সহীহ হাদীসের আলোকে ঈদের নামায ও অতিরিক্ত তাকবীর

সহীহ হাদীসের আলোকে ঈদের নামায ও অতিরিক্ত তাকবীর

– মাওলানা সাঈদ আহমদ

আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে দু’টি ঈদ দান করেছেন। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। সহীহ হাদীসে হযরত আনাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদীনায় তাশরীফ আনলেন তখন মদীনাবাসীর দু’টি উৎসবের দিন ছিল। তারা এ দিন দু’টি খেলা-ধূলার মাধ্যমে অতিবাহিত করত। রাসূল (সা.) এ উৎসব সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, যাহেলী যুগ থেকেই আমরা এমন আনন্দ-উৎসব করে আসছি। নবী (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে এ দু’দিনের পরিবর্তে উত্তম দুই দিন (ঈদ) দান করেছেন। তা হচ্ছে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা’। (মুসনাদে আহমদ- ১৩৬২২, আবু দাউদ- ১১৩৪)।

উভয় ঈদের দিন প্রধান কাজ হচ্ছে, ঈদের নামায আদায়। তবে এ নামাযের নিয়ম-পদ্ধতি সাধারণ নামায থেকে একটু ভিন্ন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, অতিরিক্ত তাকবীর।

ইমাম বুখারী (রাহ.)এর উস্তাদ ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রাহ.) বলেছেন, “ঈদের তাকবীর প্রসঙ্গে সাহাবায়ে কেরামের মতভেদ ছিল। তাঁদের থেকে বর্ণিত পন্থাগুলোর মধ্যে যে কোনটিই অবলম্বন করা যায়”। (ফাতহুল বারী, ইবনে রজব হাম্বলী- ৬/১৭৯, দারু  ইবনিল জাওযী)।

হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব ইমাম মুহাম্মদ (রাহ.) ‘মুয়াত্তা’ গ্রন্থে বলেন, “দুই ঈদের তাকবীরের ব্যাপারে ইমামগণের মতভেদ রয়েছে। সুতরাং তুমি যে কোন পদ্ধতিই গ্রহণ করতে পার। তবে আমাদের মতে ছয় তাকবীরের নিয়মই উত্তম”। (মুয়াত্তা মুহাম্মদ- ১৪১, আশরাফিয়া দেওবন্দ)।

 

প্রথম দলীল-

প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হযরত কাসেম ইবনে আবু আব্দুর রহমান (রাহ.) বলেন, অর্থাৎ- “আমাকে রাসূল (সা.)এর একজন সাহাবী হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল (সা.) ঈদের দিন আমাদের নিয়ে নামায পড়লেন এবং চারটি করে তাকবীর দিলেন। নামায শেষে আমাদের দিকে তাকিয়ে ইরশাদ করলেন- ভুলো না যেন। তারপর হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি গুটিয়ে চার আঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করে বললেন, জানাযার তাকবীরের মত (ঈদের নামাযেও চারটি করে তাকবীর হয়ে থাকে)” (তাহাবী শরীফ হাদীস- ৭১২৯)।

 

হাদীসের মান- ইমাম তাহাবী (রাহ.), হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রাহ.), আল্লামা আইনী (রাহ.) ও শাইখ আলবানী (রাহ.) প্রমুখ হাদীসটিকে সহীহ ও গ্রহণযোগ্য বলেছেন। (তাহাবী ৪/১৭৩, কাদীমী কুতুবখানা)।

 

দ্বিতীয় দলীল-

“তাবেয়ী মাকহুল (রাহ.) বলেন, আমাকে হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.)এর একজন সঙ্গী আবু আয়েশা জানিয়েছেন যে, (কুফার আমীর) সাঈদ ইবনুল আস (রাযি.) একদা আবু মূসা আশআরী ও হুযায়ফা (রাযি.)কে জিজ্ঞাসা করলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের নামাযে কয় তাকবীর দিতেন? জবাবে আবু মূসা আশআরী (রাযি.) বললেন, জানাযার তাকবীরের সমসংখ্যক চার তাকবীর বলতেন। হুযায়ফা (রাযি.) সমর্থন করে বললেন, তিনি সঠিক বলেছেন। আবু মূসা (রাযি.) আরো বললেন, আমি যখন বসরার আমীর হিসেবে সেখানে অবস্থান করছিলাম, তখন আমি এভাবেই (চার) তাকবীর বলতাম।

আবু আয়েশা বলেন, সাঈদ ইবনুল আস (রাযি.)এর এ প্রশ্নের সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম”। (আবু দাউদ- ১১৫৩)।

