।। উসামা রশীদ ।।
চতুর্থ শতাব্দীর শেষ দিকে হিস্প্যানিয়া অঞ্চলে (বর্তমান স্পেন ও পর্তুগাল) রোমান শাসনের পতন ঘটলে তাদের জায়গা দখল করে নেয় পিরেনিজ পার হয়ে আইবেরীয় উপদ্বীপে পা রাখা বিভিন্ন ভিজিগথিক গোত্র, টোলেডোতে স্থাপন করা হয় নতুন রাজধানী। তারা খুব দ্রুতই রোমান সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, ল্যাটিন ভাষায় কথা বলা এই ভিজিগথরা আরিয়ানীয় ধর্ম পালন করতো। সপ্তম শতাব্দীর শেষ দিকে ভিজিগথিক হিস্প্যানিয়ায় তখন অরাজকতার স্টিমরোলার চলছে, রাজনৈতিক কামড়াকামড়ির পাশাপাশি দুর্নীতি আর চোর-ডাকাতের উপদ্রব তো রয়েছেই।
স্পেনের দিকে চোখ পড়েছে তখন অন্য এক পক্ষের। ইসলামের সুবাতাস লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে চলে এসেছে আফ্রিকায়, ভূমধ্যসাগরের তীর ধরে পুরো উত্তর আফ্রিকা উপকূল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মুসলিমরা।
৬৯৮ সালে মুসা বিন নুসায়েরকে ইফরিকিয়ার (লিবিয়া ও আলজেরিয়ার অংশবিশেষ) গভর্নর বানানো হয়। তার পরবর্তী কাজ ছিল সমগ্র উত্তর আফ্রিকার উপকূলে মুসলিমদের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। মুসা বিন-নুসায়ের ঠিক তা-ই করলেন, এমনকি তাঞ্জিয়ার্সেও ঢুকে পড়লেন। বাইজানটাইন নৌবহরের মুখোমুখি হওয়ার জন্য নিজেও গড়ে তুললেন ছোটখাট কিন্তু শক্তিশালী নৌবহর।
খ্রিস্টান এবং মুসলিম উভয় সূত্রমতেই মুসা বিন নুসায়ের শুধুমাত্র আফ্রিকা জয় করেই সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু স্পেন থেকে আসা এক অভিজাত খ্রিস্টান তাকে উদ্বুদ্ধ করে হিস্প্যানিয়া জয় করার জন্য। এই ব্যক্তি ছিলেন সেউটার কাউন্ট হুলিয়ান। ভিজিগথ রাজা প্রথম রডারিকের একজন সামন্ত রাজা। হুলিয়ান মুসা বিন নুসায়েরকে হিস্প্যানিয়ায় থাকা সম্পদে প্রচার্যময় পাহাড়ের বিবরণ দিলেন। সাথে বললেন রডারিকের কারণে তাদের রাজ্যে চলা অরাজকতার গল্প। ইতিহাসের বর্ণনা মতে, হুলিয়ান চেয়েছিলেন ভিজিগথদের পতন দেখতে, কারণ রডারিক তার মেয়েকে নির্যাতন করেছিলেন।
মুসা বিন নুসায়ের তার সেরা সেনাপতিকে পাঠালেন হিস্প্যানিয়া জয় করতে, তাঞ্জিয়ার্সের তৎকালীন গভর্নর তারিক বিন জিয়াদকে। তারিক বিন জিয়াদ সদ্য ইসলাম গ্রহণ করা এরকম ৭,০০০ সৈন্য নিয়ে পাড়ি জমালেন হিস্প্যানিয়ার উদ্দেশ্যে। তারিক নিজেই ছিলেন মুসা বিন নুসায়েরের একজন দাস, পরবর্তীতে মুসা তাকে মুক্ত করে দিয়ে সামরিক বাহিনীর সেনাপতি বানান।
২৬ এপ্রিল, ৭১১ খ্রিস্টাব্দ। তারিক বিন জিয়াদ তাঁর বাহিনী নিয়ে জিব্রাল্টারে পা রাখলেন । সংখ্যায় স্বল্প এই মুসলিম বাহিনীর মুখোমুখি হতে রডারিক জড়ো করেছিলেন প্রায় এক লক্ষ সৈন্য। জিব্রাল্টারের নামকরণ করা হয়েছে তারিক এর নামানুসারেই। ‘জাবাল-আত-তারিক’ অর্থাৎ তারিকের পাহাড় থেকেই উৎপত্তি জিব্রাল্টারের নাম। আর ঠিক এখানেই তারিক বিন জিয়াদ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে তার ইতিহাস বিখ্যাত ভাষণ দিলেন।
“হে আমার সৈন্যরা, কোথায় পালাবে তোমরা? তোমাদের পিছনে সাগর, সামনে শত্রু। তোমাদের সামনে রয়েছে অগণিত শত্রু, আর জীবন বাঁচানোর জন্য তোমাদের কাছে রয়েছে শুধু তলোয়ার। এবং মনে রেখো এই অসাধারণ যুদ্ধে আমিই সবার সামনে থাকবো যা তোমরা করতে যাচ্ছ।”
