সোশ্যাল মিডিয়ার চোখে…

মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে তথাকথিত সহিংসতা বিরোধী এক কনসার্টে ঢোল-তবলা, গিটার, হারমোনিয়াম ইত্যাদি সহ বাদ্য-বাজনা সহকারে পবিত্র হজ্জের তালবিয়া পাঠ করা হয়েছে। বাদ্য-বাজনা সহকারে কনসার্টে হজ্জের তালবিয়া পাঠ; প্রকাশ্যে ইসলাম অবমাননার শামিল।আমি এই ঘৃণ্য কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ৯০% মুসলমানের এই বাংলাদেশে এমন কর্মকা-ের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই।
[ফেসবুক পোস্ট, ১৫ অক্টোবর, ২০২১ইং]

মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ

ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য ভারতের উদাহরণ টেনে আনা যাবে, কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার জন্য ভারতের উদাহরণ দেওয়া যাবে না! এদেশে তালেবানের প্রতি সহানুভূতিশীলদের ঘায়েল করা যাবে, কিন্তু ভারতে মুসলিম নিধন এবং বাবরি মসজিদ বিনাশের এদেশিয় সমর্থকদের কিছু বলা যাবে না! আওয়াজ-করা মুসলমানরা জঙ্গিবাদী, কিন্তু মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদীরা সন্ত্রাসবাদী না! ইসলামিস্ট জঙ্গিবাদ নিয়ে কথা বলা যাবে, কিন্তু হিন্দু মিলিটেন্সি ও সুপেরিয়রিটি নিয়ে মুখ খোলা যাবে না।

সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মানেই মুসলমানদের একটি গ্রুপ! তীব্র মুসলিমবিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদীরা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শুভশক্তি। দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গিবাদের উত্থান-কল্পনা নিয়ে পেরেশান থাকতে হবে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদের জলজ্যান্ত বাস্তবতাকে উপেক্ষা করতে হবে। এগুলো আমার কথা না, কতিপয় মাননীয়গণের টিভি টকশো/আলাপভঙ্গি দেখে এমনই মনে হয়েছে।
[ফেসবুক পোস্ট, ২৪ অক্টোবর, ২০২১ইং]

ইফতিখার জামিল

জনতার আবেগ-উত্তেজনা কোনভাবেই গুরত্বহীন নয়। অনেকে রাগকে খারাপ চোখে দেখেন, বাস্তবতা হচ্ছে রাগ না থাকলে মানুষ অনেক স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে ব্যর্থ হবে।

আপনার গালে যদি আমি চড় মারি, রাগ না থাকলে আপনি চড় খেয়েও বলবেন, ভাই ভালো লাগছে, আরও চড় মারেন। আপনার মনে নীচতা জায়গা করে নিবে। যারা সংখ্যাগড়িষ্ঠ জনতাকে ভীরুতা-নীচতা শিক্ষা দিতে চান, তারাই জনতাকে বারবার দোষারোপ করছেন।

সবসময় একটা মূলনীতি মাথায় রাখবেন। জনতা কখনো ভুল করে না। ভুল করে নেতারা, ভুল করে রাষ্ট্র-সমাজ। আপনি গত দশবছরে ধর্মবিদ্বেষের কোন বিচার করতে পারেননি, প্রতিবেশী দেশে মুসলিম নির্যাতনে ভূমিকা রাখতে পারেননি, এবারের অপরাধে পূর্ণ শাস্তি হবে, তার পূর্ণ আশ্বাস দিতে পারেননি। তারপরেও মানুষ রাগবে না? এই মানুষগুলোর অনেকেই কিন্তু আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত।

আলেম সমাজ ও ধর্মীয় নেতাদেরকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। জনতার আবেগ ও রাগকে ইতিবাচক শক্তিতে পরিণত করতে হবে। অস্থায়ী রাগ ও উত্তেজনায় অনেকের প্রাণ যাচ্ছে, কেউ কেউ হিন্দুপাড়ায় মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা যদি তাদের সতর্ক না করতে পারি, প্রশাসনকে সতর্ক না করতে পারি, তবে আগামীকাল মানুষের মধ্যে রাগটা আর থাকবে না, তারা চোখ বন্ধ করে অনেক অপমান মেনে নিবে।

জনতাকে বলতে হবে আপনারা তাদের পাশে আছেন। তাদের কাছে প্রমাণ দিতে হবে ধর্মবিদ্বেষের প্রতিবিধানে আপনারা কাজ করে যাচ্ছেন। অগ্রগতির হিসাব দিতে হবে। যদি সেই হিসাব না দিতে পারেন, তবে জনতার মধ্যে উত্তেজনা বাড়বে, একসময় নেতিয়ে পড়বে। তারা অনুভূতিহীন হয়ে যাবে। তখন আবার বলবেন না, জনতা এত অরাজনৈতিক কেন? এগুলো আমাদের পাপের ফসল।
[ফেসবুক পোস্ট, ১৫ অক্টোবর, ২০২১ইং]