 

হাদীসের মান- এ হাদীসটিও প্রমাণযোগ্য। (আসারুস সুনান নীমাভী- ৩০৯)।

প্রকাশ থাকে যে, উল্লিখিত হাদীস দুটিতে প্রথম রাকাআতে তাকবীরে তাহরীমাসহ মোট তাকবীর চারটি। আর দ্বিতীয় রাকাআতে রুকুর তাকবীরসহ মোট চারটি তাকবীর উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ- স্বাভাবিক নামাযের চেয়ে দুই রাকআতে তিন তিন তাকবীর করে মোট ছয় তাকবীর অতিরিক্ত হবে।

 

সাহাবায়ে কেরামের ফতওয়া ও আমল

ইমাম তিরমিযী (রাহ.) বলেছেন, সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাযি.)সহ একাধিক সাহাবার বর্ণনা ছয় তাকবীরের পক্ষে রয়েছে এবং কুফাবাসী ও সুফিয়ান ছাওরী (রাহ.)এর অভিমতও এটা। (তিরমিযী- ১/১২০)।

সারকথা হচ্ছে, ছয় তাকবীরের পক্ষে দুটি ‘মারফু’ হাদীসসহ সাহাবী হযরত ইবনে মাসঊদ, আবু মূসা আশআরী, হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান, উকবা ইবনে আমের, ইবনুয যুবাইর, আবু মাসউদ আল-বদরী, আবু সাঈদ খুদরী, বারা ইবনে আযেব, হযরত উমর, আবু হুরায়রা, ইবনে আব্বাস, ইবনে উমর, আনাস, জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ ও মুগীরা ইবনে শু’বা (রাযি.)এর সমর্থন রয়েছে। (আল-জাওহারুন নাকী- ১/২৪৩-২৪৪)।

 

শাইখ আলবানীর দৃষ্টিতে ছয় তাকবীর

কেউ যদি ছয় তাকবীরের পক্ষে কোন দলীল নেই বলেন, তাদেরকে আহলে হাদীস আলেম ও তাদের অন্যতম অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব শাইখ আলবানী মরহুমের নিচের বক্তব্যটি পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি ছয় ও বার তাকবীর সংশ্লিষ্ট হাদীসসমূহ নিয়ে গবেষণার পর উভয় পক্ষের হাদীসকে যয়ীফ বা দুর্বল বলার কোন কারণ নেই উল্লেখ করে বলেন, অর্থাৎ- “সঠিক কথা হচ্ছে, ছয় ও বার তাকবীর উভয় পদ্ধতিই জায়েয। যে পদ্ধতিই অনুসরণ করা হোক সুন্নাহ আদায় হয়ে যাবে। এখানে কোন পক্ষের গোঁড়ামী ও বিভেদের সুযোগ নেই। যদিও আমার কাছে বার তাকবীর বেশি পছন্দনীয়। কেননা এর সংখ্যা বেশি”। (সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহা আলবানী- ৬/১২৬৪ মাকতাবাতুল মাআরিফ)।

উল্লেখ্য, তিনি বলেছেন- ‘তার কাছে বার তাকবীর বেশি পছন্দনীয়। কেননা এর সংখ্যা বেশি’। আর তা তাকবীর হিসেবে বেশি হোক কিংবা হাদীসের সংখ্যা হিসেবে হোক। কিন্তু তিনি এ কথা বলেননি যে, বার তাকবীরের হাদীস বেশি সহীহ, যা আমাদের কোন কোন আহলে হাদীস বন্ধু বলে থাকেন।

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট বুঝা যায়, ঈদের নামায ছয় তাকবীরের সাথে আদায় করা সহীহ হাদীস সম্মত এবং তা সাহাবায়ে কেরামের আমলও বটে। সুতরাং ঈদের নামায ছয় তাকবীরের সাথে পড়াকে সহীহ হাদীস পরিপন্থী বা মাযহাবের বানানো পন্থা বলার কোন অবকাশ নেই।

 

ছয় ও বার তাকবীরের মতভেদের ধরণ ও করণীয়

ঈদের নামাযে অতিরিক্ত ছয় তাকবীর সহীহ হাদীস সম্মত এবং বার তাকবীরের আমলও প্রমাণিত। উভয় পক্ষে হাদীস রয়েছে এবং উভয় পদ্ধতিই মুবাহ ও জায়েয। যদিও আমাদের মতে, ছয় তাকবীরের নিয়মই উত্তম; বার তাকবীর জায়েয। (মাআরিফুস সুনান- ৪/৪৪০)।