তারিকের ভাষণ শোনে উজ্জীবিত সৈন্যরা ঝাঁপিয়ে পড়লো রডারিকের বিশাল বাহিনীর উপর। রডারিকের বাহিনী তখন দ্বিধাবিভক্ত, নিজেদের সুরক্ষিত শহর ছেড়ে এই প্রান্তরে যুদ্ধ করতে এসে যারপরনাই বিরক্ত সামন্ত রাজারা। তাছাড়া এই বিশাল বাহিনী রডারিকের অনুগতও নয়। এই সুযোগটাই কাজে লাগালো মুসলিমরা। তারিকের ৭ হাজার সৈন্যের সাথে যোগ হওয়া মুসা বিন নুসায়েরের পাঠানো আরো ৫ হাজার সৈন্যের অসাধারণ রণকৌশলে মুহূর্তের মধ্যেই ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলো ভিজিগথ বাহিনী। গুয়াদেলেতের যুদ্ধে নিহত হলো রডারিক, হিস্প্যানিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হলো মুসলিম শাসন।
পরের বছরেই উত্তর আফ্রিকার আমাজিঘদের (বারবার) ঢল নেমে এল আইবেরিয়ায়। জিব্রাল্টার থেকে দক্ষিণ ফ্রান্স পর্যন্ত মুসলিমদের দখলে চলে আসলো। মুসলিম শাসন সত্ত্বেও খ্রিস্টান আর ইহুদিরা স্বাধীনভাবেই নিজেদের ধর্ম পালন করতে পারতো, তাদের উপর জোর করে ধর্ম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি। আর এ কারণেই কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপক পরিমাণ খ্রিস্টান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। দশম শতাব্দীর মধ্যেই আল-আন্দালুস পরিণত হলো ইউরোপ, আফ্রিকা আর মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্র হিসেবে। প-িতরা চর্চা করতে থাকলো বিজ্ঞান-দর্শনশাস্ত্রের, থেমে যাওয়া প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার জ্ঞান-বিজ্ঞান আবারো আলোর মুখ দেখলো তাদের হাত ধরে। অন্যদিকে খ্রিস্টধর্ম প্রধান ইউরোপ তখন নিজেদের মধ্যেই ক্ষমতার রেষারেষিতে ব্যস্ত, রেনেসাঁ শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী ‘ডার্ক এজ’ চলছে তখন ইউরোপে। তাছাড়া ইউরোপ, ভূমধ্যসাগর আর আফ্রিকান আটলান্টিক দিয়ে ঘিরে থাকা আল-আন্দালুস হয়ে দাঁড়ালো ব্যবসা-বাণিজ্যের পীঠস্থান।
আরও পড়তে পারেন-
- পাশ্চাত্য শিক্ষা বনাম কওমী শিক্ষা
- করোনা মহামারি ও আমাদের করণীয়
- জান্নাত পেতে চাইলে শিরকমুক্ত নেক আমল করতে হবে
- দুর্দিন ও দুঃসময়ে নবী জীবন থেকে সান্ত্বনা
- ইসলামে সংশয়প্রবণতা এবং সংক্রামক রোগ
যদিও আল-আন্দালুস তখন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর লোকজনে বিভক্ত। আদি অধিবাসী ভিজিগথ আর আইবেরো-রোমানরা তো রয়েছেই, সাথে রয়েছে স্পেন জয় করতে আসা আরব আর আমাজিঘ গোত্রের লোকেরা। শুধু মুসলিমদের মধ্যেই রয়েছে আমাজিঘ, আরব, গথিক, স্লাভ, বাইজান্টাইন আর স্পেনের সদ্য মুসলিম হওয়া আইবেরো-রোমানরা। এদিকে যুদ্ধের সময় পাওয়া সম্পদ আরব অভিজাত আর সংখ্যাগরিষ্ঠ আমাজিঘদের মধ্যে ঠিকভাবে ভাগ-বাটোয়ারা না হওয়ায় আমাজিঘরা ৭৪০ সালে বিদ্রোহ করে বসে। তাদেরকে থামানোর জন্য উমাইয়া খলিফা সিরিয়া, জর্ডান, ফিলিস্তিন থেকে আরব সৈন্য পাঠাতে শুরু করে, কিন্তু আল-আন্দালুস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে বারবার আর আরবদের মধ্যের এই রেষারেষির সুযোগ নেয় উত্তরের আস্তুরিয়া অঞ্চলের খ্রিস্টানরা, গঠন করে ‘কিংডম অফ আস্তুরিয়া’।
