কার হলো চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার নিচে নহর প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এসব তার জন্য, যে তার পালনকর্তাকে ভয় করে। (আল বাইয়্যিনাহ ৭-৮ আয়াত)।

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَہُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّہٗ حَیٰوۃً طَیِّبَۃً ۚ وَلَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَجۡرَہُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ

“পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যে কেউ মুমিন হয়ে সৎকর্ম করবে, আমি অবশ্যই তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের উৎকৃষ্ট কর্ম অনুযায়ী তাদের প্রতিদান অবশ্যই প্রদান করব”। (আন নাহল- ৯৭)।

وَمَنْ يَأْتِهِ مُؤْمِنًا قَدْ عَمِلَ الصَّالِحَاتِ فَأُولَئِكَ لَهُمُ الدَّرَجَاتُ الْعُلَا “যে ব্যক্তি তাঁর নিকট মুমিন হয়ে আসবে এবং সে সৎকর্মও করে থাকবে, এরূপ লোকদের জন্যই রয়েছে সমুচ্চ মর্যাদা”। (ত্বোয়াহা- ৭৫)।

“মানুষ অবশ্যই মহা ক্ষতিগ্রস্ত। তারা ব্যতীত, যারা ঈমান আনে, নেক-আমল করে এবং একে অন্যকে সত্যের উপদেশ দেয় ও সবরের উপদেশ দেয়”। (সূরা আল-আসর)।

কালের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যারা ঈমান ও নেক-আমল বা সৎকর্ম থেকে বঞ্চিত থাকে, তারা মহা ক্ষতিগ্রস্ত। কেননা, এ রকম বহু জাতিকে দুনিয়াতেই আসমানী আযাবের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাছাড়া প্রত্যেক যুগে আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত কিতাব ও তাঁর প্রেরিত নবীগণ মানুষকে সতর্ক করেছেন যে, যদি ঈমান ও সৎকর্ম অবলম্বন না করা হয়, তবে আখেরাতের কঠিন শাস্তি মানুষের জন্য অপেক্ষা করছে।

আমলের গ্রহণযোগ্যতার জন্য ঈমান শর্ত

وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ نَقِيرًا. পুরুষ বা নারীর মধ্যে যে কেউ নেক-আমল করলে (শর্ত হলো,) যদি ঈমানদার হয়, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণও জুলুম করা হবে না। (আন নিসা, ১২৪)।

وَمَنْ أَرَادَ الْآَخِرَةَ وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ كَانَ سَعْيُهُمْ مَشْكُورًا “যে ব্যক্তি আখিরাত কামনা করে এবং সেজন্য যথাযথ চেষ্টা করে, যদি সে মুমিন হয়, তবে এরূপ চেষ্টার পরিপূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হবে”। (বনী-ইসরাঈল- ১৯)।

ঈমান ছাড়া আমলের কোন প্রতিদান নেই আখেরাতে

وَقَدِمۡنَاۤ اِلٰی مَا عَمِلُوۡا مِنۡ عَمَلٍ فَجَعَلۡنٰہُ ہَبَآءً مَّنۡثُوۡرًا “তারা (ঈমানবিহীন ব্যক্তিরা দুনিয়ায়) যা কিছু আমল করেছে, আমি তার ফায়সালা করতে আসব এবং সেগুলোকে শূন্যে বিক্ষিপ্ত ধূলোবালি (এর মতো মূল্যহীন) করে দেব”। (আল ফুরকান, আয়াত- ২৩)।

অর্থাৎ- তারা যে সকল কাজকে পুণ্য মনে করত, আখেরাতে তা ধুলোবালির মতো মিথ্যা মনে হবে। আখেরাতে তার বিনিময়ে কিছুই পাবে না। কেননা, আখেরাতে কোন কাজ গৃহীত হওয়ার জন্য ঈমান শর্ত, যা তাদের ছিল না। তাই সেখানে এসব কোন কাজে আসবে না।

مَثَلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِرَبِّہِمۡ اَعۡمَالُہُمۡ کَرَمَادِۣ اشۡتَدَّتۡ بِہِ الرِّیۡحُ فِیۡ یَوۡمٍ عَاصِفٍ ؕ لَا یَقۡدِرُوۡنَ مِمَّا کَسَبُوۡا عَلٰی شَیۡءٍ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الضَّلٰلُ الۡبَعِیۡدُ

“যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে (তাদের উপমা এই যে,) তাদের কর্ম সেই ছাইয়ের মত, প্রচ- ঝড়ের দিনে তীব্র বাতাস যা উড়িয়ে নিয়ে যায়। তারা যা কিছু উপার্জন করে, তার কিছুই তাদের হস্তগত হবে না এটাই চরম বিভ্রান্তি”। (ইবরাহীম- ১৮)।