এ নিয়ে ‘ইলমী মজলিসে’ দলীলভিত্তিক মতভেদ হতে পারে এবং একটিকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে, যেমনটি মুজতাহিদগণ ও মাযহাবের ইমামগণ করেছেন। কিন্তু একে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হওয়া নিষিদ্ধ। এ প্রকারের মতভেদকে ‘ইখতিলাফে মুবাহ’ বা ‘শরীয়ত স্বীকৃত মতভেদ’ বলা হয়। যার প্রেরণা দলীলের অনুসরণ। স্বয়ং দলীলই যার উৎস। যা নিন্দিত নয়, বরং নন্দিত।

আহলে হাদীস বন্ধুদের প্রিয় ব্যক্তিত্ব শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহ.) (মৃত্যু ৭২৮ হি.) বলেন, অর্থাৎ- “আমাদের সর্বাধিক সঠিক নীতি হলো, ইবাদতের বিষয়ে একাধিক পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য বর্ণনায় পাওয়া গেলে কোনোটাকেই মাকরূহ বলা যাবে না, বরং সবগুলোই শরীয়তসম্মত। যেমন- নামাযের শুরুতে পড়ার বিভিন্ন দুআ, কুরআন মজিদের বিভিন্ন কিরাআত, ঈদের নামাযে অতিরিক্ত তাকবীরের বিভিন্ন নিয়ম (ছয় ও বার) …। তবে কখনো কোনো একটি নিয়ম মুস্তাহাব হিসেবে বিবেচিত হয় এবং দলীলের কারণে অপরটির উপর প্রাধান্য দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও অপরটিকে মাকরূহ বলা হয় না”। (মাজমূআতুল ফাতাওয়া- ২৪/২৪২-২৪৩, দারুল ওফা)।

তিনি অন্যত্র এ ধরণের মতভেদের হুকুমের বর্ণনা দিয়ে বলেন, অর্থাৎ- “আর এ প্রকার মতভেদ, যাকে আমরা ‘ইখতিলাফে তানাওউ’ বা ‘দলিলের ভিন্নতার কারণে মতভেদ ও মতভিন্নতা’ বলি, এতে কোনোরূপ দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই প্রত্যেক পক্ষ সঠিক। কিন্তু এ প্রকার মতভেদের ক্ষেত্রে যে বাড়াবাড়ি সেটা পরিত্যাজ্য। কেননা কুরআন থেকে বুঝে আসে যে, এ ধরণের মতভেদের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই প্রশংসনীয়, যদি এক পক্ষ অপর পক্ষের উপর বাড়াবাড়ি না করে”। (ইকতিযাউয সিরাতিল মুসতাকিম- ১/১৩৫)।

মুসনাদুল হিন্দ শাহ ওলী উল্লাহ দেহলভী (রাহ.) (মৃত্যু ১১৭৬ হি.) বলেন, অর্থাৎ- “ইমামদের মাঝে অধিকাংশ মতভেদ উত্তম-অনুত্তম নিয়ে। বিশেষত যে সকল বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ ছিল, যেমন ইকামত, তাশাহহুদ, তাকবীরে তাশরীক, ঈদের নামাযের অতিরিক্ত তাকবীর (ছয় বা বার), বিসমিল্লাহ ও আমীন আস্তে বলা এবং ইকামতের শব্দাবলী নিয়ে মতভেদ। এ সবই উত্তম-অনুত্তম নিয়ে”।

তিনি আরো বলেন, “তাঁরা উপর্যুক্ত বিষয়সমূহের প্রত্যেক পদ্ধতি বৈধ ও শরীয়তসম্মত কিনা- এ নিয়ে মতভেদ করেননি, বরং তাঁদের মতভেদ ছিল কোন পদ্ধতি উত্তম তা নিয়ে। কেননা তাঁরা মনে করতেন, এ মতভেদ কুরআন মাজিদের বিভিন্ন কিরাতের পাঠের মতভেদের মতো। তাঁরা বলতেন, এগুলোর অনেক বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের মাঝেও মতভেদ ছিল। অথচ তাঁরা সবাই হিদায়াতপ্রাপ্ত ছিলেন”। (আল-ইনসাফ ফী বয়ানি আসবাবিল ইখতিলাফ- ১০৮-১০৯)।

 