৭৫০ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খিলাফতের পতনের পর মুসলিম বিশ্বে শুরু হয় আব্বাসীয় যুগ। গণহত্যার সময় উমাইয়া পরিবারের বেঁচে যাওয়া রাজপুত্র আবদুর রহমান পালিয়ে আন্দালুসে চলে আসেন। সেখানেই শুরু হয় তার নতুন রাজ্য-শাসন, আল-আন্দালুসকে ঘোষণা করেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। দামেস্ক আর বাগদাদের সাথে শুরু হয় অঘোষিত ইসলামিক সাংস্কৃতিক যুদ্ধ। ৭৫৬ সালে নিজেকে আল-আন্দালুসের আমির হিসেবে ঘোষণা করেন আবদুর রহমান, ইউরোপের বুকে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথম স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র।
পূর্বের আরব রাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলোকে সবদিক থেকেই ছাড়িয়ে গিয়েছিলো আল-আন্দালুস। রোমানদের কাছ থেকে ধার নেওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং আর শহরের পরিকল্পনার সাথে ইসলামি স্থাপত্যকলা মিশিয়ে নতুন করে গড়া হলো আন্দালুসের শহরগুলো। ভ্যালেন্সিয়া আর সেভিল ছিল বর্তমানের দুবাই কিংবা দোহার মতো বিলাসবহুল শহর। জাতিভা শহরে তখন চালু করা হয়েছে কাগজের কারখানা, দুষ্প্রাপ্য আর দামী পার্চমেন্টকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে শুরু হলো বই তৈরি করার বিপ্লব। কালের গর্ভে নষ্ট হয়ে যাওয়া মিশরীয় আর গ্রিক ডকুমেন্টগুলো বইয়ের আকার পেতে শুরু করলো। শহরে শহরে তৈরি করা হলো হাম্মামখানা, নারীরা, বিশেষ করে অভিজাতরা মধ্যযুগীয় খ্রিস্টানদের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করতো।
ইসলামের জিম্মি ব্যবস্থার কারণে অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও সমানভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করার সুযোগ পেত। নিজস্ব সম্প্রদায়ের নিয়ম-কানুন, উৎসবসহ সবকিছুই নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো। যদিও তাদেরকে এজন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে ‘জিযিয়া (কর)’ দিতে হতো। খ্রিস্টানরা একদিকে যেমন নিজেদের ধর্ম পালন করতো, অন্যদিকে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াতও দেওয়া হতো। এর ফলে আন্দালুসে থাকা অনেক খ্রিস্টান আর ইহুদি ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন।
ধর্মান্তরিত না হওয়া খ্রিস্টান আর ইহুদিরাও কিছুটা ইসলামি সংস্কৃতিতে প্রভাবান্বিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ের বেশ কিছু খ্রিস্টান সূত্রমতে, আন্দালুসের খ্রিস্টান যুবকদের অনেকেই আরব কবিদের সাহিত্যকর্ম আয়ত্ত করেছিল, এমনকি কুরআনও মুখস্থ করেছিল, যারা কিনা ল্যাটিনে সামান্য একটি চিঠিও লিখতে পারতো না। ইহুদি আন্দালুসিয়া আবার একইসাথে হিব্রু আর আরবি ব্যবহার করতো এবং দুই ভাষাতেই অনেক সাহিত্যকর্ম রচনা করেছে। আরবি কবিতা রচনাশৈলীর সাথে বাইবেলের হিব্রু ভাষা মিশিয়ে এক নতুন ধরনের সাহিত্যের প্রচলন শুরু হয় এ সময়ে, যা বর্তমানে ইসরায়েলের বিদ্যালয়গুলোতে পড়ানো হয়।