ডা. তানজিনা রহমান

পড়াশোনার পাশাপাশি যারা নাস্তিকতা, ইসলাম বিদ্বেষ; এসব শিক্ষা দেয় সেই ধরনের কোন ইউনিভার্সিটিতে প্র্যাক্টিসিং বাবা মায়েরা ছেলে-মেয়ে ভর্তি করার আগে এক হাজার বার ভাবুন। রিযিক আল্লাহর তরফ থেকে আসে। এরকম জায়গায় ছেলে মেয়ে পাঠিয়ে নিজের আখিরাতের জন্য বিপদ ডেকে আনবেন না। গত বছরও এই একই উপদেশ ছিল আমার তরফ থেকে।

আজ যেটা দুনিয়াবী স্ট্যাটাস বৃদ্ধির কারণ মনে করছেন, মরার পর দেখবেন সেটাই কবরের আযাব বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে। ভাল পড়াশোনা হয় এরকম জায়গার অভাব নাই। পড়াশোনার দোহাই দেবেন না। মনের সংকীর্ণতাকে দূর করুন।
[ফেসবুক পোস্ট, ২৫ অক্টোবর, ২০২১ইং]

আরও পড়তে পারেন-

আহলে কুরআন: কুরআন বলে ‘তুমি মিথ্যাবাদি’
মুমিন জীবনে নামাযের গুরুত্ব
আল্লাহর অসীম কুদরত ও মহিমা আত্মোপলব্ধির উৎকৃষ্ট উপায়
কুরআন অবমাননা: আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বনাম হিন্দুত্ববাদ
যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আলেম সমাজের প্রস্তুতি

অধ্যাপক আসিফ নজরুল

বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের অবমাননা বা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হলে সে বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।

অথচ এদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর কোন হামলা হলে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভারত সরকারকে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের দাবি জানায়। আমার প্রশ্ন তাহলে কি ভারতে মুসলমান নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে আওয়ামী লীগের নেতাদেরও ভারতে হস্তক্ষেপ করার দাবি তোলা উচিত? প্রশ্নটা সমমর্যাদার ও সাবভৌমত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে করা।
[ফেসবুক পোস্ট, ১৬ অক্টোবর, ২০২১ইং]

তারেকুল ইসলাম

টিএসসিতে সহিংসতা বিরোধী কনসার্টে মেঘদলের গাওয়া একটা গানে নিচের লাইনটা শুনলাম- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মানুষ কোরবানি মাশাআল্লাহ”।

গানটাতে মানুষ কোরবানি তথা ‘মানুষ হত্যা মাশাআল্লাহ’ বলে প্রকারান্তরে উসকানি দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অন্যান্য ধর্মকেও টিটকারি করা হয়েছে। এদেশের সেকুলাঙ্গাররা প্রথমত ইসলামবিদ্বেষী, দ্বিতীয়ত ধর্মবিরোধী
[ফেসবুক পোস্ট, ২৪ অক্টোবর, ২০২১ইং]

হাবীব আনওয়ার

হযরত আবু বকর (রাযি.)এর উস্তাদ হযরত মুহাম্মদ (সা.) হযরত আবু বকর (রাযি.)এর ঊরুতে মাথা মোবারক রেখে ঘুমিয়ে ছিলেন। ইতোমধ্যে একটি বিষাক্ত পোকা হযরত (রাযি.)এর পায়ে আক্রমণ করলো। যন্ত্রণায় তিনি দাঁতে দাঁত কামড়িয়ে নিরব রইলেন। কারণ, একটু নড়াচড়ার কারণে যদি উস্তাদের ঘুম ভেঙে যায়!

হানাফি মাজহাবের প্রবর্তক নোমান বিন সাবেত ইমাম আবু হানিফা রহ. এর উস্তাদ ছিল হযরত হাম্মাদ (রহ.) ইমাম আবু হানিফা রহ. কখনও তার উস্তাদ হাম্মাদ রহ. এর বাড়ির দিকে পা মেলে শয়ন করতেন না; বেয়াদবি হওয়ার ভয়ে।

ইমাম ফখরুদ্দিন (রাযি.) ছিলেন ইমামদের নেতা। তৎকালীন বাদশাহ তাকে খুব মান্য করতেন। একবার তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে দিয়েছেন অনেক সম্মান। তার একমাত্র কারণ উস্তাদের খেদমত। ৩০ বছর পর্যন্ত আমার উস্তাদ কাজী ইমাম আবু দাউদ দাদুসী (রাযি.)এর খেদমত করেছি। হুজুরের ঘরোয়া কাজ করেছি। কিন্তু তাঁর থেকে আমি কিছুই বিনিময় গ্রহণ করিনি।

মুসলিম বিশ্বের তারকাতূল্য বাদশা হারুনুর রশীদ ও তৎকালীন ভাষাবিজ্ঞানী ইমাম আসমাইর (রহ.)এর কথোপকথন তো সবার কাছে স্পষ্ট।

শিক্ষক সে শিক্ষক। তার কোন তুলনা নেই। তাই তো হযরত আলী (রাযি.) বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে একটি হরফ শিক্ষা দিল, আমি তার গোলাম। সে ইচ্ছে করলে আমাকে বিক্রি করে দিতে পারে। আমাকে গোলাম হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। ইচ্ছে করলে আযাদ করতে পারবে।
[ফেসবুক পোস্ট, ১১ অক্টোবর, ২০২১ইং]

#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ

মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/

ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা ও মাসআলা-মাসায়েলবিষয়ক লেখা পেতে ‘মাসিক মুঈনুল ইসলাম-এর ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।