ছয় তাকবীর প্রাধান্য পাওয়ার কারণসমূহ

১. ইমাম সারাখসী (রাহ.) বলেন, হাদীস শরীফে এ পন্থা গুরুত্ব ও তাকীদের সাথে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। রাসূল (সা.) সাহাবাদেরকে নিয়ে এ পদ্ধতিতে নামায পড়েছেন। আবার নামায শেষে মৌখিকভাবে বুঝিয়ে বলেছেন। ইরশাদ করেছেন- ভুলো না যেন। তারপর হাতের আঙ্গুলি দ্বারা দেখিয়ে দিয়েছেন তাকবীরের সংখ্যা কয়টি হবে। (আওযাজুল মাসালিক- ৩/৬৪৪-৪৫ পৃষ্ঠা)।

২. আল্লামা ইউসুফ বানূরী (রাহ.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইনসাফের দৃষ্টিতে দেখবে, সে এ কথা বলতে বাধ্য হবে যে, ছয় তাকবীরের মারফু’ হাদীস বার তাকবীরের মারফু’ হাদীস থেকে অধিক শক্তিশালী। (মাআরিফুস সুনান- ৪/৪৩৮ পৃষ্ঠা)।

৩. ছয় তাকবীরের বর্ণনাকারী সাহাবী হযরত ইবনে মাসঊদ (রাযি.) থেকে শুধু এ পদ্ধতিই বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বার তাকবীরের বর্ণনাকারী হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে ছয় তাকবীরের পদ্ধতিও বর্ণিত হয়েছে। এছাড়াও আরো কারণ রয়েছে।

ঈদের নামায নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা

১. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে আযান-ইক্বামত নেই। তবে জামাআত অপরিহার্য। (বুখারী- ৯৮৯)।

২. দুই ঈদের নামায দুই রাকাআত করে। এর আগে পরে কোন সুন্নাত বা নফল নামায নেই। (বুখারী- ৯৮৯)।

৩. উভয় ঈদের নামায ঈদগাহ বা খোলা স্থানে আদায় করা সুন্নাত। বিনা ওযরে মসজিদে আদায় করা অনুত্তম। (বুখারী- ৯৫৬)।

৪. ঈদের নামাযে কিরাআত উচ্চস্বরে পড়তে হয়। রাসূল  ঈদের নামাযে কখনো সূরা ‘আ’লা’ ও সূরা ‘গাশিয়াহ’, আর কখনো সূরা ‘কাফ’ ও সূরা ‘ক্বামার’ পড়তেন। তাই দুই ঈদের নামাযে এ সব সূরা পড়া সুন্নাত। (মুসলিম- ৮৭৮, ৮৯১)।

৫. ঈদের নামায আগে হবে, পরে আরবী ভাষায় দাঁড়িয়ে খুতবা দিবে। (বুখারী- ৯৬২)।

৬. উভয় ঈদে দু’টি খুতবা দেওয়া সুন্নাত এবং দুই খুতবার মাঝে বসাও সুন্নাত। (ইবনে মাজা- ১২৮৯)।

৭. কাজেই যে আহলে হাদীস দুই ঈদে কেবলমাত্র একটি খুতবার কথা বলে, তা হাদীস ও উম্মতের সম্মিলিত কর্মধারার পরিপন্থী। (সালাতুর রাসূল (সা.)- ২০৪, আসাদুল্লাহ আল-গালিব)।

৮. ঈদ ও জুমা একই দিনে হোক বা না হোক ঈদের নামায যেভাবে আদায় করা কর্তব্য, তেমনি জুমার নামাযও ইমাম-মুক্তাদি সবার জন্য আদায় করা অপরিহার্য। এটাই কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত এবং হানাফী, মালেকী ও শাফেয়ীসহ অধিকাংশ ইমামের বক্তব্য। সুতরাং যারা বলে থাকেন, ‘ঈদ ও জুমা একই দিনে হলে যারা মুক্তাদি হয়ে ঈদের নামায পড়বে, তাদের জন্য জুমার নামায অপরিহার্য নয়’; এটা কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অকাট্য দলীলের পরিপন্থী। কেননা, ঈদ ও জুমা দু’টি ভিন্ন ভিন্ন ওয়াজিব। একটির কারণে অন্যটি উহ্য হতে পারে না। (বিস্তারিত জানতে দেখুন- বযলুল মাজহুদ- ৫/৭৫-৭৭, বৈরুত, ইলাউস সুনান- ৮/৯২-৯৮, করাচী)।

আল্লাহ পাক সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং বাড়াবাড়ির পথ পরিহার করে মতভেদের বিষয়সমূহ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখার তাওফীক দান করুন। আমীন॥