ইহুদি দর্শন আর অ্যারিস্টটলের দর্শনের সাথে পরিচিত হয় আন্দালুসীয়রা। বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ইবনে রুশদ আর ইহুদি দার্শনিক মাইমোনাইডসের জন্মই হয়েছে আন্দালুসে। ক্লাসিক আরবি আর হিব্রু সাহিত্যের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় আইবেরীয় লোকগান আর কবিতাগুলো। মোজেজ ইবনে এজরা আর ইবনে শুহাইদের হাত ধরে আরবি আর হিব্রু সাহিত্য এগিয়ে যায় বহুদূর। সেভিল, কর্ডোবা কিংবা গ্রানাডার বাড়িঘরের দেওয়ালে এখনো চোখে পড়বে আরবি ক্যালিগ্রাফি আর জ্যামিতিক নকশাগুলো। জ্ঞান-বিজ্ঞানেও সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল আন্দালুসীয়রা, গ্যালেন-অ্যারিস্টটলসহ প্রাচীন বিজ্ঞানীদের কর্মগুলো সংরক্ষণ করে রাখা হয় যা পরবর্তীতে ইউরোপে রেনেসাঁ ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভূমধ্যসাগরের একদিকে চলছে পবিত্র ভূমি দখলের লড়াই, অন্যদিকে চলছে আল-আন্দালুস থেকে মুসলিম শাসন উচ্ছেদ করার চেষ্টা। ১০৭৬ সালের দিকে স্পেনের টোলেডো শহর দখল করে নেয় ষষ্ঠ আলফোন্সো। একসময়ের ভিজিগথ রাজধানী ছিল এই শহর। পরবর্তী ১৫০ বছর আইবেরীয় উপদ্বীপের মানচিত্র একইরকম থাকে। অবশেষে ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তৃতীয় ফার্নান্দো কর্ডোবা আর সেভিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নেন, অন্যদিকে আরাগনের প্রথম জায়ুম দখল করে নেন ভ্যালেন্সিয়া শহর। ৬০০ বছর ধরে রাজত্ব করা বিশাল খিলাফতের হাতে অবশিষ্ট থাকে শুধু গ্রানাডা, তা-ও সেখানেও নিয়মিতভাবে হানা দিতে থাকে ক্রুসেডার বাহিনী।
আন্দালুসে মুসলিমদের রাজনৈতিক পতনের সাথে সাথে এর শিক্ষা-সংস্কৃতির পতনও শুরু হয়ে যায়। মুসলিম অভিজাতদের বেশিরভাগই চলে যায় উত্তর আফ্রিকা কিংবা আরব অঞ্চলে, যদিও সাধারণ জনগণদের বেশিরভাগ গ্রানাডাতেই থেকে যায়। গ্রানাডাতেও ইহুদিরা একইভাবে সুরক্ষা পেতে থাকে, যেরকমটা তারা কয়েকশো বছর ধরে পেয়ে আসছে।
খ্রিস্টান শাসকরা আন্দালুসীয় চিত্রকলা, স্থাপত্যকলা আর বিজ্ঞানের বেশ বড় মাপের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। টোলেডো খ্রিস্টানরা দখল করে নিলেও এরপরেও কয়েকশো বছর আরবী শেখার অন্যতম পীঠস্থান ছিল এই শহর। দশম আলফোন্সো সেভিলে আরবী শেখার জন্য আলাদা স্কুল তৈরি করে দেন, আন্দালুসীয়দের বিজ্ঞান আর দর্শনশাস্ত্রেও আগ্রহী ছিলেন তিনি। তার সময়ে মুসলিম আর ইহুদিরা নিজেদের ধর্ম পালন করার সমান সুযোগ-সুবিধা পেত। ভ্যালেন্সিয়াতেও প্রায় পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত আরবী সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা ছিল।
যদিও খ্রিস্টান শাসকদের এই উদারমনা অবস্থা বেশিদিন চলেনি, যখন প্রথম ইসাবেলা ‘দ্য ক্যাথলিক’ এবং আরাগনের দ্বিতীয় ফার্দিন্যান্দ যৌথভাবে স্পেন শাসন করা শুরু করেন। যদিও ফার্দিন্যান্দ ভ্যালেন্সিয়া আর আরাগনে থাকা মুসলিমদের প্রতি বেশ উদার ছিলেন, কিন্তু ইসাবেলা ছিলেন সম্পূর্ণ বিপরীত।
অবশেষে ১৪৯২ সালে বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে ছোট্ট গ্রানাডার উপর আক্রমণ চালান তারা দু’জন, দখল করে নেয় আল-হামারা থেকে শুরু করে সাধারণ বাড়িঘর। ঐ বছরেই ইহুদিদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, স্পেনে থাকতে হলে খ্রিস্টান হতে হবে অথবা চলে যেতে হবে। আর এভাবেই স্পেনের মাটি থেকে হারিয়ে যায় একসময়ে পৃথিবীর ওপর রাজত্ব করা আল-আন্দালুস।
তথ্যসূত্র- A History of Islamic Spain – Pierre Cachia and W. Montgomery Watt
#মাসিক মুঈনুল ইসলাম/এমএ
মাসিক মুঈনুল ইসলাম পড়তে ক্লিক করুন-
https://mueenulislam.com/