হাদীসে এসেছে- “আল্লাহ তাআলার রীতি হলো, কাফেররা দুনিয়ায় ভাল কাজ করে থাকলে, যেমন আর্ত ও পিড়ীতদের সাহায্য ইত্যাদি, তিনি এগুলোর প্রতিদান দুনিয়াতেই দিয়ে দেন। আখেরাতে তার কোন পুরস্কার তারা পাবে না”। (মুসনাদে আহমদ- ১২২৬৪)।

কেননা, সেখানে পুরস্কার লাভের জন্য ঈমান শর্ত। সুতরাং এসব কাজ আখেরাতে তাদের কোন কাজে আসবে না। তাই এর দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে ঝড়ো হাওয়া যেমন ছাই উড়িয়ে নিয়ে যায়, তারপর তার কোন চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না, সে রকমই কাফেরদের কুফর তাদের সৎকর্মসমূহ নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ফলে তার কোন উপকার তারা আখেরাতে লাভ করবে না।

مَثَلُ مَا یُنۡفِقُوۡنَ فِیۡ ہٰذِہِ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا کَمَثَلِ رِیۡحٍ فِیۡہَا صِرٌّ اَصَابَتۡ حَرۡثَ قَوۡمٍ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَاَہۡلَکَتۡہُ ؕ وَمَا ظَلَمَہُمُ اللّٰہُ وَلٰکِنۡ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ

“তারা এ দুনিয়ার জীবনে যা-কিছু ব্যয় করে, তার দৃষ্টান্ত এ রকম, যেমন হিমশীতল বায়ু এমন একদল লোকের শস্য ক্ষেতে আঘাত হানে ও তা ধ্বংস করে দেয়, যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের প্রতি জুলুম করেননি; বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করছে”। (আলে ইমরান- ১১৭)।

অর্থাৎ- আখেরাতে কাফেরদের দানও তদ্রƒপ বিফল হয়ে যাবে। কেননা, কুফর দান কবুল হওয়ার বিরোধী। তথাপি যালিম কওমের শস্য ক্ষেত্র- বলার কারণ হলো, মুসলমানদের কোন পার্থিব ক্ষতি হলে আখেরাতে সে তাঁর বিনিময়ে নেকী অর্জন করবে। অথচ কাফেরদের ভাগ্যে তা জুটবে না। (বয়ানুল কোরআন)।

সুতরাং তাদের সেবামূলক কার্যক্রমের দৃষ্টান্ত হলো শস্যক্ষেত্র, আর তাদের কুফরী কাজের দৃষ্টান্ত হিমশীতল ঝড়ো হাওয়া। সেই ঝড়ো হাওয়া যেমন মনোরম শস্যক্ষেত্রকে তছনছ করে দেয়, তেমনি তাদের কুফরও তাদের সেবামূলক কার্যক্রম ধ্বংস করে দেয়।

وَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَعۡمَالُہُمۡ کَسَرَابٍۭ بِقِیۡعَۃٍ یَّحۡسَبُہُ الظَّمۡاٰنُ مَآءً ؕ  حَتّٰی اِذَا جَآءَہٗ لَمۡ یَجِدۡہُ شَیۡئًا

“যারা কাফের, তাদের কর্ম মরুভূমির মরীচিকা সদৃশ, যাকে পিপাসার্ত ব্যক্তি পানি মনে করে। অবশেষে সে যখন সেখানে কাছে যায়, তখন কিছুই পায় না”। (আন-নূর ৩৯)।

মরুভূমিতে যে বালুরাশি চিকচিক করে, দূর থেকে তাকে মনে হয় পানি। আসলে তা পানি নয়; মরীচিকা। সফরকালে মুসাফিরগণ ভ্রমবশত তাকে পানি মনে করে বসে। কিন্তু বাস্তবে তা কিছুই নয়। ঠিক এ রকমই কাফের ও ঈমানবিহীন ব্যক্তিরা যে ইবাদত ও সৎকর্ম করে, আর ভাবে বেশ নেকি  কামাচ্ছে,  প্রকৃতপ্রক্ষে তার কিছুই কামাই হয় না, তা মরীচিকার মতোই বিভ্রম।

সুতরাং তারা তাদের কৃতকর্মের কারণে জান্নাতের নয়; বরং সম্পূর্ণরূপে জাহান্নামের উপযুক্ত হয়ে গেছে। এভাবে তারা দেখতে পাবে তাদের কর্ম তাদের কোন উপকারে আসেনি, বরং ক্ষতিরই কারণ হয়েছে।

উল্লেখ্য, মানুষ যেহেতু দু’ ধরনের; মুমিন-মুসলিম ও বেঈমান-কাফের, এর বাইরে আর কোন প্রকার নেই। কাজেই মুমিন-মুসলিম ছাড়া সকল কাফের-বেঈমান, নাস্তিক, হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদী, খ্রিস্টান ও ধর্মহীন ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপর্যুক্ত বিধান প্রযোজ্য। যদিও মুসলিম নামধারী হোক না কেন, যেমন কাদিয়ানী সম্প্রদায়।

[আগামী সংখ্যায় সমাপ্য]

লেখক: সিনিয়র শিক্ষক, জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।